Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Bowbazar Building Cracked

Students: বাড়ি ছেড়ে হোটেলে প্রস্তুতি দুই পরীক্ষার্থীর

বাড়ি ছাড়ার আগে অ্যাডমিট কার্ড থেকে শুরু করে সমস্ত বইখাতা গুছিয়ে নিয়েছিল সেন্ট জোসেফ কলেজের পড়ুয়া দীপাঞ্জন।

তখনও বাড়িতে বসেই পড়াশোনা চলছিল অংশিকা পাণ্ডের। বৃহস্পতিবার।

তখনও বাড়িতে বসেই পড়াশোনা চলছিল অংশিকা পাণ্ডের। বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র।

আর্যভট্ট খান
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ মে ২০২২ ০৬:৩৭
Share: Save:

বাড়ির দেওয়ালে ফাটল দেখা দিয়েছে নতুন করে। ঘরের ভিতরে বসাটা তাই ঝুঁকির। কিন্তু আজ, শুক্রবারই আইএসসি-র কেমিস্ট্রি পরীক্ষা। তাই ঘর থেকে বেরিয়ে দালানে বসেই বৃহস্পতিবার দুপুরে পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছিল দীপাঞ্জন চৌধুরী। ওই বাড়িরই আর এক আইএসসি পরীক্ষার্থী অংশিকা পাণ্ডে তখন ঘরে পড়াশোনা করছিল। তবে দু’জনেই জানাল, বুধবার রাত থেকে তারা পড়ায় মন বসাতে পারেনি। কেবলই মনে হচ্ছে, মেট্রো কর্তৃপক্ষ তাঁদেরও বাড়ি ছাড়তে বলবেন না তো?

শেষ পর্যন্ত দীপাঞ্জনদের আশঙ্কাই সত্যি হল। বৃহস্পতিবার বিকেলে ওই বাড়ির সবাইকে মেট্রো কর্তৃপক্ষের তরফে বলা হল, বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে হবে হোটেলে। মেট্রোই হোটেলের ব্যবস্থা করে দিয়েছে। বইপত্র গুছিয়ে নিয়ে দীপাঞ্জন আর অংশিকাও পরিবারের সঙ্গে এসে উঠেছে হোটেলে। সেখানেই শুরু করেছে পড়াশোনা। তারা দু’জনেই জানিয়েছে, পরীক্ষা চলছে বলে নতুন পরিবেশে খুব দ্রুত মানিয়ে নিতে হবে। আইএসসি পরীক্ষা চলবে জুন মাস পর্যন্ত। বাকি পরীক্ষাগুলি হয়তো হোটেলে থাকাকালীনই দেবে তারা।

নতুন করে ফাটল দেখা দেওয়ার ঘটনায় সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১৯ নম্বর দুর্গা পিতুরি লেনের বাড়িটি। ওই বাড়ির ঠিক উল্টো দিকেই এক বাই চার দুর্গা পিতুরি লেনের দোতলা বাড়িতে ১৪ ঘর ভাড়াটের বাস। সেই বাড়িতেই থাকত অংশিতা ও দীপাঞ্জন। দীপাঞ্জন বলল, ‘‘কাল রাতে ঘুমোতেই পারিনি। পড়াতেও মন বসছিল না। শুক্রবার কেমিস্ট্রি পরীক্ষা। তার পরেও চারটে পরীক্ষা বাকি থাকবে। এ রকম পরিস্থিতিতে কি আর পরীক্ষা দেওয়া যায়!’’ অংশিকার কাকা রাহুল পাণ্ডে বললেন, ‘‘তড়িঘড়ি সব বইপত্র এবং প্রয়োজনীয় জিনিস গুছিয়ে নিয়ে ঘরছাড়া হতে হল। অংশিকা বার বার দেখে নিচ্ছিল, কিছু ফেলে যাচ্ছে কি না। কারণ, আর যদি ফিরতে না পারে, তা হলে বাকি পরীক্ষাগুলো তো দিতে হবে।’’

এ দিন দুপুরে তখনও বাড়ি ছাড়েনি অংশিকারা। সেন্ট পলস মিশন স্কুলের পড়ুয়া অংশিকা বলল, ‘‘ঘরের ও বারান্দার দেওয়ালে যে ভাবে বড় ফাটল দেখা দিয়েছে, তাতে মানসিক ভাবে প্রস্তুতি নিয়েই রেখেছিলাম যে, বাড়ি হয়তো ছাড়তেই হবে। পরীক্ষার আগে সব এলোমেলো হয়ে গেল। বাড়ি ছাড়লে যা যা নিতে হবে, আগে থেকেই গুছিয়ে নিয়েছিলাম।’’

বাড়ি ছাড়ার আগে অ্যাডমিট কার্ড থেকে শুরু করে সমস্ত বইখাতা গুছিয়ে নিয়েছিল সেন্ট জোসেফ কলেজের পড়ুয়া দীপাঞ্জন। তার কথায়, ‘‘আমার পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য হোটেলে আলাদা একটা ঘর পেয়েছি। মা, বাবা অন্য ঘরে আছে। কিন্তু হোটেলের পরিবেশটা তো বাড়ির মতো নয়। সব সময়ে মন বসছে না।’’

অংশিকা জানায়, তারা হোটেলে দুটো ঘর পেয়েছে। সেখানে আট জনকে থাকতে হচ্ছে। রাতে আর একটি ঘর দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন হোটেল কর্তৃপক্ষ। তার কথায়, ‘‘এই ছোট ঘরে এত জন মিলে রয়েছি। কী ভাবে পড়ায় মন বসাব? এখনও তো সব বই ব্যাগ থেকে বারই করতে পারিনি। বুধবার রাত থেকে পড়াশোনা তেমন হয়নি। কী ভাবে কাল পরীক্ষা দেব, কে জানে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Bowbazar Building Cracked Bowbazar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE