প্রতীকী ছবি।
গলার বাঁ দিকের অংশে গভীর ক্ষত। মাথার পিছনেও গভীর আঘাত রয়েছে। আশপাশে চাপ চাপ রক্ত। উল্টোডাঙার একটি ডালকল থেকে বুধবার সকালে এই অবস্থায় কম্বল চাপা দেওয়া এক যুবকের দেহ উদ্ধার হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রের খবর। মৃতের নাম রাকেশ সাউ (৩০)। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের ধারণা, ওই যুবককে খুন করা হয়েছে। দেহটি ময়না-তদন্তে পাঠানোর পাশাপাশি উল্টোডাঙা থানায় একটি খুনের মামলাও রুজু করা হয়েছে। লালবাজারের হোমিসাইড শাখার তদন্তকারীদের পাশাপাশি এ দিন ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা-প্রধান মুরলীধর শর্মাও। রাত পর্যন্ত ডালকলের মালিক এবং এক শ্রমিককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলেও কাউকেই গ্রেফতার করা হয়নি।
পুলিশ জানায়, গোরাপদ সরকার লেনের যে ডালকল থেকে দেহটি উদ্ধার হয়েছে, সেটি পরশ সাউ নামে এক ব্যক্তির। ডালকলের পাশেই সস্ত্রীক থাকেন তিনি। দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে তিনি শ্রমিক নিয়ে এসে কাজ করান। পরশ পুলিশকে জানিয়েছেন, উত্তর ২৪ পরগনার গৌরীপুরে বাড়ি রাকেশের। বছরখানেক আগে সেই সূত্রেই রাকেশ কাজ করতে আসেন। রাতে ডালকলের ভিতরেই শুতেন রাকেশ। ডালকলে কাজ না থাকলে অন্য জায়গায় কাজ করতে যেতেন তিনি। মঙ্গলবার রাতেও সেই মতো কাজ সেরে ফিরে তাঁর বাড়ি থেকে রাকেশ ডালকলের চাবি নিয়ে গিয়েছিলেন বলে পরশের দাবি। পরশ এ দিন বলেন, ‘‘প্রতিদিন ভোরে আমি ডালকল ঘুরে একটি মন্দিরে পুজো দিতে যাই। এ দিনও সেই মতো গিয়ে দেখি, ডালকলের দরজায় বাইরে থেকে তালা ঝুলছে। বাড়ি গিয়ে ডুপ্লিকেট চাবি নিয়ে আসি। ভিতরে ঢুকতেই বুক কেঁপে যায়।’’
ডালকলের মূল দরজা পেরিয়ে সরু গলির মতো রাস্তা গুদামঘরের দিকে চলে গিয়েছে। পরশের দাবি, ওই গুদামঘরের চৌকাঠের কাছেই রাকেশের দেহ পড়ে থাকতে দেখেন তিনি। তাঁর চাদর, বালিশ মেঝের উপরে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে ছিল। এর পরেই তিনি ছুটে বেরিয়ে পাড়ার লোকজনকে খবর দেন বলে দাবি পরশের। খবর যায় থানাতেও।
লালবাজার সূত্রের খবর, ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ দেখে, মৃতের পরনে রয়েছে লাল শার্ট এবং কালো ট্রাউজ়ার্স। তবে সেখান থেকে কোনও অস্ত্র উদ্ধার হয়নি। ফলে কী দিয়ে এবং ঠিক কোন সময়ে রাকেশকে আঘাত করা হয়েছিল, তা জানতে ময়না-তদন্তের উপরেই নির্ভর করছে পুলিশ। তবে পুলিশের ধারণা, খুনি রাকেশের পরিচিত কেউ। না-হলে ঘাতককে ডালকলের ভিতরে ঢুকতে দিতেন না তিনি। খুন করার পরে সে-ই বাইরে থেকে তালা দিয়ে পালিয়েছে। আশপাশের বাসিন্দারা আবার পুলিশকে জানিয়েছেন, ডালকলে মঙ্গলবার রাতে মদ্যপানের আসর বসেছিল। সেখানেই কোনও বিবাদের জেরে এই খুন কি না, তা-ও ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের।
কলকাতা পুলিশের ইস্টার্ন সাবার্বান ডিভিশনের ডিসি অজয় প্রসাদ বলেন, ‘‘জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। অভিযুক্তকে দ্রুত গ্রেফতার করা হবে। তার পরেই খুনের উদ্দেশ্য পরিষ্কার হবে।’’ পুলিশ সূত্রের খবর, যে যুবককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে, তিনি ওই এলাকাতেই শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন। মঙ্গলবার রাতে তিনিও ওই ডালকলে ছিলেন বলে পুলিশের প্রাথমিক অনুমান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy