ফাইল চিত্র।
গত বছর আদালত নির্দেশ দেওয়া সত্ত্বেও ভিড় জমেছিল শহরের বেশ কয়েকটি পুজো মণ্ডপে। বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছিল কয়েক জন পুজোকর্তার বিরুদ্ধেও। এ বছর উৎসবের মরসুমে ভিড় এড়ানোর ব্যবস্থা করতে রাজ্যগুলিকে আগেই চিঠি দিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। বর্তমানে তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা যখন চোখ রাঙাচ্ছে, তখন পুজোর জমায়েত নিয়ে আতঙ্কিত অনেকেই।
বৃহস্পতিবার নবান্নে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘উৎসবের মরসুমের জন্য গত বছর আমরা একটা বিস্তারিত প্রোটোকল-প্রস্তাব করেছিলাম এবং সরকার তা সযত্নে কার্যকর করেছিল। কলকাতা হাইকোর্টও এ ব্যাপারে নির্দেশ দিয়েছিল। সুতরাং এটা আমরা আবারও করব। এখনও সেটা করা হয়নি। এখনকার অবস্থা, অর্থাৎ তৃতীয় ঢেউ আসার আশঙ্কায় যে সমস্যাগুলি হতে পারে, তা মোকাবিলার জন্য আলোচনা হয়েছে।’’
দুর্গাপুজোর মাস দুয়েক বাকি থাকলেও করোনার বিপদ কাটেনি এখনও। দ্বিতীয় ঢেউ দুর্বল হয়ে পড়লেও তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কার কথা শুনিয়ে রেখেছেন চিকিৎসকদের একাংশ। তা সত্ত্বেও শহরের অধিকাংশ পুজো কমিটি পুজোর প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। পুজোকর্তাদের অনেকেই মনে করেন, প্রতিষেধক নিয়ে কোভিড-বিধি মেনে মণ্ডপে ভিড় জমালে বিপদের আশঙ্কা বিশেষ নেই। গত বছর পুজোর প্রস্তুতির শেষ লগ্নে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে একাধিক বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়। দর্শকশূন্য মণ্ডপ রাখার নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট।
উদ্যোক্তাদের একাংশের অবশ্য যুক্তি, দুর্গাপুজোর সঙ্গে অনেকের রুজি-রুটি জড়িত। ফলে কোভিড-বিধি মেনে পুজো করার পক্ষে অনেকেই। ‘ফোরাম ফর দুর্গোৎসব’-এর উদ্যোগে পুজো কমিটিগুলি বৈঠকে বসেছিল। সেখানে কিছু নিয়ম মেনে পুজো করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ফোরামের সাধারণ সম্পাদক তথা হাতিবাগান সর্বজনীনের কর্তা শাশ্বত বসু বললেন, ‘‘ফোরামের তরফে ক্লাবকর্তা থেকে পুরোহিত বা মণ্ডপ শিল্পী— সকলের প্রতিষেধক নেওয়ায় জোর দেওয়া হয়েছে। পুজোর সঙ্গে অনেকেরই জীবিকা জড়িত। তাই সমস্ত বিধি মেনে, প্রতিষেধক নিয়ে দুর্গাপুজো করা উচিত।’’ কিন্তু এখানেই উঠছে প্রশ্ন। গত বছর বিধিভঙ্গের যে ছবি ধরা পড়েছিল, তার পুনরাবৃত্তি হবে না তো?
ত্রিধারার উদ্যোক্তা, তৃণমূল নেতা দেবাশিস কুমার বললেন, ‘‘এ বছর আমাদের পুজো আছে, উৎসব নেই। বাজেটে কাটছাঁট করেছি। হাইকোর্ট যে নির্দেশ দিয়েছিল, তা মাথায় রেখেই প্রস্তুতি নিচ্ছি।’’ গৌরীবেড়িয়া সর্বজনীনের তরফে মান্টা মিশ্র বলেন, ‘‘মাঠের বাইরে থেকে ঠাকুর দেখার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। খোলামেলা মণ্ডপ হবে।’’ কুমোরটুলি পার্কের কোষাধ্যক্ষ সমরেশ সাহা বলেন, ‘‘কোনও মতে পুজো সারব। আড়ম্বরের প্রশ্নই নেই।’’
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, চিকিৎসক অনির্বাণ দলুইয়ের কথায়, ‘‘কোভিডের সময়ে যে কোনও ভিড়ই ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারে। পুজোর বাজারেও বিধিনিষেধ থাকা উচিত। আশা করি, পুজোর উদ্যোক্তারা এমন কোনও সিদ্ধান্ত নেবেন, যার ফলে হাইকোর্টের হস্তক্ষেপ আর দরকার হবে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy