এই মিছিল থেকেই ওঠে ‘গোলি মারো’ স্লোগান। নিজস্ব চিত্র
দিল্লিতে হিংসার সঙ্গে এক হয়ে যাওয়া স্লোগান ‘গোলি মারো’ স্লোগান শোনা গেল এ বার কলকাতাতেও। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ যখন শহিদ মিনারের সভায়, তখন একদল বিজেপি কর্মী সমর্থককে বলতে শোনা গেল ‘দেশ কে গদ্দারোঁ কো / গোলি মারো সালোঁ কো’। তবে পুলিশ ওই মিছিলের মাঝখানে ঢুকে নিরস্ত করে বিজেপির কর্মীদের।
এ দিন দুপুর ২.২০ মিনিট নাগাদ এসপ্ল্যানেড মেট্রো স্টেশনের ৬ নম্বর গেট দিয়ে বেরিয়ে আসেন সাত থেকে আট জন বিজেপি কর্মী সমর্থক। তাঁদের হাতে ছিল দলীয় পতাকা। সেই সময় গ্র্যান্ড হোটেলের পাশের গলিতে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন কিছু মানুষ। তাঁদের হাতে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) ও জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি) বিরোধী পোস্টার। অমিত-বিরোধী পোস্টারও ছিল বিক্ষোভকারীদের হাতে। সেই সময় বিক্ষোভকারীদের লক্ষ করে আচমকাই দিল্লির কায়দায় ‘গোলি মারো’ স্লোগান দিতে থাকেন ওই বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা।
ওই বিজেপি কর্মীরা স্লোগান দিতে দিতে ব্যারিকেডের দিকে এগিয়ে আসতে থাকেন। পাল্টা ব্যারিকেডের বাইরে বার হওয়ার চেষ্টা করেন বিক্ষোভকারীদের কয়েকজন। মুহূর্তে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। ঘটনাস্থলে কলকাতা পুলিশের শীর্ষ কর্তারা উপস্থিত ছিলেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তাঁরা দু’পক্ষের মাঝে চলে আসেন। তাঁরা দ্রুত দু’পক্ষকে আলাদা করে দেন। আটক করা হয় তিন জনকে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন যুগ্ম কমিশনার (অপরাধ) মুরলীধর শর্মা, অতিরিক্ত কমিশনার ডিপি সিংহ-সহ কয়েক জন পুলিশ কর্তা।
আরও পড়ুন: আপনারা মিথ্যে বলছেন, পাল্টা আঙুল ‘গোলি মারো’র ‘জনক’ অনুরাগের
আরও পড়ুন: লাইভ: সংখ্যালঘুদের ভয় দেখাচ্ছে তৃণমূল, অভিযোগ অমিত শাহের
উপস্থিত পুলিশকর্তারা বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলেন। তাঁদের সরে যেতে অনুরোধ করেন। শেষ পর্যন্ত গ্র্যান্ড হোটেলের পাশের গলির ওই জমায়েত সরে যায়। তবে পুরসভা ভবন পর্যন্ত গলিতে তখনও বিক্ষোভ চলছিল। এ দিন ঘটনাস্থলে বিশাল পুলিশ বাহিনী থাকায় কোনও রকম অপ্রীতিকতর পরিস্থিতি তৈরি হয়নি।
আরও পড়ুন: কাগজ নেই, জন্মসূত্রেই নাগরিক মোদী, জানাল প্রধানমন্ত্রী দফতর
দিল্লি বিধানসভা ভোটের প্রচারে শাহিন বাগের প্রতিবাদীদের উদ্দেশে প্রথম বার এই স্লোগান তুলেছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর। ভোটের মুখে ওই স্লোগান নিয়ে বিস্তর বিতর্ক হয়। আপ-এর বিপুল জয়ের পর, অমিত শাহ স্বীকার করে নেন, উস্কানি এবং বিদ্বেষমূলক কথাবার্তা বলা ঠিক হয়নি। কিন্তু ক’দিনের মধ্যেই পরিস্থিতি ফের বদলে যায়। দিল্লি সংঘর্ষের চলতি আবহে বিজেপির কপিল মিশ্র, প্রবেশ বর্মার মতো বিজেপি নেতারা অবাধে উস্কানিমূলক স্লোগান চালিয়ে গিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। গত মঙ্গলবার বিজেপি বিধায়ক অভয় বর্মার মিছিলেও ওঠে ‘গোলি মারো’ স্লোগান। শনিবার দিল্লির ব্যস্ত মেট্রো স্টেশন রাজীব চকেও ওঠে বিতর্কিত ওই স্লোগান।
কলকাতা পুলিশ এই বিজেপি সমর্থকদের বিরুদ্ধে স্বতোপ্রণোদিত ভাবে মামলা দায়ের করতে চলেছে। ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৫৩এ(সাম্প্রদায়িক বিভেদ তৈরি করতে উস্কানি দেওয়া), ৫০৫(কোন সম্প্রদায়কে হুমকি দেওয়া), ৫০৬(কোন ব্যক্তিকে হুমকি দেওয়া), ৩৪(সমবেতভাবে অপরাধ করা)- ধারায় মামলা রুজু করতে করতে চলেছে রুলিশ। লালবাজার সূত্রে খবর ওই মিছিলে কারা কারা ছিলেন তাদের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy