Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
BJP

বিজেপি যুব মোর্চার সিইএসসি অভিযান ঘিরে ধুন্ধুমার, পুলিশের জলকামান-কাঁদানে গ্যাস

বিদ্যুতের মাসুল কমানোর দাবি নিয়ে বুধবার সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ ধরে ধর্মতলায় সিইএসসি ভবনের দিকে এগোতে শুরু করে বিজেপি যুব মোর্চার ওই মিছিল।

মিছিল আটকাতে পুলিশের জলকামান। —নিজস্ব চিত্র।

মিছিল আটকাতে পুলিশের জলকামান। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ১৩:২৪
Share: Save:

গোটা দেশের তুলনায় পশ্চিমবঙ্গে বিদ্যুতের মাশুল সব থেকে বেশি। এমনকি মিটার রিডিংয়ের ক্ষেত্রেও কারচুপি করা হয়। এমন বেশ কিছু অভিযোগ তুলে বুধবার ধর্মতলা চত্বরে সিইএসসি-র সদর দফতর ভিক্টোরিয়া হাউস অভিযানের ডাক দিয়েছিল রাজ্য বিজেপির যুব মোর্চা। সেই মিছিল ঘিরেই এ দিন দুপুরে যুব মোর্চা এবং পুলিশের মধ্যে ধুন্ধুমার বাধল চিত্তরঞ্জন অ্যাভেনিউতে। বিক্ষোভকারীদের হঠাতে চালানো হল জলকামান ও কাঁদানে গ্যাস। পুলিশের বিরুদ্ধে উঠল লাঠি চালানোর অভিযোগ। যুব মোর্চার অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন বলে বিজেপির দাবি। পুলিশের পাল্টা দাবি, তাদেরও বেশ কয়েক জন কর্মী আহত হয়েছেন।

যুব মোর্চার ডাকে ‘চলো ভিক্টোরিয়া হাউস’-এর বিক্ষোভ মিছিল এ দিন সকাল ১১টা নাগাদ রাজ্য বিজেপির সদর দফতরের সামনে থেকে শুরু হয়। বিজেপির দাবি, সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও বৃষ্টির কারণে তাঁদের বেশ কিছু কর্মী সমর্থক রাস্তায় আটকে পড়েন। ফলে মিছিল শুরু করতে দেরি হয়ে যায়। ওই মিছিলে ছিলেন রাজ্য বিজেপির অন্যতম দুই সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু ও রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়, যুব মোর্চার রাজ্য সভাপতি দেবজিৎ সরকার, মহিলা মোর্চার সভানেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায়-সহ অনেকে। মিছিল চিত্তরঞ্জন অ্যাভেনিউ ধরে ভিক্টোরিয়া হাউসের দিকে এগনোর সময় চাঁদনি চকের কাছে ই-মলের সামনে পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে তা আটকে দেয়।

বিজেপির অভিযোগ, এর পরেই তাদের শান্তিপূর্ণ মিছিলের উপর পুলিশ জলকামান চালায়। চালানো হয় কাঁদানে গ্যাসও। একই সঙ্গে তাদের কর্মী-সমর্থকদের উপর বেপরোয়া ভাবে লাঠি চার্জের অভিযোগও তোলে তারা। এই পরিস্থিতিতে যুব মোর্চার মিছিল ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়ে। চিত্তরঞ্জন অ্যাভেনিউ লাগোয়া বিভিন্ন গলিতে ঢুকে পড়েন মোর্চার কর্মী-সমর্থকেরা। অভিযোগ, পুলিশ সেই সময় তাঁদের তাড়া করে লাঠি দিয়ে পেটায়। এই সময়ে রাস্তার উপরেই বসে পড়েন রাজু-সহ একাধিক নেতা। তিনি ওখানে বসে অবস্থান বিক্ষোভের কথা ঘোষণা করতেই পুলিশ এসে তাঁদের গ্রেফতার করে। গ্রেফতার করা হয়েছে সায়ন্তন বসু, দেবজিৎ সরকার-সহ অনেককেই।

সায়ন্তন বসুর অভিযোগ, এই ঘটনায় তাঁদের ৫০-৬০ জন কর্মী-সমর্থক আহত হয়েছেন। বেশ কয়েক জনের মাথাও ফেটেছে বলে তাঁর দাবি। তাঁদের মধ্যে ৫ জনের জখম গুরুতর। সায়ন্তনের কথায়, ‘‘পশ্চিমবঙ্গে গণতন্ত্র ভূলুণ্ঠিত। আমাদের মিছিলকে ভিক্টোরিয়া হাউসের আধ কিলোমিটার দূরে পুলিশ আটকে দিল। একটা শান্তিপূর্ণ মিছিলকে কেন অত দূরে আটকাবে, কেনই বা জলকামান, কাঁদানে গ্যাস নিয়ে তার উপরে ঝাঁপিয়ে পড়বে, বুঝলাম না। এ রাজ্যে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের জন্য বিন্দুমাত্র জায়গা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার ছাড়তে চায় না।’’

মাথা ফেটে গিয়েছে এক আন্দোলনকারীর। —নিজস্ব চিত্র।

কলকাতা পুলিশের ডিসি (সেন্ট্রাল) নীলকণ্ঠ সুধীর কুমার-সহ সেন্ট্রাল ডিভিশনের বিভিন্ন থানার ওসি এবং অ্যাডিশনাল ওসিরা এ দিন ঘটনাস্থলে ছিলেন। তাঁদের দাবি, বিজেপি প্রথমে বলেছিল, ই-মলের সামনে তাদের কর্মী-সমর্থকেরা মিছিল করে এসে জমায়েত করবেন। সেখান থেকে ১০ জনের প্রতিনিধি দল যাবে ভিক্টোরিয়া হাউসে। এক পুলিশ কর্তার কথায়, ‘‘বাস্তবে ওই কর্মী-সমর্থকেরা ব্যারিকেড ভেঙে এগনোর চেষ্টা করলে আমরা জলকামান ব্যবহার করি। তার পরেও জমায়েত এগিয়ে আসলে, তাঁদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস ছোড়া হয়। বেশ কয়েক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’’ বিজেপির দাবি, তাদের ৮৫ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

পরে এ দিন সন্ধ্যায় লালবাজার থেকে জানানো হয়, চিত্তরঞ্জন অ্যাভেনিউয়ের ঘটনায় ৩ জন বিজেপি কর্মী সামান্য আহত হয়েছেন। মোট ৯ জন পুলিশ কর্মী আহত। তাঁর মধ্যে বড়বাজার থানার ওসি রয়েছেন। তাঁর চোখে আঘাত রয়েছে। সব মিলিয়ে মোট ৮৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়। বৌবাজার থানায় এ নিয়ে স্বতপ্রণোদিত ভাবে মামলাও দায়ের করেছে পুলিশ। একই সঙ্গে জানানো হয়েছে, এ দিন দু’রাউন্ড কাঁদানে গ্যাস ছোড়া হলেও কোনও লাঠিচার্জ করা হয়নি।

অন্য বিষয়গুলি:

BJP TMC Kolkata Police CESC Locket Chatterjee
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy