প্রতীকী ছবি।
সব বাধা কাটিয়ে জন্ম নিল সে। তার বাবা-মা তো বটেই, চিন্তিত ছিলেন চিকিৎসকেরাও। তাই সোমবার বেলা ১১টা নাগাদ ২ কিলোগ্রাম ৩০০ গ্রাম ওজনের শিশুটি ভূমিষ্ঠ হয়ে কেঁদে উঠতেই চিন্তামুক্ত হলেন সকলে। সেই সঙ্গে জটিল শারীরিক সমস্যা সত্ত্বেও অন্তঃসত্ত্বার সুস্থ শিশুর জন্ম দেওয়ার চিকিৎসায় আরও একটি পালক জুড়ল এসএসকেএম-এর সাফল্যের মুকুটে।
এন্ডোক্রিনোলজি, শল্য এবং স্ত্রীরোগ বিভাগের দলগত প্রচেষ্টায় এই সাফল্যের কাহিনি শুরু হয়েছিল কয়েক মাস আগেই। পঞ্চসায়রের বাসিন্দা অন্তঃসত্ত্বা তরুণী পেট, বুক আর পিঠের যন্ত্রণায় কাবু হয়ে পড়তেন। চিকিৎসা করাতে গিয়ে জানা যায়, এর কারণ প্যাংক্রিয়াটাইটিস। আরও জানা যায়, রোগিণীর রক্তে ক্যালসিয়ামের মাত্রাও বিপজ্জনক। তাঁর পরিবার দ্বারস্থ হয় এসএসকেএমের। জানা যায়, প্রিয়া বিশ্বাস নামে বছর ঊনত্রিশের ওই তরুণীর প্যারাথাইরয়েড গ্রন্থিতে তিন সেন্টিমিটার আয়তনের টিউমার আছে। তার জন্যই অতিরিক্ত প্যারাথাইরয়েড হরমোন নিঃসরণ হচ্ছিল। সেই হরমোন হাড়ের ক্যালসিয়াম রক্তে মিশিয়ে দিচ্ছিল। ফলে হাড় ভঙ্গুর হয়ে যাচ্ছিল। এতে অন্তঃসত্ত্বা এবং গর্ভস্থ শিশুর শারীরিক সমস্যা হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যাচ্ছিল।
এসএসকেএমের এন্ডোক্রিনোলজি বিভাগের প্রধান চিকিৎসক সতীনাথ মুখোপাধ্যায় কিছু দিন ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা করলেও সাড়া মেলেনি। তার পরে তরুণীর অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত হয়। সতীনাথ মুখোপাধ্যায়, শল্য চিকিৎসক দীপ্তেন্দ্র সরকার, স্ত্রীরোগ চিকিৎসক সুভাষ বিশ্বাসের নেতৃত্বে একটি চিকিৎসক দলের পর্যবেক্ষণে থাকেন প্রিয়া। সারভাইক্যাল ব্লক করে ১৫ মিনিটে টিউমার বার করা হয় প্রায় আড়াই মাস আগে। এর পরেই নিয়ন্ত্রণে আসে প্যারাথাইরয়েড হরমোন এবং ক্যালসিয়ামের মাত্রা।
অস্ত্রোপচার পরবর্তী আড়াই মাস ধরে মা এবং গর্ভস্থ শিশুকে সুস্থ রাখার পর্ব চলে। এসএসকেএম হাসপাতালের স্ত্রীরোগ বিভাগের চিকিৎসক সুভাষ বিশ্বাস বলেন, “গত আড়াই মাস ওই রোগীকে নিয়মিত বিশেষ পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছিল। ক্যালসিয়াম এবং রক্তচাপের ওঠানামা বুঝে ওষুধ দিয়েছিলাম। সময়ের আগেই যাতে প্রসবযন্ত্রণা না হয়, তার জন্য এবং গর্ভস্থ শিশুর বৃদ্ধির জন্যও ওষুধ দেওয়া হয়েছে।”
সদ্যোজাতকে আগামী ৭২ ঘণ্টা নিয়োনেটাল ইন্টেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (নিকু) রাখা হবে বলে হাসপাতাল জানিয়েছে। মায়ের অসুস্থতার প্রভাব শিশুর শরীরে পড়েছে কি না, তা বুঝতেই এই পর্যবেক্ষণ।
সদ্যোজাতের বাবা সৌম্য বিশ্বাস বলেন, “প্রিয়া ও আমি, দু’জনেই ডাক্তারবাবুদের সমস্ত কথা শুনে চলেছি। ওঁদের পরিশ্রম, বড়দের আশীর্বাদ আর আমাদের অধ্যবসায়ের মিলিত প্রচেষ্টায় আজকের এই
আনন্দ-মুহূর্ত।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy