ঘটনাস্থলে ভিড়। (ইনসেটে) নিহত দীপক দাস। বুধবার, আমহার্স্ট স্ট্রিটে। নিজস্ব চিত্র।
দিনেদুপুরে জনবহুল এলাকায় এক যুবককে গুলি করে খুনের অভিযোগ উঠল। বুধবার ঘটনাটি ঘটেছে আমহার্স্ট স্ট্রিট থানা এলাকার কেশবচন্দ্র সেন স্ট্রিটে। নিহতের নাম দীপক দাস (৩৫)। পুলিশ সূত্রের খবর, এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে এক জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তবে লালবাজারের তরফে রাত পর্যন্ত গ্রেফতারির কোনও খবর জানানো হয়নি। ঘটনা ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, সম্প্রতি প্রোমোটিংয়ের ব্যবসা শুরু করেছিলেন দীপক। এলাকার একটি আবাসনের নীচে দোকানে তাঁর অফিস ছিল। অভিযোগ, এ দিন বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ সেখানে ঢুকে দীপককে গুলি করে পালায় দুই আততায়ী। পুলিশ জানিয়েছে, তাদের মধ্যে এক জনের নাম রাকেশ দাস। পুলিশের দাবি, অভিযুক্ত রাকেশ দীপকের দূর সম্পর্কের আত্মীয়। যদিও দীপকের বাড়ির লোকের দাবি, রাকেশ তাঁদের আত্মীয় নয়। ঘটনার তদন্তে নেমে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখে এক অভিযুক্তকে আটক করে পুলিশ।
স্থানীয়দের একাংশের দাবি, প্রোমোটারি নিয়ে গোলমাল এবং টাকা-পয়সা সংক্রান্ত বিবাদের জেরেই এই খুন। এক বাসিন্দা সুনীলকুমার দাস বলেন, ‘‘হঠাৎ দেখি, দীপকের দোকান থেকে বেরিয়ে পালাচ্ছে দুই যুবক। আর কয়েক জন ধর, ধর বলে চিৎকার করতে করতে তাদের পিছনে ছুটছেন।’’ বাসিন্দারা জানিয়েছেন, দীপকের শরীরে দু’টি গুলি লাগে। একটি মাথায়, অন্যটি ঘাড়ের কাছে। গুরুতর জখম অবস্থায় তাঁকে প্রথমে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, পরে সেখান থেকে এসএসকেএমে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই সন্ধ্যায় মারা যান ওই যুবক।
ব্যস্ত সময়ে এলাকায় গুলি চলার এমন ঘটনায় আতঙ্কিত বাসিন্দারা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার এক জুতো ব্যবসায়ী বলেন, ‘‘তিন বছর ধরে এখানে ব্যবসা করছি। কখনও এমন ঘটনা ঘটেনি।’’
এই ঘটনায় লেগেছে রাজনীতির রং। রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যের কটাক্ষ, ‘‘বাম জমানায় যাদের দুষ্কর্মে ব্যবহার করা হত, তারা প্রকাশ্যে দলবদল করে এসে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হয়ে গিয়েছেন। ফলে এখন দিনের বেলা গুলি চলাই স্বাভাবিক। সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘রাজ্যে তো বটেই, খাস কলকাতায় আইনশৃঙ্খলার এখন কী হাল, এই ঘটনায় সেটা আরও এক বার স্পষ্ট হয়ে গেল। কলকাতা এবং এই রাজ্য এখন শুট-আউটের কেন্দ্র হয়ে উঠেছে। যখন তখন যে খুশি গুলি চালাচ্ছে। রাজ্যের পক্ষে এটা উদ্বেগজনক।’’ তৃণমূল কংগ্রেস নেতা পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘একটা ঘটনা ঘটেছে। কী হয়েছে, পুলিশ তদন্ত করে দেখছে।’’
ঘটনাস্থলের কাছেই থাকেন দীপকের বাড়ির লোকজন। সেখানে গিয়ে দেখা গেল, পাড়ার ছেলের মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া। দীপকের ভাই চন্দন দাস জানান, কয়েক বছর ধরে তাঁর দাদা এখানে থাকতেন না। তিনি বলেন, ‘‘এখানে থাকাকালীন দীপক চটির ব্যবসা করত। পরে অন্য ব্যবসা শুরু করে।’’ নিহতের এক আত্মীয় শিখা দাস বলেন, ‘‘বিয়ের পরে দীপক নিউ ব্যারাকপুরে থাকত। সম্প্রতি প্রোমোটারির ব্যবসা শুরু করেছিল। ওর একটি ছেলে রয়েছে। নিউ ব্যারাকপুর থেকেই যাতায়াত করত দীপক। কোথা থেকে যে কী হয়ে গেল!’’ পুলিশ জানিয়েছে, তদন্তে সব দিকই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy