এই ক্লাবেই (উপরে) মারধর করা হয় চালের ব্যবসায়ী গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়কে
গত জুন মাসেই এক ব্যক্তিকে একটি ক্লাবে তুলে নিয়ে গিয়ে পিটিয়ে মারার অভিযোগ উঠেছিল মানিকতলায়। এ বার একই ধরনের অভিযোগ উঠল উল্টোডাঙায়। টাকা বকেয়া থাকায় সোমবার এক ব্যবসায়ীকে জোর করে অটোয় তুলে নিয়ে গিয়ে প্রথমে একটি গুদামঘর ও পরে একটি ক্লাবে আটকে রেখে বেধড়ক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। তবে প্রাণে বেঁচে গিয়েছেন ওই ব্যবসায়ী। পুলিশ আসছে বুঝে তাঁকে ফের অটোয় তুলে বাড়ির সামনে নামিয়ে চম্পট দেন অভিযুক্তেরা। রাতেই চার অভিযুক্তের খোঁজে কয়েকটি জায়গায় হানা দেয় পুলিশ। তবে মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হননি।
গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায় নামে ওই চাল ব্যবসায়ী শ্যামবাজারের যতীন মিত্র লেনের বাসিন্দা। মানিকতলা লালাবাগান এলাকার চাল ব্যবসায়ী উত্তম তালুকদার গৌতমবাবুর থেকে ১০ লক্ষ টাকা পেতেন। গৌতমবাবুর দাবি, সম্প্রতি ছ’লক্ষ টাকা মিটিয়েও দিয়েছিলেন তিনি। বাকি টাকা আদায় করতেই সোমবার সকালে ভাইয়ের সঙ্গে গৌতমবাবুর গুদামে হাজির হন উত্তম। গৌতমবাবুকে জোর করে অটোয় তুলে নিয়ে যান তাঁরা। গৌতমবাবুর কথায়, ‘‘অটোয় তুলেই মারধর শুরু করে ওরা। লালাবাগানে উত্তমদের চালের গুদামে নিয়ে গিয়ে আমাকে আটকে রাখে। লোহার রড দিয়ে সেখানেই বেধড়ক মেরেছে।’’
গৌতমবাবুর দাবি, এর পরে বিকেলের দিকে লালাবাগানেরই একটি ক্লাবে নিয়ে গিয়ে তাঁকে আটকে রেখে তাঁর বাড়িতে ফোন করিয়ে দু’লক্ষ টাকা দাবি করা হয়। গৌতমবাবু বলেন, ‘‘ওরা মারধর করে আমাকে বলে, কোনও ভাবেই যেন বোঝা না যায় যে, আমি ভয় পেয়ে আছি। টাকা নিয়ে আমার বাড়ির লোককে শোভাবাজারে আসতে বলা হয়।’’
গৌতমবাবুর দাদা প্রণব বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ফোন পেয়ে বিকেলে তাঁরা উল্টোডাঙা থানায় যান। পুলিশ দেখে, নিখোঁজ ব্যবসায়ীর মোবাইল টাওয়ারের অবস্থান লালাবাগান এলাকায়। দ্রুত সেখানে হানা দেয় উল্টোডাঙা থানার একটি তদন্তকারী দল। তবে পুলিশ আসছে বুঝতে পেরে ওই ব্যবসায়ীকে অটোয় তুলে তাঁর বাড়ির সামনে নামিয়ে দিয়ে চম্পট দেন অভিযুক্তেরা। রাতে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন গৌতমবাবু।
গৌতমবাবুর স্ত্রী শ্রীপর্ণা বলেন, ‘‘শুধু মনে হচ্ছিল, পিটিয়ে মেরে ফেলবে না তো! পুলিশ না গেলে কী হত!’’ ওই এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, থমথমে পরিবেশ। যে ঘরে গৌতমবাবুকে রাখা হয়েছিল, তার পাশের ঘরের বাসিন্দা আরতি ঘোষ বলেন, ‘‘আমাদের কিছুই করার ছিল না। ভদ্রলোককে আটকে রেখে তালা দিয়ে চলে যায় ওরা।’’ অভিযুক্ত ক্লাবের সভাপতি অশোক বক্সী বললেন, ‘‘আমি কাল পাড়ায় ছিলাম না। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, তারা পাড়ারই ছেলে।
গণপিটুনি নিয়ে চার দিকে এত কথা হচ্ছে। তার পরেও ওরা এটা করল কী করে, বুঝে পাচ্ছি না।’’ মঙ্গলবার অভিযুক্ত ব্যবসায়ীর বাড়িতে গেলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy