কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। —ফাইল চিত্র।
জাতীয় শিক্ষানীতি অনুসারী স্নাতক স্তরের পরীক্ষা পদ্ধতি নিয়ে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ বিভিন্ন কলেজের অধ্যক্ষদের তরফেএকাধিক আপত্তি উঠছে। পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখতে এ বার ‘এগজাম রিফর্ম কমিটি’ গঠন করলেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। প্রসঙ্গত, জাতীয় শিক্ষানীতি অনুযায়ী, স্নাতক স্তরের পরীক্ষা সামগ্রিক ভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকলেও তার খানিকটা অংশ নিতে হচ্ছে কলেজগুলিকে। তার সঙ্গে রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত পরীক্ষা। এর ফলে দেখা যাচ্ছে,কলেজগুলিতে পঠনপাঠনের সময় অনেকটাই কমে যাচ্ছে। তার পাশাপাশি, খাতা দেখা এবং প্রতিটি বিষয়ের খাতা প্রধান পরীক্ষকদের কাছে পাঠাতেও ব্যয় হচ্ছে অনেক সময়। এই কাজ শিক্ষকদের তো বটেই, এমনকি কখনও কখনও অধ্যক্ষদেরও করতে হচ্ছে। সব মিলিয়ে, কলেজের পঠনপাঠন এবং প্রশাসনিক কাজ বিঘ্নিত হচ্ছে। শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীর অপ্রতুলতা থাকায় বিষয়টি আরও প্রকট হয়েছে।
এই নিয়ে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ প্রায় ৫২টি কলেজের অধ্যক্ষেরা অন্তর্বর্তীউপাচার্য শান্তা দত্ত দে-কে চিঠি লিখেছিলেন। এর সঙ্গে পরীক্ষা নেওয়ার জন্য পরীক্ষা কেন্দ্র বাড়ানো, পরীক্ষা নেওয়ার ফি বৃদ্ধি, পরীক্ষায় নজরদারের সংখ্যা বাড়ানোর বিষয়টিও ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছিল। গোটা বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শেষ সিন্ডিকেট বৈঠকে আলোচনা হয়।সেখানেই সব কিছু খতিয়ে দেখার জন্য তৈরি করা হয় ‘এগজাম রিফর্ম কমিটি’।
ক্যানিংয়ের বঙ্কিম সর্দার কলেজের অধ্যক্ষ এবং সিন্ডিকেট-সদস্য তিলক চট্টোপাধ্যায় সোমবার জানান, এ ভাবে পরীক্ষা নেওয়াএবং সেই খাতা দেখে প্রধান পরীক্ষকদের কাছে পৌঁছে দিতে গিয়ে কলেজের পঠনপাঠন ভীষণ ভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। বিষয়টিখরচসাপেক্ষও। কলেজে বহু বিষয় থাকে। এত বিষয়ের খাতা গিয়ে গিয়ে জমা দেওয়া কার্যত অসম্ভব হয়ে দাঁড়াচ্ছে। বিষয়টির ব্যাখ্যা দিয়ে তিলক বলেন, ‘‘এমনওহচ্ছে, কোনও শিক্ষককে নির্দিষ্ট কোনও বিষয়ের মাত্র পাঁচ বা ছ’টি খাতা প্রায় ৫০ কিলোমিটার যাতায়াত করে প্রধান পরীক্ষকের কাছে পৌঁছে দিতে হচ্ছে।’’ তিনি জানান, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রযুক্তির সাহায্য নিয়ে এই সমস্যার সমাধান করা যায় কি না, তা নিয়ে ভাবছেন।
মহেশতলা কলেজের অধ্যক্ষা রুম্পা দাস বলেন, ‘‘নতুন নিয়ম অনুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয় সব পরীক্ষা সরাসরি নেয় না। সব খাতা দেখারও দায়িত্বও তারা নিচ্ছে না। কলেজগুলিতে শিক্ষাকর্মীর সংখ্যা এখন এমনিতেই অপ্রতুল। এই পরিস্থিতিতে খাতা দেখার পরে শিক্ষক-শিক্ষিকা, এমনকি কোনও ক্ষেত্রে অধ্যক্ষকেও সেই খাতা প্রধান পরীক্ষককে দিয়ে আসার জন্য যেতে হচ্ছে। এতে কলেজের পঠনপাঠন এবং অন্যান্য প্রশাসনিক কাজেবিঘ্ন ঘটছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy