শিল্পী তৌসিফ হকের আঁকা এই ছবি ছড়িয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
বড়দিন মানে সুখবর! কিন্তু আদৌ কি কোনও সুখবর বয়ে আনল এ বারের বড়দিন?
ক্রিসমাস ইভের মধ্যরাত থেকে বুধবার সকালের প্রার্থনাসভা, কিংবা জনে জনে বড়দিনের শুভ সম্ভাষণ সেই প্রশ্নটাই যেন উস্কে দিল। এবং তখনই অনিবার্য ভাবে বড়দিনের উৎসবের আবহেও ছায়া ফেলল এ দেশের নতুন নাগরিকত্ব আইন বা নাগরিক পঞ্জি তৈরি নিয়ে বিসম্বাদ।
বেথলেহেমের আস্তাবলে নবজাতকের জন্মের সুখবর পেয়ে তারা চিনে চিনে সেখানে পৌঁছে গিয়েছিলেন প্রাচ্যের তিন প্রাজ্ঞ বৃদ্ধ। কিন্তু এ বার কি সুখবর নিয়ে এল এই বড়দিন? কলকাতা ডায়োসিসের বিশপ পরিতোষ ক্যানিং বুধবার সকালে বেহালার সেন্ট পিটার্স গির্জায় বাংলায় বললেন, ‘‘একটা বিরাট ফ্লাইওভার কিংবা আকাশচুম্বী বহুতল নির্মাণ কি কোনও সুখবর? না, সুখবর নয়। এনআরসি-র তালিকা কি কোনও সুখবর? না, তা-ও নয়!’’ ক্রিসমাস ইভের রাতের প্রার্থনাতেও একই কথা বলেছিলেন তিনি।
অনেকটা একই ভাবে বড়দিনের শুভেচ্ছা বা সঙ্কল্পেও জিশুর বাণীই হয়ে উঠেছে প্রতিবাদের হাতিয়ার। নিউ টেস্টামেন্টের ম্যাথু বা লুকের গসপেলের বাণী উদ্ধৃত করেছেন অনেকে। রাজা হেরোদের রোষে শিশু জিশুর ঘরছাড়া হওয়ার গল্প বলে অনেকেই বাইবেলের উদ্ধৃতি পাঠিয়েছেন শুভেচ্ছায়। তাতে বলা হয়েছে, অচেনা বা অজ্ঞাতপরিচয়কে ভালবাস! প্রভু নিজেও উদ্বাস্তু অবস্থায় অজ্ঞাতকুলশীল ছিলেন।
এ বড়দিনে জিশুর বহুচর্চিত প্রতিবেশীকে নিজের মতো করে ভালবাসার বাণীটিরও গভীরতর তাৎপর্য। সেই বাণীর সূত্রেই কেউ বড়দিনে লিখেছেন, ‘এনআরসি, সিএএ চাই না। চাই না, কোনও পড়শিকে অনুপ্রবেশকারী বলা হোক।’ আবার কোনও মিমে সান্তাক্লজের কাছে আবদারে কেউ বলছেন, ‘আমার বানভাসি হারানো নথি ফিরিয়ে দাও’ বা ‘হে সান্তা, আমার দেশে দিনবদল আনো।’
দিনবদল কী ভাবে আসবে, তার ইঙ্গিতও দিচ্ছে বড়দিনের প্রার্থনাসভাই। এ দিনই বিশপ ক্যানিং বেহালায় বলছিলেন, মানুষের মধ্যে দিয়েই আজও নানা চমৎকার কাণ্ড (মিরাকল) ঘটান স্বয়ং জিশু। বিশপের কথায়, ‘‘এনআরসি নয়। কম পয়সায় হাসপাতালে ওষুধ, বিনা পয়সায় চিকিৎসাই হল জিশুর মিরাকল্। মানুষের মধ্যে দিয়ে এ সব কাজ তিনিই করিয়েছেন। এনআরসি-র জন্য মানুষের ভোগান্তিও জিশু ঠিক দূর করবেন, তাঁর মনোনীত মানুষের
মধ্যে দিয়েই।’’
প্রতিবাদ হয়েছে প্যারডিতেও। বড়দিনের সকাল থেকেই সমাজমাধ্যমে ছড়িয়েছে ‘জিঙ্গল বেল’-এর সুরে ‘এনআরসি বিরোধী গান’। ওই
প্যারডি ভিডিয়োতে রয়েছে নতুন নাগরিকত্ব আইন বা নাগরিক পঞ্জি নিয়ে প্রতিবাদ। ‘‘জিঙ্গল বেল আইটি সেল রক্ষা করে দেশ/ বাঙালি হলেই বুঝবে অনুপ্রবেশ’’ বা ‘‘বাঙালি কাঙালি পাবে প্রীতি উপহার/এনআরসি, সিএএ-র সঙ্গে আনবে এনপিআর’’-এর মতো লাইনে বেঁধা হয়েছে
কেন্দ্রীয় সরকারকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy