বিচারপতির মান্থার বিরুদ্ধে সোমবার থেকেই বিক্ষোভ শুরু হয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট চত্বরে। গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।
বেলা গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গেই গন্ডগোল বাড়ছে কলকাতা হাই কোর্ট চত্বরে। মঙ্গলবার সকালেই বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার এজলাস বয়কটের ডাক দিয়েছিলেন বার অ্যাসোসিয়েশনের আইনজীবীদের একাংশ। বেলা বাড়লে অভিযোগ ওঠে, এই আইনজীবীরা অন্য আইনজীবীদেরও ঢুকতে দিচ্ছেন না বিচারপতি মান্থার এজলাসে। বিষয়টি কানে আসতেই নিজের কক্ষের বাইরে পুলিশি নিরাপত্তা বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি। তিনি বলেছেন, তাঁর এজলাসে ঢুকতে যাতে কেউ বাধা না পান, তার ব্যবস্থা করতে হবে হাই কোর্টের ওসিকে।
মঙ্গলবার বিচারপতির এই নির্দেশের পরই তাঁর এজলাসের বাইরে পুলিশের নিরাপত্তা বাড়ানো হয়। আইনজীবীরা ভিতরে প্রবেশ করেন। শুরু হয় বিচার প্রক্রিয়াও। কিন্তু বেশির ভাগ আইনজীবীই উপস্থিত না থাকায় স্বাভাবিক বিচার প্রক্রিয়া এগোয়নি। অধিকাংশ মামলার শুনানি হয় একতরফা। উল্লেখ্য, রাজ্যের বেশ কিছু মামলা এখন বিচারপতি মান্থার এজলাসে বিচারাধীন। এর মধ্যে অনেকগুলি গুরুত্বপূর্ণ মামলাও রয়েছে। সোমবারও বিচারপতি মান্থার এজলাস বয়কট হওয়ায় ৪০০টি মামলার বিচারপ্রক্রিয়া থমকে যায়। কারণ ১০০টি মামলার আইনজীবীই এসে পৌঁছননি বিচারপতির এজলাসে। এর মধ্যে মঙ্গলবার বার অ্যাসোসিয়েশনের আইনজীবীদের প্রস্তাবে বিচারপতি মান্থার বিচারাধীন মামলাগুলি নিয়ে তৈরি হয়ছে অনিশ্চয়তা।
বিচারপতি মান্থার বিরুদ্ধে সোমবার থেকেই বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেছেন হাই কোর্টের আইনজীবীদের একাংশ। এমনকি, বিচারপতি মান্থার বিরুদ্ধে পোস্টারও পড়ে। যার বক্তব্য ছিল, ‘‘বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা আদতে বিচারের নামে কলঙ্ক।’’ এর পরই তাঁর বিরুদ্ধে বার অ্যাসোসিয়েশনের একাংশ বয়কটের ডাক দেয় বলে শোনা গিয়েছিল। মঙ্গলবার সকালে বেশ কিছু আইনজীবী বিচারপতির এজলাসের বাইরে বিক্ষোভও দেখাতে থাকেন। তবে বিচারপতিও চুপ করে থাকেননি। মঙ্গলবার বেলায় হাই কোর্টের ওসিকে তলব করেন তিনি। নির্দেশ দেন তাঁর কক্ষে এবং এজলাসের বাইরে যেন পুলিশি প্রহরা আরও বাড়ানো হয়। কারণ বিচারপতি চান না, তাঁর এজলাসে বিচার চাইতে আসা কাউকে ঢুকতে বাধা দেওয়া হোক। হাই কোর্ট সূত্রে খবর, মঙ্গলবার সকালে এক আইনজীবী, বিচারপতি মান্থার এজলাসে প্রবেশ করার সময় তাঁকে বাধা দেওয়া হয়। তার পরেই বিচারপতি হাই কোর্টের ওসিকে ডেকে বলেন, ‘‘প্রয়োজনে এজলাসের বাইরে ফোর্স বাড়ান। কিন্তু কেউ এজলাসে ঢুকতে চাইলে যেন তাঁকে বাধা দেওয়া না হয়।”
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার সকালে বিচারপতির বিরুদ্ধে এ ধরনের বিক্ষোভকে আদালত অবমাননা বলে দাবি করে প্রধান বিচারপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য-সহ আইনজীবীদের একাংশ। তার জবাবে প্রধান বিচারপতি বলেছিলেন, ‘‘বারের কি কোনও দায়িত্ব নেই? দেশের প্রাচীনতম এই হাই কোর্টের একটা ঐতিহ্য রয়েছে। বারের কি উচিত ছিল না, এ ব্যাপারে দায়িত্ব নেওয়া।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy