চেনা: সেন্ট পল্স ক্যাথিড্রাল চত্বরে দেখা যাবে না এই ভিড়। ফাইল চিত্র
এমন বড়দিন বা ক্রিসমাস ইভ কি আগে কখনও দেখার কথা ভেবেছে কলকাতা?
অতিমারির আবহে সেই ভাবনাটাই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে। বড়দিনের আবাহনে গির্জায় গির্জায় মধ্য রাতের জমায়েত এ শহরের বহু বছরের ঐতিহ্য। তবে বহু গির্জাই এ বার সেই অনুষ্ঠান এড়িয়ে চলবে। ভিড়ের নিরিখে সেন্ট পল্স ক্যাথিড্রালের মতো জনপ্রিয় ‘মিডনাইট মাস’-এর অঙ্গণেও গির্জার গুটিকয়েক সদস্য ছাড়া কারও ঢোকার অনুমতি নেই। শুধু তা-ই নয়, প্রাক্ বড়দিনের সন্ধ্যা ও বর্ষবরণের রাতে গির্জায় অনুষ্ঠানের কথা মাথায় রেখে সেই দিনগুলিতে গির্জা চত্বর জীবাণুমুক্ত করার আয়োজন করা হচ্ছে। ফলে ওই সব দিনে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত গির্জায় প্রবেশের অনুমতিই মিলবে না বলে সেন্ট পল্স ক্যাথিড্রালের তরফে জানানো হয়েছে। তবে চার্চ অব নর্থ ইন্ডিয়া-র অন্তর্গত কলকাতা ডায়োসিসের বিশপ পরিতোষ ক্যানিং জানিয়েছেন, ক্রিসমাস ইভ ও বর্ষবরণের রাতে অনুষ্ঠান শেষের পরে কিছু ক্ষণের জন্য গির্জা চত্বর খোলা থাকবে জনসাধারণের জন্য। বিশপ বলেন, ‘‘তখন কেউ এসে নেটিভিটি বা জিশুর জন্মপর্বের উপস্থাপনা, গির্জার সাজসজ্জা দেখে যেতে পারেন।’’ তবে এ বছর দিনভর অত বিধিনিষেধের পরে প্রাক্ বড়দিনের রাতে গির্জায় খুব বেশি ভিড় না হওয়ারই সম্ভাবনা।
বড়দিনে সাধারণত দুপুর পর্যন্ত সেন্ট পল্স ক্যাথিড্রালে ইংরেজি ও বাংলায় প্রার্থনাসভার আয়োজন করা হয়। এর পরে অবশ্য গির্জা সাধারণের জন্য খোলা থাকবে বলে জানিয়েছেন বিশপ ক্যানিং। কিন্তু তিনি বলেন, ‘‘ধাপে ধাপে থার্মাল স্ক্রিনিংয়ের মাধ্যমে শরীরের তাপমাত্রা মেপে, কোভিড-বিধি মেনে তবেই গির্জায় ঢুকতে হবে। পুলিশের সঙ্গে ইতিমধ্যে কথা হয়েছে। বড়দিন ও বছর শেষের ছুটির মরসুমে এ বছর গির্জায় ভিড় নিয়ন্ত্রণে পুলিশ আমাদের সাহায্য করবে।’’ বিশপ ক্যানিং আরও বলছেন, ‘‘বছরের এই সময়টা গির্জায় ধর্মীয় অনুষ্ঠানে শামিল হতে বা কলকাতায় বেড়াতে আসেন সব ধর্মের মানুষেরাই। অথচ এ বছর অনেকেই গির্জায় আসতে পারবেন না বা ঢোকার সুযোগ পাবেন না ভেবে খারাপ লাগছে। কিন্তু কোভিডকে রুখতে এটুকু ত্যাগ স্বীকার আমাদের সকলেরই কর্তব্য।’’
কলকাতা ডায়োসিসের ইউটিউব চ্যানেল বা ফেসবুক পেজে অবশ্য সব অনুষ্ঠানই ‘লাইভ’ দেখানোর ব্যবস্থা থাকছে। ডায়োসিসের অন্তর্গত শহরের আরও ৩০টি গির্জার বেশ কয়েকটিতেই মধ্য রাতের প্রার্থনাসভার রীতি আছে। সেখানেও এ বার বিধিনিষেধ জারি থাকবে।
কলকাতায় রোমান ক্যাথলিকদের আর্চবিশপ টমাস ডি’সুজ়াও চূড়ান্ত সতর্কতার কথা জানিয়েছেন। ব্রেবোর্ন রোডের সাবেক গির্জা ‘ক্যাথিড্রাল অব দ্য মোস্ট হোলি রোজ়ারি’তে এ বার বাইরেও শিশু জিশুর ‘ক্রিব’ বা দোলনা সাজানো থাকবে। তবে অন্য বারের তুলনায় এ বার সেই
সাজসজ্জার জৌলুস নিচু তারে বাঁধা থাকবে বলে জানিয়েছেন আর্চবিশপ। তবে তা দূর থেকেও দেখতে পাওয়া যাবে। তিনি বলেন, ‘‘গির্জায় প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ করতেই এটা করা হয়েছে।’’ মধ্য রাতের প্রার্থনা এড়িয়ে সান্ধ্য ধর্মীয় অনুষ্ঠান সম্পন্ন হবে রোমান ক্যাথলিকদের কয়েকটি গির্জায়। রাত ন’টার মধ্যে তা মিটে যাবে বলে জানিয়েছেন আর্চবিশপ। কলকাতায় রোমান ক্যাথলিকদের আরও কয়েকটি গির্জা, যেমন খিদিরপুরে সেন্ট ইগনেসিয়াসের গির্জা, মিডলটন রোয়ে সেন্ট টমাসের গির্জা কিংবা পার্ক সার্কাসে চার্চ অব ক্রাইস্ট দ্য কিং— সর্বত্রই এ ভাবেই উদ্যাপন হবে বড়দিন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy