কলকাতা হাই কোর্ট ফাইল চিত্র
‘ভোট পরবর্তী হিংসা’ নিয়ে রাজ্য সরকারের সমালোচনা করল কলকাতা হাই কোর্ট। আদালত নির্দেশ দিয়েছে, কেন্দ্রের মানবাধিকার কমিশন রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা ঘুরে দেখবে। তাদের সাহায্য করবে রাজ্য মানবাধিকার কমিশন। শুক্রবার মামলার শুনানিতে হাই কোর্টের পর্যবেক্ষণ, ‘‘ভোট পরবর্তী হিংসার কথা স্বীকার করেনি রাজ্য সরকার। কিন্তু আমাদের কাছে যে অভিযোগ জমা পড়েছে, তাতে ভোট পরবর্তী হিংসার প্রমাণ মিলেছে। ঘরছাড়াদের ঘরে ফেরাতে যে কমিটি গঠন করা হয়েছিল, তাতে রাজ্য ও কেন্দ্রের মানবাধিকার কমিশন ও রাজ্য লিগ্যাল সার্ভিসের প্রতিনিধিরা ছিলেন। কিন্তু কেন্দ্রের মানবাধিকার কমিশন প্রয়োজনীয় সাহায্য পায়নি রাজ্যের থেকে। তাদের সঙ্গে অসহযোগিতা করা হয়েছে।’’
শুক্রবার মামলার শুনানিতে আদালত নির্দেশ দেয়, কেন্দ্রের মানবাধিকার কমিশন রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা ঘুরে দেখবে। তাদের সাহায্য করবে রাজ্য মানবাধিকার কমিশন। সহযোগিতা না পেলে রাজ্যকে দায় নিতে হবে। কেন্দ্রীয় মানবাধিকার কমিশন আদালতে রিপোর্ট জমা দেবে। এই নির্দেশ না মানলে আদালত অবমাননার দায়ে পড়তে হবে রাজ্যকে।
ভোট-পরবর্তী হিংসার কারণে রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় অনেক মানুষ ঘরছাড়া। এই অভিযোগ তুলে কলকাতা হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয়। শুক্রবার সেই মামলার শুনানি হয় হাই কোর্টের ৫ বিচারপতির বেঞ্চে। প্রাথমিক ভাবে বিচারপতিরা মনে করেছেন, স্বাধীন ভাবে সবার বাঁচার অধিকার রয়েছে। সন্ত্রাসের কারণে কারও নিজের ঘরে ঢুকতে না পারার ঘটনা কাম্য নয়। তাই ওই ঘরছাড়াদের আগে ঘরে ফেরানোর ব্যবস্থা করতে হবে প্রশাসনকে। অশান্তির মামলায় ৩ সদস্যের কমিটি গঠন করে বেঞ্চ। ওই কমিটিতে রয়েছেন রাজ্য ও কেন্দ্রের মানবাধিকার কমিশনের ২ সদস্য এবং রাজ্য লিগ্যাল সার্ভিস কমিটির ১ সদস্য। তাঁরাই এই বিষয়টির উপর নজরদারি করেছেন। পুলিশ কমিটিকে সমস্ত রকম সাহায্য করবে বলে আদালত নির্দেশ দিয়েছিল।
‘হিংসা’র কারণে যাঁরা ঘরে ফিরতে পারেননি, রাজ্য লিগ্যাল সার্ভিস কর্তৃপক্ষের কাছে তাঁরা অভিযোগ ইতিমধ্যেই জানিয়েছেন। ভবিষ্যতেও জানাতে পারবেন। ইমেলের মাধ্যমেও ওই অভিযোগ জানানো যাবে। কত সংখ্যক অভিযোগ জমা পড়ল, সেই তালিকা আদালতকে জানাতে হবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে। জানা গিয়েছে, এখনও পর্যন্ত ৩ হাজার ২৪৩টি অভিযোগ জমা পড়েছে।
অভিযোগকারী পক্ষের কৌঁসুলি প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়াল বলেন, ‘‘আজ খুব ভাল নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট। আমরা বারবার ভোট পরবর্তী হিংসার কথা বলছিলাম। রাজ্য বলেছিল কোনও হিংসার ঘটনা ঘটেনি। আজকে আমাদের কথা প্রমাণ হল। রাজ্য লিগ্যাল সার্ভিস ৩ হাজারের বেশি অভিযোগের কথা জানিয়েছে। আমি আরও হিংসার অভিযোগ নিয়ে অতিরিক্ত হলফনামা জমা দিয়েছি। পুলিশ সাদা কাগজে অভিযোগকারীদের স্বাক্ষর করাচ্ছে, বলিয়ে নেওয়া হচ্ছে কোনও হিংসার ঘটেনা ঘটেনি। শুক্রবার আদালত একটা কমিটি গঠনের কথা বলেছে। এবার কেন্দ্রীয় মানবাধিকার কমিশন রাজ্যে আসবে। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় তারা ঘুরে দেখে অভিযোগের সত্যতা সম্পর্কে আদালতকে রিপোর্ট জমা দেবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy