Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Measles

দুই বরোয় ফের হামে আক্রান্ত শিশুরা, বাড়ল টিকাকরণের সময়

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, ফেব্রুয়ারির শেষেই কলকাতা পুরসভার বরো ৭ ও বরো ৯-এ বেশ কিছু শিশুর হাম হয়েছে। এখনও পর্যন্ত বরো ৭-এ হামে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা ৩৮ আর বরো ৯-এ সংখ্যাটা ৮।

Measles vaccination

স্বাস্থ্যকর্তাদের চিন্তা বাড়িয়ে সম্প্রতি নতুন করে হামের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে কলকাতার দু’টি বরোয়। প্রতীকী ছবি।

পারিজাত বন্দ্যোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ মার্চ ২০২৩ ০৭:১৯
Share: Save:

কলকাতার অনেক স্কুলে বেশ কয়েক হাজার শিশুকে এখনও হাম-রুবেলার টিকা দেওয়া যায়নি। তা নিয়ে এমনিতেই চিন্তায় রয়েছে স্বাস্থ্য দফতর ও পুরসভা। এরই মধ্যে টিকাকরণ অভিযান চলাকালীন স্বাস্থ্যকর্তাদের চিন্তা বাড়িয়ে সম্প্রতি নতুন করে হামের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে কলকাতার দু’টি বরোয়।

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, ফেব্রুয়ারির শেষেই কলকাতা পুরসভার বরো ৭ ও বরো ৯-এ বেশ কিছু শিশুর হাম হয়েছে। এখনও পর্যন্ত বরো ৭-এ হামে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা ৩৮ আর বরো ৯-এ সংখ্যাটা ৮। ওই দুই বরোয় বাড়ি-বাড়ি ঘুরে নতুন করে কোনও হাম-আক্রান্ত শিশু রয়েছে কি না, তার খোঁজ চলছে। এই এলাকায় রুটিন টিকাকরণের উপরেও জোর দেওয়া হয়েছে। কারণ, রুটিন টিকাকরণে ফাঁক থাকলে তবেই শিশুদের হামে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

সেই সঙ্গে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি স্বাস্থ্য দফতর, পুরসভা ও কলকাতার বেশ কয়েকটি বেসরকারি ও সরকারি স্কুল কর্তৃপক্ষের মধ্যে এক বৈঠক হয়েছে। কলকাতার ৫৬টি স্কুলে (তার মধ্যে চার-পাঁচটি সরকারি স্কুলও রয়েছে) এখনও কয়েক হাজার শিশুকে হাম-রুবেলার টিকা দেওয়া যায়নি। সেটাই ছিল বৈঠকের মূল আলোচ্য। সেখানে ওই স্কুলগুলিকে ১১টি বেসরকারি হাসপাতালের সঙ্গে যুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। স্কুলগুলির জন্য নির্দিষ্ট করে দেওয়া হাসপাতালে শিশুদের পাঠিয়ে নিখরচায় টিকাকরণ করাতে পারবেন কর্তৃপক্ষ।

স্বাস্থ্যকর্তাদের মতে, টিকাকরণে অনাগ্রহ ও গড়িমসির জন্যই এখনও হামের প্রাদুর্ভাব দেখা দিচ্ছে। শিশু অপুষ্টিতে ভুগলে বা জন্মগত ভাবে রুগ্ন হলে ওই হাম প্রাণঘাতী হতে পারে। কলকাতায় শিশুদের রুটিন টিকাকরণ গোটা রাজ্যের মধ্যে সবচেয়ে কম (৮৫ শতাংশ)। রুটিন টিকাকরণেই শিশুদের হামের টিকা দেওয়া হয়।

শিশুকে রুটিন টিকা না দেওয়া হলে তার শরীরে হামের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয় না। সেই কারণেই তারা হামে আক্রান্ত হয়। বরো ৭-এর ৫৯, ৬৬ ও ৫৮ নম্বর ওয়ার্ডেই মূলত আক্রান্ত শিশুদের পাওয়া যাচ্ছে। এই সব ওয়ার্ডের মধ্যে রয়েছে ট্যাংরা, তিলজলা, ধাপা, পিকনিক গার্ডেন প্রভৃতি এলাকা। আর বরো ৯-এ হামে আক্রান্ত শিশু পাওয়া যাচ্ছে ৭৪, ৭৫, ৭৯ নম্বর ওয়ার্ডে। এগুলি মূলত খিদিরপুর, গার্ডেনরিচ এলাকার অন্তর্গত। স্বাস্থ্যকর্তাদের মতে, এই সব এলাকায় অনেক মানুষের মধ্যে রুটিন টিকাকরণের প্রতি বিরূপ ধারণা রয়েছে। প্রচার চালিয়ে সেটা কিছুটা কাটানো গেলেও পুরোটা এখনও যায়নি।

তবে যে সব শিশু আক্রান্ত হয়েছে, তাদের মধ্যে বেশ কয়েক জনকে হাম-রুবেলা বিশেষ টিকাকরণ অভিযানে টিকা দেওয়া হয়েছিল বলে জানা গিয়েছে। কিন্তু, এই টিকা দেওয়ার মোটামুটি ২-৩ মাস পরে শরীরে প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়। ওই শিশুরা সেই সময়সীমার আগেই হামে আক্রান্ত হয়েছে। শুধুমাত্র আর্থ-সামাজিক ভাবে পিছিয়ে পড়া শ্রেণির মধ্যেই নয়, কলকাতার বেশ কিছু প্রথম সারির বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের উচ্চবিত্ত পরিবারের অভিভাবকদের মধ্যেও এই টিকার প্রতি বিরূপ মনোভাব স্বাস্থ্যকর্তাদের বিস্মিত করেছে। তাঁরা অনেকেই এখনও শিশুকে টিকা দিতে রাজি হননি। মূলত এই শিশুদের জন্যই বিশেষ টিকাকরণ কর্মসূচির সময়সীমা বাড়িয়ে ৩১ মার্চ করা হয়েছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Measles kolkata municipal corporation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy