পরিজনদের চিন্তা দূর করলেন চিকিৎসকেরা। প্রতীকী ছবি।
গলা কেটে ক্যানসারের অস্ত্রোপচার করলে বড় দাগ থেকে যাবে। মেয়ের গলায় সেই চিহ্ন রাখতে নারাজ ছিলেন পেশায় ভাগচাষি বাবা। এ দিকে অস্ত্রোপচারেরও প্রয়োজন। শেষে রোবোটিক সার্জারির মাধ্যমে পরিজনদের চিন্তা দূর করলেন চিকিৎসকেরা। বগলে ও বুকে মাত্র চারটি ফুটো করেই বার করে আনা হল ক্যানসারে আক্রান্ত থাইরয়েড গ্রন্থি।
মুর্শিদাবাদের ঔরঙ্গাবাদের বাসিন্দা জিয়ারুল হকের বড় মেয়ে সোহিনা খাতুনের কয়েক মাস ধরেই গলা ফুলছিল। নবম শ্রেণির পড়ুয়া সোহিনার এমন অবস্থা দেখে মাস দুই আগে তাকে স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান বাবা-মা। পরীক্ষায় জানা যায়, থাইরয়েড গ্রন্থিতে সমস্যা রয়েছে। এর পরে বাইপাসের একটি বেসরকারি হাসপাতালের ‘হেড অ্যান্ড নেক’ ক্যানসার বিভাগে ১৪ বছরের মেয়েকে নিয়ে আসেন জিয়ারুল। পরীক্ষায় ধরা পড়ে, থাইরয়েড গ্রন্থির মধ্যে টিউমার হয়েছে। তখনই ক্যানসারে আক্রান্ত ওই কিশোরীর অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেন ডাক্তারেরা। জিয়ারুল বলেন, ‘‘গলা কেটে অস্ত্রোপচারে দাগ থেকে যাবে, বলেছিলেন ডাক্তারবাবুরা। এমন দাগ থাকলে ভবিষ্যতে সমস্যা হতে পারে ভেবে রাজি হইনি। কিন্তু অস্ত্রোপচারও দরকার ছিল। তখনই রোবোটিক সার্জারির কথা জানানো হয়।’’ তিনি জানান, আধুনিক পদ্ধতির ওই অস্ত্রোপচারের খরচ প্রায় আড়াই লক্ষ টাকা। যা শুনে চিন্তায় পড়েন জিয়ারুল।
তাঁর কথায়, ‘‘শেষে ডাক্তারবাবুকে চিঠি লিখে জানাই, গলায় দাগ থাকলে সমস্যা হবে। কিন্তু আমি এত টাকাও দিতে পারব না। জমানো কিছু টাকা আর পরিচিতদের থেকে সাহায্য নিয়ে ৭৫ হাজার মতো জোগাড় করতে পারব বলে জানাই।’’ তিনি জানান, তাতেই রাজি হন চিকিৎসকেরা। সম্প্রতি সোহিনার রোবোটিক সার্জারি করা হয়। মেডিকা সুপারস্পেশ্যালিটি হাসপাতালের ‘হেড অ্যান্ড নেক সার্জারি’র চিকিৎসক সৌরভ দত্ত বললেন, ‘‘ওই কিশোরীর থাইরয়েড গ্রন্থির মাঝে ছিল টিউমারটি। নিয়ম হচ্ছে, পুরো গ্রন্থি কেটে বাদ দিতে হয়। গলা কেটে অস্ত্রোপচারে বড় দাগ থেকে যায়। পরে গলার স্বরেও পরিবর্তন আসতে পারে।’’ তিনি জানান, রোবোটিক অস্ত্রোপচারে বগল ও বুকে চারটি ছোট ফুটো করে ভিতরে যন্ত্র প্রবেশ করানো হয়। তারই মাধ্যমে পুরো থাইরয়েড গ্রন্থিটি কেটে বার করা হয়েছে। অস্ত্রোপচারের দলে তাঁর সঙ্গে ‘হেড অ্যান্ড নেক সার্জারি’র চিকিৎসক হর্ষ ধর, দিল্লি থেকে আসা চিকিৎসক সুরেন্দ্র দাবাসও ছিলেন। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, মেয়েদের মধ্যে থাইরয়েড ক্যানসারের সমস্যাও বর্তমানে ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy