পিটিএস-এ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র
পুলিশকর্মীদের নজিরবিহীন বিক্ষোভের পরে অবস্থা সামাল দিতে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মধ্যেই কলকাতা পুলিশ ট্রেনিং স্কুলে উপস্থিত হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার রাতের ওই বিক্ষোভের খবর কানে পৌঁছনোর পরে বুধবার সকাল ১০টা নাগাদ মুখ্যমন্ত্রী পৌঁছে যান সেখানে। একটু পরে সেখানে যান পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মাও।
পুলিশ সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রী এ দিন সেখানে গিয়ে কথা বলেন পুলিশকর্মীদের সঙ্গে। তাঁকে সামনে পেয়ে ডিসি (কমব্যাট)-কে অপসারণের দাবি তোলেন পুলিশকর্মীরা। সেই সঙ্গে ডিসি (কমব্যাট) ও রিজার্ভ অফিসার-সহ তিন জন আধিকারিকের শাস্তির দাবি জানান নিচুতলার ওই পুলিশকর্মীরা। মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের অভিযোগ এবং সমস্যার কথা লিখিত ভাবে জানাতে বলেন। কালীঘাট থানার ওসি শান্তনু সিংহ বিশ্বাসকে তিনি নির্দেশ দেন, যাঁর যা সমস্যা বা অভিযোগ আছে, তা লিখে নিয়ে পুলিশ কমিশনারকে জানাতে। সেই অভিযোগের প্রতিলিপি যেন তাঁর কাছেও পাঠানো হয়। মুখ্যমন্ত্রী পুলিশকর্মীদের কাছে তিন দিনের সময় চেয়ে নেন। তিনি বলেন, ‘‘আমি সব শুনেছি। আমার উপরে ছেড়ে দিন। তিন দিন সময় দিন।’’
একই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী পুলিশকর্মীদের কাছে জানতে চান, সেখানে খাবার নিয়ে কোনও সমস্যা রয়েছে কি না। ক্যান্টিনের খাবার ঠিক মতো পাওয়া যায় কি না, তা-ও জেনে নেন তিনি। পুলিশকর্মীদের উদ্দেশ্যে মমতা বলেন, ‘‘করোনা থেকে শুরু করে প্রাকৃতিক বিপর্যয়, সব কিছুতেই আপনারা কাজ করছেন। আমি আজ দুর্যোগ মোকাবিলায় বেরিয়েছি। পরে আবার আসব আপনাদের কাছে।’’
মুখ্যমন্ত্রীর এই আশ্বাসে সন্তোষ প্রকাশ করেন স্পেশ্যাল ফোর্স ও কমব্যাট ব্যাটেলিয়নের কর্মীরা। তাঁদের কথায়, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। আমরা ডিসি-সহ বাকিদের শাস্তির দাবি জানিয়েছি। মুখ্যমন্ত্রী সব শুনে ব্যবস্থা নেবেন বলেছেন।’’
মঙ্গলবার রাতে এ জে সি বসু রোডের পুলিশ ট্রেনিং স্কুলের ভিতরে ও বাইরে বিক্ষোভ দেখান কলকাতা পুলিশের কমব্যাট ব্যাটেলিয়নের জওয়ানেরা। অভিযোগ, সেই বিক্ষোভ থামাতে গিয়ে নিগৃহীত হন ডিসি (কমব্যাট ব্যাটেলিয়ন)। দীর্ঘক্ষণ অবরোধ করে রাখা হয় এ জে সি বসু রোড, ডি এল খান রোড। পরে বিভিন্ন থানার ওসি এবং উচ্চপদস্থ কর্তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছে উত্তেজিত পুলিশকর্মীদের ট্রেনিং স্কুলের ভিতরে নিয়ে যান। সেখানেও রাত ১টা পর্যন্ত বিক্ষোভ চলে। তাতে শামিল হন মহিলা পুলিশকর্মীরাও। পরে তাঁদের অভিযোগ গুরুত্ব সহকারে বিবেচনার আশ্বাস দেওয়ায় সকলে নিজেদের ব্যারাকে ফিরে যান। পিটিএস-এর ভিতরে প্রায় চার হাজার পুলিশকর্মী থাকেন।
বিক্ষোভকারীরা ডিসি-সহ কয়েক জনের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত অমানবিক আচরণের অভিযোগ তুলেছেন। তাঁদের বক্তব্য, পিটিএস-এ কমব্যাট ব্যাটেলিয়নের এক এএসআই করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। ওই ব্যারাকে আরও তিন জনের করোনা পজ়িটিভ ধরা পড়েছে। অথচ, আক্রান্তদের সংস্পর্শে আসা বাকি পুলিশকর্মীদের কোয়রান্টিনে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়নি। একই সঙ্গে তাঁদের অভিযোগ, কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় সুরক্ষারও ব্যবস্থা করছেন না। পিপিই, মাস্ক বা পর্যাপ্ত স্যানিটাইজ়ারও দেওয়া হয়নি তাঁদের। সুরক্ষার কোনও ব্যবস্থা ছাড়াই বাজারের মতো জায়গায় তাঁদের ডিউটিতে পাঠানো হছে।
বিক্ষোভকারীদের দাবি, ডিউটির কোনও নির্দিষ্ট সময় মানা হচ্ছে না। ছুটি না মেলায় বাড়িতেও যেতে পারছেন না। এমনকি, এক পুলিশকর্মী মঙ্গলবার রাতে অভিযোগ করেন, অফিসারদের বেসরকারি হাসপাতালে রেখে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হলেও তাঁদের সরকারি হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy