দক্ষিণ কলকাতার স্কুলের সামনে ছাত্রকে মারধরের পর তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ। ছবি: ভিডিয়ো থেকে সংগৃহীত।
এক সহপাঠী তাকে খুব উত্ত্যক্ত করে। দাদাকে এই অভিযোগ জানিয়েছিল একাদশ শ্রেণির এক ছাত্রী। বোনের অভিযোগ শুনে, ওই ছাত্রকে ‘শিক্ষা’ দিতে সোমবার দুপুরে দক্ষিণ কলকাতার একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের সামনে তাকে মারধর করে কিশোরীর দাদা এবং তার কয়েক জন সঙ্গী। মারধরের পর ওই ছাত্রকে বাইকে চাপিয়ে ‘অপহরণ’ করা হয় বলেও অভিযোগ। পরে কলকাতা পুলিশ কসবা থেকে উদ্ধার করে কিশোরকে। কিশোরীর বাবা জানিয়েছেন, তাঁর মেয়েকে উত্ত্যক্ত করা হত। দক্ষিণ কলকাতার অ্যান্ড্রিউজ্ স্কুলের সামনে ‘অপহরণ’-এর এই ঘটনা ঘটেছে।
স্কুলের সামনে থেকে ওই ছাত্রকে ‘তুলে’ নিয়ে যাওয়ার পর লেক থানায় অভিযোগ জানান কর্তৃপক্ষ। পুলিশ তদন্ত শুরু করে। স্কুলের সামনের একটি দোকানের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে ওই ছাত্রের খোঁজ শুরু করে তারা। পরে মোবাইলের টাওয়ারের অবস্থান দেখে কসবা থেকে উদ্ধার করা হয় ছাত্রটিকে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ‘অপহৃত’ পড়ুয়া তার সহপাঠিনীকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়েছিল। মেয়েটি সেই প্রস্তাব খারিজ করে দিয়ে জানায়, তার অন্য এক জন ‘বিশেষ বন্ধু’ রয়েছে। সে এই স্কুলের ছাত্র নয়। ছাত্রের প্রস্তাব খারিজের পর থেকেই ওই ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করা হত বলে অভিযোগ। বিষয়টি দাদাকে জানায় ওই কিশোরী। অভিযোগ, বিষয়টি শুনে সোমবার স্কুলের সামনে ওই পড়ুয়াকে মারধর করে কিশোরীর দাদা এবং তার কয়েক জন সঙ্গী। তার পর তাকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। ওই কিশোরীর বাড়ি কসবা এলাকায়। সেখান থেকেই ওই ছাত্রকে উদ্ধার করা হয়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই কিশোরীর দাদাও একাদশ শ্রেণির ছাত্র।
যদিও ওই ছাত্রীর বাবা অপহরণের অভিযোগ মানতে চাননি। তিনি পাল্টা ‘অপহৃত’ ছাত্রের দিকেই আঙুল তুলেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘মেয়ে আমায় আগে জানিয়েছিল। বলেছিল, আমাকে ওই ছেলেটা পড়তে দিচ্ছে না। টানাটানি করছে। জামা টানছে। হেনস্থা করছে।’’ মেয়ের অভিযোগ শুনে তিনি কী বলেছিলেন তা জানিয়ে বলেন, ‘‘মেয়েকে বলেছিলাম, তুই স্কুলে নতুন। পরে ঠিক হয়ে যাবে।’’ প্রসঙ্গত, দশম শ্রেণি পর্যন্ত অন্য একটি স্কুলে পড়ত ওই কিশোরী। একাদশ শ্রেণিতে অ্যান্ড্রিউজ্ স্কুলে ভর্তি হয়। ছাত্রীর বাবা দাবি করেছেন, ঘটনার সময় তিনি কাজে ছিলেন। বিকেল ৫টা নাগাদ তিনি ছেলেকে ফোন করেন। ছেলে বলে, সে বাড়িতে রয়েছে। ওই ব্যক্তির কথায়, ‘‘আমার ছেলে অপহরণ করেনি। আমাদের বাইক নেই। কী করে বাইকে চাপিয়ে নিয়ে যাবে?’’
ঘটনার এক প্রত্যক্ষদর্শী এবং ওই স্কুলের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র সঞ্জীব মুখিয়াও ওই ছাত্রীকে ‘উত্ত্যক্ত’ করার অভিযোগ মানতে চায়নি। সে বলে, ‘‘ও উত্ত্যক্ত করত না। সোমবার নাম ধরে ডেকেছিল। সে জন্য ও সরিও বলেছিল। মেয়েটা বলে, আমায় সরি বললে হবে না। দাদা আসছে, ওকে বোলো।’’ সঞ্জীব জানিয়েছে, এর পরেই ছাত্রীর দাদা-সহ কয়েক জন এসে একাদশ শ্রেণির ওই পড়ুয়াকে মারধর করে। তার পর ছেলেটিকে বাইকে টেনে তুলে নিয়ে যায়। তার অভিযোগ, সেই সময়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত স্কুলের এক ছাত্রীকেও মারধর করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ছাত্র-ছাত্রীরা জানিয়েছে, দুপুর সাড়ে তিনটে নাগাদ স্কুল থেকে বেরিয়েছিল ওই পড়ুয়া। তখন তাকে ঘিরে ধরে কয়েক জন। মারধর করে। পড়ুয়াদের দাবি, এর পর ওই ছাত্রকে বাইকে ‘তুলে’ নিয়ে যায় অভিযুক্তেরা। স্কুলের এক ছাত্রকে যে ‘তুলে’ নিয়ে যাওয়া হয়েছে, তা এক ছাত্রের কাছ থেকে জানতে পারেন প্রধানশিক্ষক সুপ্রিয় মিত্র। তিনি বলেন, ‘‘স্কুলের ছাত্রেরা আমাকে জানিয়েছে, স্কুলের বাইরে রাস্তায় ওই ছাত্রকে সাত-আট জন মিলে প্রথমে মারধর করেন। তার পর তাকে বাইকে তুলে নিয়ে চলে যান। বিষয়টি পুলিশকে জানিয়েছি। পুলিশ এসে খতিয়ে দেখছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy