কলকাতা পুরসভা। —ফাইল চিত্র।
গত ৫ মার্চ কলকাতা পুরসভার সদর দফতরে ট্রেজ়ারি বিভাগে ছ’ফুট লম্বা একটি দাঁড়াশ সাপ মেরে ফেলার অভিযোগে বন দফতর আগেই তদন্ত শুরু করেছে। কিন্তু ওই ঘটনায় পুর কমিশনার ধবল জৈন বন দফতরে যে রিপোর্ট পাঠিয়েছেন, তাতে তাজ্জব বনে গিয়েছেন দফতরের আধিকারিকেরা। ওই রিপোর্টে পুর কমিশনার স্পষ্ট লিখেছেন, ‘ট্রেজ়ারি বিভাগে সাপ বেরোনোর খবর পাওয়ার পরে কর্মীরা ছুটে গেলে সাপটি পালিয়ে যায়।’ ক্ষুব্ধ বন দফতরের আধিকারিকদের অভিযোগ, পুর কর্তৃপক্ষই এ ভাবে সাপ মেরে ফেলার ঘটনা অস্বীকার করলে তা অত্যন্ত হতাশাজনক। দফতরের এক কর্তা শুক্রবার বলেন, ‘‘সাপটিকে মেরে ফেলার খবর সংবাদপত্রে প্রকাশিত হওয়ার পরে আমরাই স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে তদন্ত শুরু করি। পুর কমিশনারের কাছে ঘটনার রিপোর্ট চাওয়া হলে তিনি অনেক গড়িমসির পরে একটা রিপোর্ট দিয়েছেন ঠিকই। কিন্তু সেখানে সাপটিকে মারার ঘটনা সুকৌশলে এড়িয়ে গিয়েছেন। পরবর্তী পদক্ষেপ করতে আমরা আইনের সহায়তা নিচ্ছি।’’
কলকাতা পুর ভবনে সাপ বেরোনোর ঘটনার পরে তিন সপ্তাহ কেটে গেলেও এখনও সেই আতঙ্ক থেকে পুরোপুরি বেরিয়ে আসতে পারেননি আধিকারিক ও কর্মীরা। বিশেষত, ট্রেজ়ারি বিভাগের কর্মীরা অফিসে ঢুকে চেয়ার-টেবিলের প্রতিটি কোণ ভাল ভাবে পরখ করে তবেই কাজে বসছেন। ট্রেজ়ারি বিভাগে যাঁর ঘরে সাপ ঢুকেছিল, সেই কোষাধ্যক্ষ সুস্মিতা কুণ্ডু বলেন, ‘‘সাপ আর ইঁদুরের ভয়ে সব সময়ে তটস্থ হয়ে থাকতে হয়। একেই তো ইঁদুরের ভয়ে বেশির ভাগ সময় চেয়ারে পা তুলে বসি। এ ভাবে একটানা বসে থাকতে থাকতে ব্যথা করায় পা নামালেও মাঝেমধ্যে ঝুঁকে আশপাশে দেখতে হয়, ইঁদুর আসছে কি না।’’
ট্রেজ়ারি বিভাগ ছাড়াও পুরসভার অন্যান্য বিভাগে ইঁদুরের উৎপাত এতটাই বেড়েছে যে, আতঙ্কে রয়েছেন খোদ নবাগত পুরসচিব স্বপন কুণ্ডু। তাঁর কথায়, ‘‘ইঁদুর নিধনের কৌশল খুঁজে বার করা মুশকিল। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশ মেনে তো আমরা ইঁদুর মেরে ফেলতেও পারব না। ইঁদুরের উৎপাত সত্যিই বড় মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।’’
পুরসভা সূত্রের খবর, একাধিক দফতরে থাকা ধেড়ে ইঁদুর কম্পিউটারের তার কেটে দেওয়ায় কর্মীরা খুবই মুশকিলে পড়েছেন। মেয়রের অফিসের দোতলায় ‘সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীকে ফোন’-এর বিভাগে জনা তিনেক মহিলা সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কাজ করছেন। তাঁরা জানাচ্ছেন, কয়েক মাস আগে কম্পিউটারের তার কেটে দিয়েছিল ইঁদুর। সেই সময়ে ভাল রকমের ভোগান্তি পোহাতে হয়েছিল। তার পরেও ইঁদুর-বাহিনীর অত্যাচার বন্ধ হয়নি। বরং, মাথার উপরে ফল্স সিলিংয়ে ইঁদুরের অবাধ আনাগোনার শব্দে পুরকর্মীরা আতঙ্কিত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy