রোগীর তলপেটে থেকে বার হয়েছে প্রায় পাঁচ সেন্টিমিটার লম্বা ‘সেদ্ধ ডিম’। ছবি: ফেসবুক থেকে সংগৃহীত।
টিউমার ভেবে অস্ত্রোপচারের পর রীতিমতো তাজ্জব চিকিৎসকেরা! রোগীর পেট থেকে বেরোল আস্ত একটি ‘সেদ্ধ ডিম’। মঙ্গলবার আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এমনটাই ঘটেছে। ওই হাসপাতালের চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, আসলে দেহের অঙ্গ বৃদ্ধি পেয়েই তা সেদ্ধ ডিমের আকার নিয়েছে। গোটা ভারতে এমন ধরনের ঘটনার খুব বেশি নজির নেই বলে জানিয়েছেন তাঁরা। গত ৭০ বছরে গোটা বিশ্বে এই ধরনের ঘটনার সংখ্যা তিরিশেরও কম বলে দাবি আমেরিকার একটি সমীক্ষার।
আর জি কর হাসপাতাল সূত্রে খবর, মাস কয়েক ধরেই তলপেটের ব্যথায় ভুগছিলেন দমদমের ৫২ বছরের এক ব্যক্তি। সেই সঙ্গে প্রস্রাবের সময় জ্বালা জ্বালা ভাবও ছিল তাঁর। তবে কিছুতেই সেই ব্যথা না কমায় বৃহস্পতিবার আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসকদের দ্বারস্থ হন। হাসপাতালের সার্জারি বর্হিবিভাগের ৪ নম্বর ইউনিটে দেখানোর পর প্রাথমিক ভাবে চিকিৎসকেরা মনে করেন, রোগীর মূত্রথলিতে সংক্রমণের জন্য তলপেটে ব্যথা হতে পারে। রোগীর আল্ট্রাসোনোগ্রাফি করা হয়। সেই রিপোর্ট দেখে চিকিৎসকেরা মনে করেন, মূত্রথলিতে টিউমার থাকার কারণে তলপেটে ব্যথা হচ্ছে রোগীর। এর পর সিটি স্ক্যানও করানো হয় তাঁর। সেই রিপোর্টে মূত্রথলির পাশাপাশি টিউমারের অবস্থান খাদ্যনালীতে হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়। এর পর অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকেরা। তবে অস্ত্রোপচার করার পর হতবাক হয়ে যান চিকিৎসকেরা। রোগীর তলপেট থেকে বার হয়েছে প্রায় পাঁচ সেন্টিমিটার লম্বা ‘সেদ্ধ ডিম’।
আর জি কর হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, চিকিৎসকদের পরিভাষায় এই রোগের নাম ‘পেরিটোনিয়াল লুজ বডিস বা পেরিটোনিয়াল মাইস’। চিকিৎসকেরা বলছেন, দেহতন্তুর সঙ্গে চর্বি-ক্যালসিয়াম জমাট বেঁধে ডিমের মতো আকার ধারণ করে। ডিমের মতো অংশটির পিছন দিকটা ইঁদুরের মতো হওয়ায় বাংলায় একে ‘পেটের মধ্যে ইঁদুর’ও বলা যেতে পারে বলে জানিয়েছেন চিকিৎ়সকেরা। সাধারণত, পুরুষদের ক্ষেত্রে অ্যাপেন্ডিক্স গলে বা বৃহদন্ত্রের গা থেকে মাংস খসে এ ধরনের ডিমের মতো আকার নেয় দেহের অঙ্গ। অন্য দিকে, মহিলাদের ক্ষেত্রে জরায়ুর গা থেকে ছোট টিউমার খসে এ ধরনের টিউমার তৈরি হতে পারে।
আরও পড়ুন: কোভিড-পরবর্তী চিকিৎসায় ক্লিনিক মেডিক্যালেও
আরও পড়ুন: তিন মাসে দ্বিতীয় বার করোনা আক্রান্ত চিকিৎসক, হুগলিতে এই প্রথম
চিকিৎসকেরা আরও জানিয়েছেন, আমেরিকার ন্যাশনাল সেন্টার ফর বায়োটেকনলজি ইনফরমেশন-এর ১৯৫১ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত করা একটি সমীক্ষায় দাবি, বিশ্বে এখনও পর্যন্ত ২০ থেকে ৩০টি এ ধরনের কেস পাওয়া গিয়েছে। এমনকি, ভারতেও এর খুব একটা নজির নেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy