Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪

নতুন করে ঘর ছাড়ার নির্দেশ, ঠাঁইহারা মন্ত্রীও

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বুধবার রাতেই পুলিশ এসে তাঁদের জানায়, বৃহস্পতিবার সকালের মধ্যে ঘর খালি করে দিতে হবে।

বিপদ: গৌর দে লেনে বাসিন্দাদের মধ্যে চলছে আলোচনা। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী

বিপদ: গৌর দে লেনে বাসিন্দাদের মধ্যে চলছে আলোচনা। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০১:২৯
Share: Save:

মেট্রোর কাজের জেরে বিপর্যয়ের ঘটনায় আতঙ্ক পিছু ছাড়ছে না বৌবাজারের বাসিন্দাদের। বৃহস্পতিবারও অনেককে নতুন করে বাড়ি খালি করতে হল। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন খোদ রাজ্যের পরিষদীয় প্রতিমন্ত্রী তাপস রায় ও তাঁর পরিবার। এ দিন অবশ্য নতুন করে কোনও বাড়ি ভেঙে পড়ার ঘটনা ঘটেনি। যদিও গৌর দে লেনের বাসিন্দারা সকাল থেকে ঘর খালি করার নির্দেশ নিয়ে বিক্ষোভ দেখান। এলাকায় সাময়িক ভাবে উত্তেজনাও তৈরি হয়। মেট্রো ও পুলিশের প্রতিনিধিরা তাঁদের সঙ্গে দফায় দফায় কথা বলে বিক্ষোভ সামাল দেন।

১০৫ নম্বর বি বি গাঙ্গুলি স্ট্রিটের বহুতলে তাপসবাবুর ফ্ল্যাট। এ দিন নিজের ফ্ল্যাট থেকে বেরোনোর সময়ে যন্ত্রণার ছাপ দেখা যাচ্ছিল তাঁর চোখেমুখে। স্ত্রী শুভ্রা রায়ের কথায়, ‘‘খুব খারাপ লাগছে। এত দিনের বাসিন্দা আমরা। প্রতিবেশীদের ছেড়ে যেতে মন চাইছে না।’’ যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বাড়ি ফিরতে চান তাঁরা। সেই সঙ্গেই তাঁদের আবেদন, যাঁদের বাড়ি ভেঙে পড়ল, তাঁদের সবাইকেই যেন দ্রুত এলাকায় ফেরানো হয়। তাপসবাবু জানান, ওই আবাসনে ১৩ বছরের বসবাস তাঁদের। ৫৪ বছর ধরে ওই এলাকায় রয়েছেন। ফলে খারাপ তো লাগবেই।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বুধবার রাতেই পুলিশ এসে তাঁদের জানায়, বৃহস্পতিবার সকালের মধ্যে ঘর খালি করে দিতে হবে। গৌর দে লেনেও একই ছবি। যার জেরে আতঙ্ক ছড়ায় এলাকায়। কিন্তু নতুন করে জায়গা খালি করতে বলা হল কেন?

বি বি গাঙ্গুলি স্ট্রিটের ফ্ল্যাট খালি করছেন মন্ত্রী তাপস রায় ও তাঁর পরিবার। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কনস্ট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক পার্থপ্রতিম বিশ্বাসের বক্তব্য, ‘‘ভূগর্ভে পরিস্থিতি এখনও নিয়ন্ত্রণে আসেনি। সে ক্ষেত্রে আরও কিছু বাড়িতে ফাটল দেখা দিলে আতঙ্ক বাড়াটাই স্বাভাবিক। তাই ঝুঁকি না নিয়ে বাড়ি খালি করার পথে হাঁটা হচ্ছে।’’

তাপসবাবু তাঁর স্ত্রী শুভ্রা ও কন্যা সোহিনীকে নিয়ে দুপুরেই সৈয়দ আমির আলি অ্যাভিনিউয়ে বিধায়কদের আবাসনে চলে যান। মন্ত্রীর প্রতিবেশী শ্যামলচন্দ্র কর্মকার জানান, এত কম সময়ের মধ্যে এত দিনের আস্তানা ছেড়ে অন্যত্র ব্যবস্থা করাটা দুরূহ। কিন্তু কিছু করারও ছিল না।

পুনর্বাসনের নিশ্চিত আশ্বাসের দাবিতে এ দিন গৌর দে লেনের বাসিন্দারা বিক্ষোভ দেখান। তাঁদের দাবি, কোনও লিখিত নথি ছাড়া তাঁরা বাড়ি ছেড়ে যাবেন না। দুপুরের দিকে ওই গলিতে যান সিপিএম নেতা মহম্মদ সেলিম, অনাদি সাহু প্রমুখ। মহম্মদ সেলিমের দাবি, অবিলম্বে বাসিন্দাদের দাবি মতো ব্যবস্থা করা হোক। তিনি অবশ্য অভিযোগের আঙুল তোলেন শাসক দলের দিকে। তাঁর কথায়, ‘‘উন্নয়নের ভূমিকম্প হল! মাটির নীচে এই ধরনের কাজের আগে বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলা নিয়মের মধ্যে পড়ে। কিন্তু তা করা হয়নি।’’

কলকাতা পুলিশের আধিকারিকেরা বাসিন্দাদের আলাদা আলাদা করে বাড়ি সম্পর্কে তথ্য দিতে বলেছেন। সেই নথি মেট্রোর কাছে যাবে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy