Advertisement
২২ জানুয়ারি ২০২৫
Aishe Ghosh

ঐশীকে ঢুকতেই দেওয়া হল না কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে, বিক্ষোভ গেটের সামনে

গত কাল রাস্তায় দাঁড়িয়েই দুর্গাপুরে সভা করেন ঐশী।

নাগরিক মিছিলে ঐশী। —নিজস্ব চিত্র।

নাগরিক মিছিলে ঐশী। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ১৭:৩৫
Share: Save:

দুর্গাপুরে বুধবার তাঁর কর্মসূচি ছিল সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) এবং জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি)-র বিরুদ্ধে মিছিলের। কিন্তু তার অনুমতি দেয়নি পুলিশ। তার ২৪ ঘণ্টা কাটতে না-কাটতে এ বার জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের সভানেত্রী ঐশী ঘোষের সভা আটকাতে বন্ধ করে দেওয়া হল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের দু’টি ফটক।

দুর্গাপুরের ক্ষেত্রে পুলিশ কারণ দেখিয়েছিল, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদযাত্রা। আর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বৃহস্পতিবার জানালেন, বহিরাগত কাউকে প্রতিষ্ঠানের ভিতরে সভা করতে দেওয়াটা ঐতিহ্যের পরিপন্থী।

গত কাল রাস্তায় দাঁড়িয়েই দুর্গাপুরে সভা করেন ঐশী। এ দিনও তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটের বাইরে সভা করলেন। তার পর যোগ দিলেন নাগরিক মিছিলে।

আরও পড়ুন: মুখ্যমন্ত্রীর নাম নেই আমন্ত্রণপত্রে, ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর উদ্বোধন ঘিরে বিতর্ক

বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরের সভা থেকে এ দিন ঐশী আক্রমণ করেছেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের আন্দোলন সিএএ-এনআরসির বিরুদ্ধে। তাতে বাধা দিয়ে আদতে বিজেপি এবং আরএসএসেরই সুবিধা করে দেওয়া হচ্ছে।’’

এ দিন ঐশীকে নিয়ে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ স্ট্রিট ক্যাম্পাসে সভা করার পরিকল্পনা ছিল বাম ছাত্র সংগঠন এসএফআইয়ের। এর আগে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে তাদের সভা করার অনুমতি দেওয়া হয়নি। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও যে অনুমতি দেবেন না, আগেই তা আঁচ করা গিয়েছিল। তার পরেও এ দিন সকালে এসএফআইয়ের কর্মী-সমর্থকেরা বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছে সভার প্রস্তুতি শুরু করে দেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া, অধ্যাপক এবং কর্মীদেরও তাতে অংশ নিতে বলা হয়। কিন্তু তাতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ রাজি হননি। বরং বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্দরে যাতে এ ধরনের কোনও সভা না হয়, তার জন্য দুটো ফটকই বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হতে দেখে সেখানে পুলিশও এসে পৌঁছয়। কোনও ধরনের অশান্তি যাতে দানা বাঁধতে না পারে, সে দিকে কড়া নজর রাখা হয়।

এমন পরিস্থিতিতে গেট ঠেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতরে আর ঢুকতে পারেনি এসএফআই। তাই শেষমেশ গেটের সামনেই সভা করার সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা। সেখানেই বক্তৃতা করেন ঐশী। তিনি বলেন, ‘‘কোন কর্মসূচিতে অনুমতি দেওয়া হবে, আর কোনটায় দেওয়া হবে না, তা আগে ঠিক করতে হবে রাজ্য সরকারকে। আমরা বিজেপির বিরুদ্ধে আন্দোলন করছি, আমাদের কেন আটকানো হচ্ছে?’’

আরও পড়ুন: অনেক ‘প্রথম’-এর সাক্ষী, দেখে নিন কী কী থাকছে ইস্ট ওয়েস্ট মেট্রোয়

ওই সভা থেকে বিজেপি এবং আরএসএসকে একহাত নিয়ে ঐশী বলেন, ‘‘আসলে প্রতিবাদে ভয় পাচ্ছে আরএসএস-বিজেপি। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ে তর্ক-বিতর্ক বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। সরকারের বিরুদ্ধে মুখ খুললই বন্দি করা হচ্ছে। কিন্তু বাংলায় এ সব চলবে না। ধর্মের নামে বাংলাকে কখনও ভাগ হতে দিইনি আমরা, আর কখনও দেবও না। আরএসএস-এর রাজনীতি মানি না আমরা। একজোট হয়ে ওদের বিরুদ্ধে লড়তে হবে।’’

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে সভা শেষের পর কলেজ স্ট্রিট থেকে নাগরিক মিছিলেও যোগ দেন ঐশী। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্দরে ঐশীকে সভা করতে না দেওয়া নিয়ে অন্য সুর তৃণমূল ছাত্র পরিষদের গলায়। তাদের দাবি, সভার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে অনুমতিই চায়নি এসএফআই। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সহ-সভাপতি মণিশঙ্কর মণ্ডল বিশ্ববিদ্যালয়ের গেট বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্তকে সমর্থন করেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘কোনও বহিরাগতকে নিয়ে এসে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করা চলবে না। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তাকে আমরা পুরোপুরি সমর্থন করছি।’’ মণিশঙ্কর আরও বলেন, ‘‘জেএনইউতে বহিরাগতরা ঢুকে যে তাণ্ডব চালিয়েছিল, ঐশী ঘোষরাই তো তার বিরোধিতা করছিলেন। এখন তা হলে তিনি নিজে কেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকতে চাইছেন? তিনি তো এই বিশ্ববিদ্যালয়ে বহিরাগত ছাড়া আর কিছু নন।’’

তৃণমূল ছাত্র পরিষদের অভিযোগ, বহিরাগতদের নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে ঢুকে এসএফআই যা করার পরিকল্পনা করেছিল, তাতে অশান্তি হওয়ার আশঙ্কা ছিল। মণিশঙ্করের কথায়, ‘‘ছাত্রছাত্রী, অধ্যাপক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মীদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারত। তাই গেট বন্ধ করে দিয়ে ঐশী ঘোষদের আটকানোর সিদ্ধান্ত একেবারেই সঠিক।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Aishe Ghosh CAA SFI CPM University of Calcutta JNU
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy