হেলমেট ছাড়া তিনজন বাইকে।
স্কুটারে চালকের পিছনে তিন জন। কারও মাথাতেই হেলমেটের বালাই নেই। গিরিশ পার্ক মোড়ে সিগন্যালে দাঁড়িয়ে সেই স্কুটারের অ্যাক্সিলারেটর হাত দিয়ে ঘুরিয়ে তীব্র আওয়াজ করে চলেছেন চালক। পাশে দাঁড়িয়ে থাকা একটি মোটরবাইকের চালকও পিছনে একাধিক জনকে বসিয়ে একই কাজে ব্যস্ত। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে সিগন্যাল সবুজ হতেই তীব্র গতিতে ছুটতে শুরু করল স্কুটার ও বাইকটি। দু’টি চলন্ত যান থেকেই আরোহীরা বাতাসে আবির উড়িয়ে চিৎকার করতে করতে ঝড়ের গতিতে কার্যত অদৃশ্য হয়ে গেলেন।
দোল উদ্যাপনকে কেন্দ্র করে উৎসবের নামে এ বছরও এমন বেপরোয়া নাগরিকদের ছবি দেখা গেল শহরের বিভিন্ন প্রান্তে। রাস্তার মোড়ে মোড়ে পুলিশের দেখা মিলল বটে, কিন্তু তাদের চোখের সামনেই চলল দেদার বিধি ভাঙা। কোথাও চালকের পিছনে একাধিক জনকে বসিয়ে ছুটল বাইক, কোথাও বেসামাল হাতেই দেখা গেল অন্য গাড়ির সঙ্গে পাল্লা দিতে। সকাল থেকে রাস্তার মোড়ে মোড়ে দাঁড়িয়ে পুলিশ অচেনা কাউকে রং না দিতে অনুরোধ করলেও বহু ক্ষেত্রেই তা কাজে এল না। যা প্রশ্ন তুলে দিল, আদৌ কি কোনও দিন শহরে বন্ধ হবে উৎসব, আনন্দের নামে পথের বিধি ভাঙার প্রবণতা? লালবাজারের তরফে যদিও কড়া হাতে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলেই দাবি করা হয়েছে। রাস্তায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করার পাশাপাশি শহরের ৩৫০টি স্থানে বিশেষ পিকেট তৈরি করে নজরদারি চালানো হয়েছে। এমনকি, সাদা পোশাকের পুলিশকর্মীদের নজরদারি ছিল বলেও দাবি করা হয়েছে। লালবাজার সূত্রের খবর, বিভিন্ন রকম বিধি ভাঙায় এ দিন ৩০৫ জনকে গ্রেফতার করা হয় এবং ৪৭ লিটার মদও বাজেয়াপ্ত করা হয়।
তবে, পুলিশের নজরদারি সত্ত্বেও দেদার বিধি ভাঙার ঘটনা ঘটেছে এ দিন। সকাল থেকেই শহরে ছিল ছুটির মেজাজ। রাস্তাঘাটে যানবাহনের সংখ্যা ছিল হাতে গোনা। তবে, বেলা বাড়তেই রাস্তায় বাইকের দাপটদেখা যায়। রং মেখে বিনা হেলমেটে বেসামাল হাতে বাইক চালাতে দেখা গিয়েছে অনেককেই। রাসবিহারী কানেক্টরে সিগন্যালে দাঁড়ানো এমনই এক বাইকচালককে হেলমেটকোথায়, প্রশ্ন করতেই উত্তর মিলেছে, ‘‘রং মেখে মাথায় আর হেলমেট পরা যায়! দোলে আজ সব আইনে ছাড়।’’ বিধি ভাঙায় বাদ যায়নি গাড়িও। গাড়িতে জোরে গান চালিয়েবেপরোয়া ভাবে চালানোর দৃশ্যও নজরে পড়েছে।
এ দিন সকালে শ্যামবাজারের পাঁচ মাথায় মোড়ে পুলিশের তরফে অচেনা কাউকে রং না দেওয়ার প্রচার চালাতে দেখা গিয়েছিল। এমনকি, ট্র্যাফিক-বিধি মেনে চলারও আবেদন জানানো হয়। যদিও বেলা বাড়তেই পথের বিধি ভাঙার ছবির পাশাপাশি চলন্ত বাইক থেকে আবির ওড়ানোর দৃশ্য দেখা গিয়েছে অহরহ। বিধি ভাঙা প্রসঙ্গে রাস্তায় কর্তব্যরত এক পুলিশকর্মীকে প্রশ্ন করতেই উত্তর দিলেন, ‘‘আমরা যাঁরা রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকি, তাঁদের অনেক কিছু সামলে কাজ করতে হয়। আজকের দিনে কড়া আইনের কথা শোনালে চলে না।’’ যদিও লালবাজারের কর্তারা কড়া হাতে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলেই দাবি করেছেন। এক কর্তার কথায়, ‘‘রাস্তার পাশাপাশি গঙ্গার ঘাটগুলিতেও নজরদারি ছিল। যেখানে যেখানে বসন্ত উৎসবের আয়োজন করা হয়েছিল, সেই সমস্ত জায়গায় পুলিশ মোতায়েন কড়া হয়েছিল। বিধি ভঙ্গে কড়া হাতে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy