প্রায় সব ক’টি প্রাথমিক, মাধ্যমিক, মাদ্রাসা, শিশু শিক্ষা কেন্দ্র এবং মাধ্যমিক শিক্ষা কেন্দ্রের পড়ুয়ারা পোশাক পাবে। ফাইল ছবি
শহরে সরকার অনুমোদিত স্কুলগুলিতে আগামী ৩০ অগস্টের মধ্যে প্রাথমিক থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়াদের নীল-সাদা পোশাক বিতরণ করে দেওয়া হবে। প্রায় সব ক’টি প্রাথমিক, মাধ্যমিক, মাদ্রাসা, শিশু শিক্ষা কেন্দ্র এবং মাধ্যমিক শিক্ষা কেন্দ্রের পড়ুয়ারা ওই পোশাক পাবে। তবে সরকারি অনুমোদিত খ্রিস্টান মিশনারির ৩০টি স্কুলকে এই তালিকা থেকে বাদ রাখা হয়েছে।
শিক্ষা দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘ওই ৩০টি খ্রিস্টান মিশনারি স্কুল কর্তৃপক্ষের তরফে এখনও অনুমোদন না আসায় ওই সব স্কুলের পোশাক আগে যা ছিল, তা-ই থাকছে। তবে তাদের সঙ্গেও কথা চলছে। সব সরকারি স্কুলের পড়ুয়াদের পোশাকের রং এক রাখলে তাতে ঐক্য প্রকাশ পাবে, সেটাই তাদের বলা হয়েছে।’’
যে সব খ্রিস্টান মিশনারি স্কুলে পোশাকের রং একই থাকছে, স্কটিশ চার্চ কলেজিয়েট স্কুল তাদের একটি। ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক বিভাস সান্যাল বলেন, ‘‘খ্রিস্টান মিশনারি স্কুলগুলি সবই খুব পুরনো। এমনকি ১০০ বছরের বেশি পুরনো স্কুলও রয়েছে। স্কুলে পোশাকের রং অনেক ঐতিহ্যকে তুলে ধরে। তা স্কুলের স্বাতন্ত্র্যের প্রকাশ। সেই সব বিবেচনা করে কলকাতার বিশপ অফিস থেকে শিক্ষা দফতরে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, এখনই পোশাকের রং পাল্টাবে না। এই নিয়ে আরও ভাবনা-চিন্তা প্রয়োজন।’’
শুধু খ্রিস্টান মিশনারি স্কুলই নয়, শহরের বেশ কিছু স্কুল রয়েছে যেগুলি শতাব্দীপ্রাচীন। সেই সব স্কুলের প্রধান শিক্ষকেরাও নীল-সাদা পোশাকে আপত্তি জানিয়েছিলেন। সে কথা শিক্ষা দফতরকে তাঁরা জানিয়েওছিলেন। যদিও সেই আপত্তি গ্রাহ্য হয়নি। যেমন মিত্র ইনস্টিটিউশন ভবানীপুর শাখার প্রধান শিক্ষক রাজা দে জানাচ্ছেন, তাঁদের স্কুল ১৯০৫ সালে স্থাপিত। ১১৭ বছরের পুরনো এই স্কুলের পোশাক সাদা শার্ট-প্যান্ট, কালো রঙের বেল্ট ও জুতো। বুকে নীল রং দিয়ে ‘মিত্র’ লেখা। রাজা বলেন, ‘‘শহিদ যতীন দাস, এয়ার মার্শাল সুব্রত মুখোপাধ্যায়, অভিনেতা রাজ কপূর আমাদের স্কুলের ছাত্র। এ রকম বহু উজ্জ্বল ব্যক্তি এই স্কুলের প্রাক্তনী। তখনও স্কুলের পোশাক ছিল সাদা। ঐতিহ্যের কথা ভেবে আমরাও রং পাল্টে নীল-সাদা করায় আপত্তি জানিয়েছিলাম। কিন্তু অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়াদের পোশাকের রং নীল-সাদাই হচ্ছে।’’
কলকাতা জেলার ২০৮৫টি স্কুলে প্রাক্-প্রাথমিক থেকে অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়াদের এই নীল-সাদা পোশাক দেওয়া হবে। কলকাতা পুরসভার সমাজকল্যাণ দফতরের তত্ত্বাবধানে এই পোশাক তৈরি র কাজ চলছে। সংশ্লিষ্ট বিভাগের এক আধিকারিক জানান, ১৬টি বরোয় ১৬টি পোশাক তৈরির কেন্দ্র হয়েছে। স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সহযোগিতায় এই পোশাক তৈরি হচ্ছে। ছাত্রদের জন্য প্রাক্-প্রাথমিক থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত দেওয়া হবে দু’টি হাফ ও ফুল প্যান্ট এবং দু’টি হাফ ও ফুল শার্ট। মাদ্রাসার পড়ুয়াদের সবার জন্যই ফুল প্যান্ট রাখা হচ্ছে। প্রাক্-প্রাথমিক থেকে দ্বিতীয় শ্রেণি পর্যন্ত ছাত্রীরা পাবে টিউনিক ও শার্ট। তৃতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ছাত্রীরা শার্ট-স্কার্ট। ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত ছাত্রীদের পোশাক সালোয়ার কামিজ এবং দোপাট্টা। মাদ্রাসার প্রাক্-প্রাথমিক থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত সব ছাত্রীদের পোশাক দোপাট্টা-সহ সালোয়ার কামিজ। তবে শীতকালের পোশাক এখনও স্থির হয়নি।
কলকাতা পুরসভার সমাজকল্যাণ দফতরের মেয়র পারিষদ মিতালি বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘যুদ্ধকালীন তৎপরতায় পোশাক তৈরি হচ্ছে। দু’বছর পরে পড়ুয়ারা তা পেতে চলেছে। আশা করছি, ৩০ অগস্টের মধ্যে সব স্কুলে পোশাক পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy