Advertisement
E-Paper

চলছে অনলাইন ক্লাস, পাশের ঘরে ছাত্রের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার

মঙ্গলবার বাঁশদ্রোণী এলাকার ওই ঘটনায় বছর তেরোর সেই কিশোরকে তার পরিবার বাঘা যতীন স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেন।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৪:৫৫
Share
Save

স্কুলের অনলাইন ক্লাস করার জন্য ছেলেকে মোবাইল দিয়ে বসিয়ে বেরিয়েছিলেন বাবা-মা। আধ ঘণ্টার মধ্যেই বাড়ি ফিরে বাবা দেখেন, সেই মোবাইল ফোনটি বন্ধ অবস্থায় একটি ঘরের বিছানার উপরে পড়ে রয়েছে। পাশের ঘরের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ। সেই ঘরের দরজা ভাঙতেই তিনি দেখলেন, সিলিং থেকে ঢুলছে তাঁর ছেলে!

মঙ্গলবার বাঁশদ্রোণী এলাকার ওই ঘটনায় বছর তেরোর সেই কিশোরকে তার পরিবার বাঘা যতীন স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেন। পুলিশ সূত্রের খবর, ওই কিশোরের হাতে ব্লেডের কয়েকটি দাগও মিলেছে। অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে রিজেন্ট পার্ক থানা।

প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, স্কুলের অনলাইন ক্লাস চলাকালীন আত্মঘাতী হয়েছে ওই ছাত্র। যদিও আত্মহত্যার কারণ বুধবার রাত পর্যন্ত স্পষ্ট নয়। ওই ছাত্র বাঁশদ্রোণী এলাকার একটি স্কুলের অষ্টম শ্রেণিতে পড়ত। তার বন্ধুদের পাশাপাশি স্কুলের শিক্ষকদের সঙ্গেও কথা বলছে পুলিশ।

মৃত কিশোরের মা রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের চুক্তিভিক্তিক কর্মী। তার বাবা চেন্নাইয়ে একটি নির্মাণ সংস্থায় কর্মরত। কয়েক দিন আগেই তিনি বাড়ি ফিরেছেন। সকাল ন’টা ৪০ মিনিট থেকে ওই কিশোরের স্কুলের অনলাইন ক্লাস শুরু হয়। মঙ্গলবার সকাল ১০টা নাগাদ স্ত্রীকে কর্মক্ষেত্রে পৌঁছে দিতে বেরিয়েছিলেন তিনি। সাড়ে ১০টা নাগাদ বাড়ি ফিরে ছেলেকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান বাবা।

বুধবার ওই কিশোরের বাড়িতে পৌঁছলে কথা হয় তার মায়ের সঙ্গে। শোকস্তব্ধ মা কোনও রকমে বলেন, ‘‘১১টা নাগাদ বাড়ি থেকে ফোন করে আমাকে দ্রুত চলে আসতে বলা হয়। ফিরে দেখি, ছেলের দেহ ঘরের মেঝেয় শোয়ানো। ওর বাবা আমাকে পৌঁছে দিয়ে এসে দেখে, একটা ঘরের বিছানার উপরে মোবাইলটা পড়ে আছে। অন্য ঘরে ছেলের দেহ।’’

তদন্তের শুরুতেই পুলিশ ওই মোবাইলটি বাজেয়াপ্ত করেছে। পুলিশ সূত্রের খবর, সকাল ন’টা ৪০ মিনিট থেকে ১০টা ২০ মিনিট পর্যন্ত অনলাইন ক্লাসে উপস্থিত ছিল ওই ছাত্র। তখন যে শিক্ষক ক্লাস নিচ্ছিলেন তিনি জানিয়েছেন, বেলা ১১টা পর্যন্ত ওই ক্লাস চলেছিল। তবে ক্লাস চলাকালীন তিনি অস্বাভাবিক কিছুই দেখেননি। তবে ওই ছাত্র কখন ক্লাস থেকে বেরিয়ে গিয়েছে তিনি তা-ও খেয়াল করেননি।

পুলিশ জানিয়েছে, ক্লাস থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পরে ওই মোবাইলে আসা বেশ কয়েকটি মেসেজ মুছে দিয়েছিল ছাত্রটি। এমনকি স্কুল ও বন্ধুদের যে কয়েকটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ রয়েছে, সে সব থেকেও ১০টা ২০ মিনিট থেকে ১০টা ৩০ মিনিটের মধ্যে বেরিয়ে গিয়েছিল সে।

ছাত্রের মায়ের কথায়, ‘‘চুপচাপ স্বভাবের হলেও আমার ছেলে এই কাণ্ড ঘটাতে পারে ভাবিনি। গত রবিবার রাতে ওর ক্লাসেরই একটি মেয়ের মা নাকি ওকে ফোন করে বকাবকি করেছিলেন। তিনি নাকি তাঁর মেয়ের সঙ্গে আমার ছেলের বন্ধুত্ব চান না। কিন্তু আমার ছেলেও ওই মেয়েটির সঙ্গে মিশতে চায়নি।’’ এ দিন সেই ছাত্রীর মাকে ফোন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘যা বলার পুলিশকেই বলব।’’

তদন্তকারী পুলিশ আধিকারিকদের মতে, কোনও সম্পর্ক, না কি অন্য কোনও কারণে এই ঘটনা তা ছাত্রের ব্যবহার করা ওই মোবাইল থেকে জানা যেতে পারে। আপাতত মোবাইলই মূল সূত্র।

Suicide Banshdroni Student

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}