প্রতীকী ছবি
আদালতে বিচারকের কাছে গোপন জবানবন্দি দেওয়ার আগে সাক্ষীর করোনা পরীক্ষা তো করাতে হবেই, পাশাপাশি, যে পুলিশ কনস্টেবল ওই সাক্ষীকে পাহারা দিয়ে নিয়ে আসবেন, তাঁরও করোনা পরীক্ষা করাতে হবে।
ডোমজুড় থানার একটি মামলায় গত ২৪ জুলাই হাওড়া জেলা আদালতের বিচারক এই নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, গোপন জবানবন্দির ক্ষেত্রে সাক্ষী ও পুলিশকর্মী— দু’জনেরই করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ হতে হবে। তবেই আগামী ৫ অগস্ট আদালতে হাজিরা দিতে পারবেন তাঁরা।
করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে শিয়ালদহ আদালত আগেই এমন নির্দেশ দিয়েছিল। আলিপুর আদালতও একই পথে হেঁটেছে। তবে কলকাতার দুই আদালতই গোপন জবানবন্দির ক্ষেত্রে শুধু সাক্ষীর করোনা পরীক্ষা করানোর কথা বলেছিল। সঙ্গে থাকা পুলিশকর্মীর কথা বলেনি।
হাওড়া আদালতের ওই নির্দেশ পুলিশ মহলে শোরগোল ফেলে দিয়েছে। কলকাতার পূর্ব ডিভিশনের এক আধিকারিক আদালতের ওই নির্দেশিকার উল্লেখ করে বলেন, ‘‘সবাই ঘরবন্দি থাকলেও আমাদের থানায় গিয়ে সব কাজই করতে হচ্ছে। এই নির্দেশ শোনার পরে এখন তো চোর ধরতেও ভয় হচ্ছে। মনে হচ্ছে, যে চোরকে ধরতে যাব, সে আবার করোনায় আক্রান্ত নয় তো?’’ ডোমজুড় থানার এক আধিকারিক শুক্রবারের ওই নির্দেশ সম্পর্কে বলেন, ‘‘আদালতের রায় তো আমাদের মেনে চলতেই হবে!”
উত্তর কলকাতার চিৎপুর থানা এলাকার দু’টি ঘটনায় সম্প্রতি শিয়ালদহ আদালতে গোপন জবানবন্দি নেওয়ার প্রয়োজন হয়। তার জন্য সাক্ষীকে করোনা পরীক্ষা করিয়ে আনতে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। শিয়ালদহ আদালতের মুখ্য সরকারি আইনজীবী অরূপ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘এখানে গোপন জবানবন্দি দেওয়াতে হলে সাক্ষীদের করোনা পরীক্ষা করিয়ে আনতে হবে। আদালত সম্প্রতি এই নির্দেশ দিয়েছে।’’ তিনি জানান, এই সময়ে পুলিশের কাজ অনেক বেড়েছে। করোনা-যোদ্ধা হিসেবেও তাদের সামনের সারিতে থেকে কাজ করতে হচ্ছে। গোপন জবানবন্দির জন্য করোনা পরীক্ষা করানোটা পুলিশের কাছে বাড়তি বোঝা। এর উপরে সঙ্গে থাকা পুলিশকর্মীকেও যদি করোনা পরীক্ষা করাতে হয়, তা হলে তা আরও চাপের।’’
আইনজীবী জয়ন্তনারায়ণ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এখন পুলিশ যদি বলে, চোর ধরার আগে তার কোভিড পরীক্ষা করাতে হবে? এর ফলে অহেতুক ভীতি ছড়িয়ে পড়ছে।’’ তাঁর মতে, ‘‘গোপন জবানবন্দির সময়ে সাক্ষীকে ম্যাজিস্ট্রেটের সংস্পর্শে আসতে হয় না। এ ক্ষেত্রে একটা ঘরে দু’জনে দু’টি মাইক ব্যবহার করতে পারেন।’’
আলিপুর আদালতে একাধিক বিচারক করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন আগেই। করোনা-আতঙ্কে আদালত বন্ধও ছিল। সেখানকার মুখ্য সরকারি কৌঁসুলি শুভেন্দু ঘোষ বলেন, ‘‘আমাদের এখানে বেশ কয়েক জন বিচারক করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। সেই উদ্বেগের কথা মাথায় রেখেই হয়তো সাক্ষীর গোপন জবানবন্দি (১৬৪) নেওয়ার আগে বিচারক তাঁর করোনা পরীক্ষা করানোর কথা বলেছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy