Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Kolkata

রাস্তায় ফ্রিজের পর বাস স্টপে র‌্যাক ভর্তি বই রাখবেন আলিমুদ্দিনের তৌসিফ

আর অপেক্ষার আক্ষেপ নয়, বাসযাত্রীদের জন্য গল্পের বই থাকবে জোড়া গির্জা বাস স্টপে। চোখ বুলিয়ে নেওয়া যাবে খবরের কাগজেও। তৌসিফের এই উদ্যোগ সফল হলে শহরের অন্য বাস স্ট্যান্ডে বই রাখার আবেদন করবেন মেয়রের কাছে।

এর আগে এপ্রিল মাসে গরম বাড়তে পথচলতিদের তেষ্টা মেটাতে রাস্তায় ফ্রিজ রেখে দিয়েছিলেন তৌসিফ  রহমান।

এর আগে এপ্রিল মাসে গরম বাড়তে পথচলতিদের তেষ্টা মেটাতে রাস্তায় ফ্রিজ রেখে দিয়েছিলেন তৌসিফ  রহমান। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ মে ২০২২ ১৩:০৮
Share: Save:

‘স্ট্রিট লাইব্রেরি’, মানে রাস্তার ধারে বই পড়ার জায়গা নতুন বিষয় নয়। কিন্তু বাসযাত্রীদের জন্য কলকাতার বাস স্টপে র‌্যাক ভর্তি বই! এরকমই পরিকল্পনা করেছেন আলিমুদ্দিনের বাসিন্দা তৌসিফ রহমান। এর আগে এপ্রিল মাসে গরম বাড়তে পথচলতিদের তেষ্টা মেটাতে রাস্তায় ফ্রিজ রেখে দিয়েছিলেন তিনি। এবার, মধ্য কলকাতার জোড়া গির্জা বাস স্টপে সাধারণ যাত্রীদের পড়ার জন্য ছোট গল্পের বই রাখতে চলেছেন তৌসিফ।

শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষা যা-ই হোক, বাসের জন্য অপেক্ষা করতে বিরক্তিই লাগে। অগত্যা মুঠোফোনে খুটখাট বা বারবার রাস্তার দিকে তাকিয়ে দেখা, গন্তব্যগামী বাস আসছে কি না। তৌসিফের মতে, চুপচাপ ১৫ মিনিট বা আধ ঘন্টা বাসের অপেক্ষা করতে করতে রবীন্দ্রনাথের একটা ছোট গল্প বা চাচা চৌধুরী পড়ে নেওয়া যাবে। এতে বিরক্তিও কাটবে আবার বই পড়ার অভ্যাসও বজায় রাখা যাবে।

শুধু বই নয়, রোজকার খবরের কাগজ রাখারও পরিকল্পনা রয়েছে তৌসিফের। আপাতত পুরনো বই দিয়েই এই ‘প্রতীক্ষালয় লাইব্রেরির’ পথ চলা শুরু হতে চলেছে। সেল্ফ এবং বইয়ের জন্য প্রাথমিক খরচ তিনি করলেও অনেকেই বই দানও করবেন বলে তাঁর আশা। ছোট ছোট গল্প, কমিকস এবং পুরনো বই রাখার চিন্তাভাবনা রয়েছে তাঁর। বাস স্টপে একাধিক ভাষার বই থাকবে বলে জানান তিনি। বাংলা, ইংরাজির পাশাপাশি হিন্দি এবং উর্দু গল্পের বইও রাখা হবে।

চলতি বছরের কাঠফাটা গরমে আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে ফ্রিজ রেখে নজর কেড়ে ছিলেন তৌসিফ। গ্রীষ্মের দাবদাহে অতিষ্ঠ পথচলতি মানুষ যাতে ঠান্ডা জলে গলা ভেজাতে পারেন তার জন্য ফ্রিজ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি। স্থানীয় বহু বাসিন্দা ঠান্ডা জলের জন্য ফ্রিজে বোতল রেখে যেতেন তো কেউ বরফ জমতে দিয়ে যেতেন। রাস্তায় ফ্রিজ দেখে অনেকেরই মনে প্রশ্ন জেগেছিল, রাতবিরেতে ফ্রিজের নিরাপত্তা নিয়ে। যদিও তৌসিফ প্রথম থেকেই নিশ্চিত ছিলেন সাধারণ মানুষের জন্য যে জিনিস তা কেউ চুরি করবেন না। এবারও তাঁর একই বক্তব্য, “বইপ্রেমীরা বাস স্টপে বই রাখার গুরুত্ব বুঝবেন। আর এই বইও তো মানুষের জন্যই, তাই কেউ চুরি করবে না।’’ এমনটাই তাঁর বিশ্বাস । তাই তালা-চাবির ব্যবস্থা রাখার প্রশ্নই ওঠে না বলে মনে করেন তিনি।

সম্প্রতি কর্নাটক সড়ক পরিবহণ কর্পোরেশন (উত্তর-পশ্চিম) বিভাগের উদ্যোগে বাস টার্মিনালে যাত্রীদের পড়ার জন্য বই রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। রাজ্যের তরফ থেকেও ট্রামের মধ্যে চলন্ত লাইব্রেরির উদ্যোগ নেওয়া হয় ২০২০ সালে। কলকাতার বাস স্টপে বই রাখার পরিকল্পনা সে দিক থেকে নতুন না হলেও অভিনব। আপাতত একটি বাস স্টপে বই রেখে তার গ্রহণযোগ্যতা দেখতে চাইছেন তৌসিফ। এই উদ্যোগ জনপ্রিয় হলে, কলকাতার মেয়রের কাছে তৌসিফ আবেদন করবেন, যাতে কলকাতার আরও বাস স্টপে বই রাখার ব্যবস্থা করা যায়।

অন্য বিষয়গুলি:

Kolkata bus stop Books
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy