প্রতীকী ছবি।
নবম থেকে দ্বাদশের পড়ুয়াদের স্কুলে আসার দিন শিক্ষা দফতরের বেঁধে দেওয়া কতটা যুক্তিযুক্ত, সেই প্রশ্ন তুলছেন শিক্ষকদের একাংশ। শিক্ষা শিবিরের একটি অংশের মতে, স্কুলে নবম থেকে দ্বাদশের পড়ুয়ারা কবে এবং কত দিন আসবে, সেটা স্কুল কর্তৃপক্ষ ঠিক করলেই বেশি বাস্তবসম্মত হত। শিক্ষকেরা জানাচ্ছেন, স্কুলে আসার দিন ভাগ হওয়ায় রোজ নতুন রুটিন করতে হচ্ছে তাঁদের।
সম্প্রতি শিক্ষা দফতর জানিয়েছে, সোম, বুধ এবং শুক্রবার আসবে দশম এবং দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়ারা। মঙ্গল এবং বৃহস্পতিবার আসবে নবম ও একাদশের পড়ুয়ারা। শনিবার স্কুল খোলা থাকলেও ক্লাস হবে না। ওই দিন অভিভাবকদের থেকে মতামত নেওয়ার দিন (ফিডব্যাক সেশন)। কোনও পড়ুয়ার যদি কোনও বিষয় বুঝতে অসুবিধা হয়, সে তা বুঝতে শনিবার স্কুলে আসতে পারে।
শিক্ষকদের একাংশ জানাচ্ছেন, নবম শ্রেণির সঙ্গে জুড়ে দেওয়ায় একাদশ শ্রেণির পড়াশোনায় ঘাটতি থেকে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। যাদবপুর বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক পরিমল ভট্টাচার্য জানান, তাঁদের স্কুলে নবম শ্রেণির পড়ুয়ারা কম আসছে। তাদের অ্যাক্টিভিটি টাস্কের উপরে পরীক্ষা কিছু দিনের মধ্যেই হবে। ওরা এখন স্কুলে কম এলেও চলবে। কিন্তু একাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের সপ্তাহে দু’দিন এলে অসুবিধা হতে পারে। কারণ, তাদের প্র্যাক্টিক্যাল ক্লাস অনেক বাকি। পরিমলবাবুর প্রশ্ন, সপ্তাহে দু’দিন এলে প্র্যাক্টিক্যাল ক্লাস কী ভাবে শেষ হবে? তাঁর মতে, “ছাত্রছাত্রীদের সুবিধার্থে কে কবে আসবে, সেই সিদ্ধান্ত সম্ভবত স্কুলের হাতে ছেড়ে দিলেই ভাল হত।”
সাখাওয়াত মেমোরিয়াল গভর্নমেন্ট গার্লস হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষিকা পাপিয়া সিংহ মহাপাত্র জানাচ্ছেন, একাদশ শ্রেণির জন্য সপ্তাহে দু’দিন ক্লাস যথেষ্ট নয়। তাই তাঁরা একই সঙ্গে একাদশ শ্রেণির অনলাইন ও অফলাইন ক্লাস চালাবেন বলে ঠিক করেছেন। পাপিয়াদেবী বলেন, “এর ফলে শিক্ষকদের একসঙ্গে অনলাইন এবং অফলাইন রুটিন করতে এবং তা মানতে অসুবিধা হতে পারে।” বেথুন কলেজিয়েট স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা শাশ্বতী অধিকারী বলেন, “ক্লাসে কবে, কী পড়ালে সব ছাত্রী উপকৃত হবে, সেই দিকে নজর রাখতে গিয়ে রোজ নতুন রুটিন তৈরি করতে হচ্ছে।”
বেলতলা গার্লস স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা অজন্তা মুখোপাধ্যায় মনে করেন, শনিবার স্কুলে অভিভাবকদের ফিডব্যাক সেশন বা পড়ুয়াদের বিশেষ সেশন না হয়ে স্বাভাবিক পঠনপাঠন হলে পড়ুয়ারা বেশি উপকৃত হত। সে দিন একাদশের ক্লাস দেওয়া যেতে পারত। অজন্তাদেবীর মতে, “এখন তো একাদশের প্র্যাক্টিক্যাল ক্লাস বেশি হচ্ছে। যে সব স্কুলে একাদশ শ্রেণির পড়ুয়া বেশি, সেখানে কী ভাবে কোভিড-বিধি মেনে সপ্তাহে দু’দিনে প্র্যাক্টিক্যাল ক্লাসের পাঠ্যক্রম শেষ হবে? ইচ্ছা থাকলেও তো বেশি পড়ুয়াকে নিয়ে ক্লাস করা যাবে না।”
হেয়ার স্কুলের প্রধান শিক্ষক জয়ন্ত ভট্টাচার্যের মত, দিন ভাগ করে পড়ুয়ারা আসায় স্কুলের পক্ষে করোনা-বিধি মেনে ক্লাস করা সহজ হচ্ছে, কিন্তু পড়াশোনায় ঘাটতি থেকে যাওয়ার আশঙ্কা থাকছে। কোন শ্রেণির পড়ুয়া কবে আসবে, তা প্রথমেই নির্দিষ্ট করে না দিয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের উপরে ছেড়ে দেওয়া যেতে পারত।
উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য অবশ্য বলেন, ‘‘নবম থেকে দ্বাদশের পড়ুয়ারা কবে আসবে, তা পরিবর্তন করা হতে পারে। পরিস্থিতি অনুযায়ী এই রুটিন বদলানোর সম্ভাবনা রয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy