রুদ্ধ: ভাঙা পাঁচিল ও গাছের গুঁড়িতে বন্ধ যাতায়াতের পথ। বুধবার, যুগলকিশোর দাস লেনে। নিজস্ব চিত্র
ঘূর্ণিঝড় আমপানের পরে প্রায় দু’সপ্তাহ শহর-শহরতলির বহু জায়গা বিদ্যুৎহীন থাকায় শোরগোল পড়েছিল। বিভিন্ন রাস্তায় উপড়ে পড়া গাছ কেন ঝড়ের এক মাস পরেও সরানো হয়নি, তা নিয়ে বিতর্ক বেধেছিল। এ বার আমপানের জেরে বিপর্যস্ত একটি রাস্তা এখনও বন্ধ হয়ে আছে বলে অভিযোগ উঠল উত্তর কলকাতায়। ওই পাড়ার বাসিন্দাদের অভিযোগ, তিন মাসের বেশি কেটে গেলেও পুর-প্রশাসনের কেউ রাস্তা সাফ করাতে উদ্যোগী হননি। স্থানীয় জনপ্রতিনিধির সঙ্গে একাধিক বার যোগাযোগ করলেও সমস্যা মেটেনি।
গত ২০ মে আমপানের তাণ্ডবে গাছ উপড়ে পড়ার পাশাপাশি শহরের বেশ কিছু বাড়িও ভেঙেছিল। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, সেই সময়ই ভাঙে আমহার্স্ট স্ট্রিট সংলগ্ন ২৩, যুগলকিশোর দাস লেনের বাড়িটির একাংশ। বহু পুরনো ওই বাড়ির পাঁচিলে গাছের শিকড় ঢুকে সেটি দুর্বল হয়ে গিয়েছিল। পাঁচিলটি ভেঙে পড়ে রাস্তায়। স্থানীয়দের দাবি, বড় রাস্তার চেয়ে চওড়ায় ছোট হলেও যুগলকিশোর দাস লেনের ওই অংশটিই তাঁদের বড় অংশের রোজকার ব্যবহারের পথ। সেখান দিয়ে আমহার্স্ট স্ট্রিট থেকে সহজেই যাওয়া যায় বিবেকানন্দ রোডে।
বুধবার ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেল, করোনার জেরে যুগলকিশোর দাস লেনের একাংশ কন্টেনমেন্ট জ়োন হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। গার্ডরেল দিয়ে বন্ধ সেই অংশটুকু। ফলে আরও গুরুত্ব বেড়েছে বন্ধ হয়ে পড়ে থাকা রাস্তাটির। ভেঙে পড়া পাঁচিল এবং গাছের গুঁড়ির মধ্যে দিয়েই যাতায়াত করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
এলাকার একটি বাড়ির বাসিন্দা শ্যামল কর্মকার বলেন, ‘‘তিন মাসেও পুরকর্মীরা বাড়ির ভেঙে পড়া অংশ সাফ করতে না-পারায় পাড়ার যুবকেরাই ইট-সুরকি সরিয়ে কিছুটা পথ বার করার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু ওই বাড়ির বাকি অংশ কবে আবার ভেঙে পড়বে, সেই আতঙ্কে আছি।’’ আর এক বাসিন্দা রেখা সরকারেরও দাবি, ‘‘ওই রাস্তাটি বিপজ্জনক হয়ে রয়েছে। কারণ, ভেঙে পড়া বাড়ির বেশ কিছুটা অংশ বিপজ্জনক ভাবে ঝুলছে। পাড়ার ছেলেরা রাস্তা বার করলে কী হবে, সেখান দিয়ে যাওয়ার সময়ে কোন দিন কার মাথায় কী ভেঙে পড়বে জানি না।’’ পাড়ার মোড়ে দাঁড়ানো এক প্রৌঢ় আবার বললেন, ‘‘ভাঙা বাড়ির সংস্কার হচ্ছে না। এ দিকে, ওই রাস্তাতেই একটি নতুন বাড়ি প্রোমোটিং হচ্ছে। বাসিন্দাদের অসুবিধার কথা কে ভাবে?’’
এলাকাটি কলকাতা পুরসভার ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত। ওয়ার্ড কোঅর্ডিনেটর মীনাক্ষী গুপ্ত বলেন, ‘‘কাজ একেবারে বন্ধ, এ কথা ঠিক নয়। একটু একটু করে কাজ করার চেষ্টা হচ্ছে। তা ছাড়া এখানে আমার কিছু করার নেই। আসলে পুরসভারই সেই পরিকাঠামো নেই যে, রাতারাতি সব কিছু সংস্কার করে দেওয়া যাবে।’’ কিন্তু তিন মাস পরেও কোনও বাড়ির ভেঙে পড়া অংশ সরানোর মতো পরিকাঠামো নেই পুরসভার? ২৭ নম্বর ওয়ার্ড কলকাতা পুরসভার চার নম্বর বরোর অধীনে। বরোর চেয়ারপার্সন তথা জোড়াসাঁকো বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক স্মিতা বক্সী বলেন, ‘‘আমাকে কেউ বিষয়টি জানাননি। বৃহস্পতিবারের লকডাউন মিটলেই নিজে গিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy