চার দিন ধরে বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত সাউন্ড বক্স বাজিয়ে ক্রিকেট প্রতিযোগিতার আয়োজন করার অভিযোগ উঠল। প্রতীকী ছবি।
সদ্য শেষ হয়েছে মাধ্যমিক। তবে চলছে অন্য বোর্ডের পরীক্ষা। তার মধ্যেই চার দিন ধরে বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত সাউন্ড বক্স বাজিয়ে ক্রিকেট প্রতিযোগিতার আয়োজন করার অভিযোগ উঠল। রাজপুর-সোনারপুর পুরসভার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের হরিনাভি এলাকার ঘটনা।
স্থানীয়দের অভিযোগ, পরীক্ষা চলাকালীন কোনও নিষেধাজ্ঞার তোয়াক্কা না করেই রাজনৈতিক জোরে ওই প্রতিযোগিতা করা হয়েছে। অভিযোগ জানানো সত্ত্বেও পুলিশ-প্রশাসনের তরফে তেমন তৎপরতা দেখা যায়নি। আরও জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার প্রতিযোগিতার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পুরসভার চেয়ারম্যান পল্লব দাস ও চেয়ারম্যান পারিষদ নজরুল আলি মণ্ডল। অনুষ্ঠানে একাধিক পুলিশকর্তাও ছিলেন। অভিযোগ, উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আতসবাজি ফাটানো হয়। পাশাপাশি, ব্যান্ডপার্টি ও ডিজে বাজানো হয়।
ওই প্রতিযোগিতার প্রীতি ম্যাচে অংশগ্রহণ করেছিল পুরসভা একাদশ, বিধায়ক একাদশ, সোনারপুর থানা একাদশ ও বারুইপুর জেলার সাংবাদিকদের একটি সংগঠনের সদস্যেরা। স্থানীয়দের অভিযোগ, পুরসভা, প্রশাসন, পুলিশ ও সাংবাদিকদের নিয়ে ওই প্রতিযোগিতা করা হয়েছে। প্রতিদিন বিকেল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত খেলা চলেছে। পাশাপাশি, একাধিক সাউন্ড বক্সও বাজানো হয়েছে।
এই অভিযোগ সামনে আসার পরেই শুরু হয়েছে দায় ঠেলাঠেলি। বারুইপুরের মহকুমা শাসক সুমন পোদ্দার বলেন, ‘‘বিষয়টি আমার নজরে এসেছিল। আমি পুলিশকে পদক্ষেপ করতে বলেছিলাম। শুনেছি, পুলিশ মাইক বাজানো বন্ধ করে দিয়েছে।’’ সোনারপুর থানা সূত্রের দাবি, উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মাইক লাগানো হয়েছিল। তবে পুলিশ জানতে পেরে দ্রুত মাইকের তার ছিঁড়ে দেয়। নিচু স্বরে সাউন্ড বক্স চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল বলেও দাবি তাদের। আবার পুরপ্রধান পল্লব দাস বলেন, ‘‘বৃহস্পতিবার ওই প্রতিযোগিতার উদ্বোধনের দিনে মিনিট পাঁচেকের জন্য গিয়েছিলাম। কিন্তু সে সময়ে মাইক বাজানো হচ্ছিল না। তবে অভিযোগ আসার পরেই মাইক বাজানো বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’ চেয়ারম্যান পারিষদ নজরুল বলেন, ‘‘প্রতিযোগিতার বিষয়ে কিছু জানতাম না। পুরসভার অফিসে এসেছিলাম। চেয়ারম্যানের সঙ্গে ওখানে গিয়েছিলাম। তিন মিনিটের মধ্যেই ফিরে এসেছি।’’
উদ্যোক্তাদের তরফে দাবি করা হয়েছে, প্রতিযোগিতার দিনক্ষণ অনেক আগে থেকেই নির্ধারিত ছিল। কিন্তু বিধানসভা উপনির্বাচন ও মাধ্যমিকের নিষেধাজ্ঞা একসঙ্গে পড়ে যাওয়ায় সমস্যা তৈরি হয়েছিল। সে কারণে মাধ্যমিক পরীক্ষার শেষের দিকে প্রতিযোগিতা করা হয়েছে। তবে প্রশাসনের নির্দেশ আসার পরে মাইক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল বলেও দাবি করেছেন তাঁরা।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এই প্রতিযোগিতায় পুরস্কারের আর্থিক মূল্যও ছিল চোখে পড়ার মতো। ফাইনালে জয়ী দল পেয়েছে চার লক্ষ টাকা। বিজেতাদের জন্য ছিল তিন লক্ষ টাকার পুরস্কার। তা ছাড়া স্কুটার-সহ নানা পুরস্কারের জন্য আরও পাঁচ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে বলে দাবি স্থানীয়দের। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের জাঁকজমক-সহ গোটা প্রতিযোগিতার আনুষঙ্গিক খরচও কয়েক লক্ষ টাকা পেরিয়ে যাবে বলে অনুমান। ওই টাকার উৎসের বিষয়েওপুলিশের খোঁজ নেওয়া উচিত বলে দাবি তুলেছেন স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy