Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪

দেড় কাঠায় ছ’তলা ফ্ল্যাট, পুলিশ-প্রশাসন দর্শক

খাস কলকাতায় বেআইনি নির্মাণ নিয়ে নানা অভিযোগ ওঠে। সেই অভিযোগ আদতে কেমন তা স্পষ্ট করে দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের করা রিজওয়ানের মামলা। এই মামলায় কার্যত স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে, কোনও অনুমোদিত নকশা ছাড়াই বহুতল গজিয়ে উঠছিল।

এই বাড়িটি ঘিরেই মামলা হয় আদালতে। নিজস্ব চিত্র

এই বাড়িটি ঘিরেই মামলা হয় আদালতে। নিজস্ব চিত্র

কুন্তক চট্টোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ০৬ মার্চ ২০১৮ ০২:৪৫
Share: Save:

মাত্র দেড় কাঠা জমি। তাতেই তৈরি হচ্ছে ছ’তলা ফ্ল্যাটবাড়ি। তাও কোনও খোলামেলা জায়গায় নয়, মধ্য কলকাতার পাটোয়ার বাগানের ঘিঞ্জি গলিতে। পুলিশ-প্রশাসনের নাকের ডগায় কী ভাবে এমন বহুতল তৈরি হতে পারে সেই প্রশ্ন তুলেই আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন মহম্মদ রিজওয়ান নামে ওই এলাকার এক বাসিন্দা।

খাস কলকাতায় বেআইনি নির্মাণ নিয়ে নানা অভিযোগ ওঠে। সেই অভিযোগ আদতে কেমন তা স্পষ্ট করে দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের করা রিজওয়ানের মামলা। এই মামলায় কার্যত স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে, কোনও অনুমোদিত নকশা ছাড়াই বহুতল গজিয়ে উঠছিল।

রিজওয়ান অবশ্য এ নিয়ে দীর্ঘ দিন আমহার্স্ট স্ট্রিট থানা, লালবাজার এবং পুরসভার বিভিন্ন জায়গায় দরবার করেছেন। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। তবে হাইকোর্টে গিয়ে পুরসভার কৌঁসুলি কার্যত স্বীকার করে নিয়েছেন, ওই নির্মাণটি বেআইনি। এর ভিত্তিতে গত ২২ ডিসেম্বর পুর-কর্তৃপক্ষকে নোটিস জারি করে চার মাসের মধ্যে বেআইনি নির্মাণ ভাঙতে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি শহিদুল্লা মুন্সি। কিন্তু এখনও ভাঙার কাজ শুরু হয়নি।

রিজওয়ানের আইনজীবী পৌষালি বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে পুরসভার বিল্ডিং দফতরের স্পেশ্যাল অফিসারের কাছে একটি শুনানি বাকি। সেই শুনানিতে প্রথম দিন ওই ফ্ল্যাটের প্রোমোটারদের তরফে কেউ হাজির হননি। পরবর্তী শুনানিতেও হাজিরা না হলে পুরসভা ভাঙার কাজ শুরু করতে পারে। পুরসভার একটি সূত্রের দাবি, শুধু পাটোয়ার বাগান নয়, কড়েয়া, বন্দর এলাকা-সহ শহরের বিভিন্ন প্রান্তে এমন অবৈধ নির্মাণ চলছে। সব জানা সত্ত্বেও ‘রহস্যজনক’ ভাবে পুলিশ ও পুর-প্রশাসনের একাংশ চুপ করে থাকেন। তবে ইদানীং কিছু ক্ষেত্রে পুরসভা অভিযোগ দায়ের করছে। কিন্তু মোট অবৈধ নির্মাণের তুলনায় তা নামমাত্র বলেও ওই সূত্রের দাবি।

নির্মাণ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ভাবে নির্মাণ হতে থাকলে নাগরিকদের বিপদ বা়ড়বে। নারকেলডাঙা, রাজাবাজার এলাকায় বহুতল ভেঙে মৃত্যুর ঘটনাও বিরল নয়। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্টের একটি রিপোর্ট বলছে, এই ধরনের অবৈধ নির্মাণ বিপর্যয়ের রাস্তা প্রশস্ত করে। এই ধরনের নির্মাণের পিছনে দুর্নীতি যে দায়ী তারও উল্লেখ রয়েছে রিপোর্টে। এই প্রসঙ্গে ঠানের একটি ঘটনা উল্লেখযোগ্য। সেখানে এমন একটি বাড়ি ভেঙে ৭২ জনের মৃত্যুর ঘটনার পর ডেপুটি পুর কমিশনার-সহ একাধিক অফিসারকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। কলকাতায় বাড়ি ভাঙলেও সাম্প্রতিক অতীতে তা নিয়ে বেশি নাড়াঘাটা হয়নি।

তা হলে বড় বিপদ না হলে অবৈধ নির্মাণ নিয়ে টনক নড়বে না প্রশাসনের?

অন্য বিষয়গুলি:

Patwar Bagan illegal construction Case filed
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy