আকাশের দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়ির ফরেন্সিক পরীক্ষা করা হচ্ছে। নিজস্ব চিত্র।
জামিন পেলেন না রূপা গঙ্গ্যোপাধ্যায়ের ছেলে আকাশ মুখোপাধ্যায়ের। গাড়ি দুর্ঘটনা কাণ্ডে তাকে ১ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিল আলিপুর আদালত।
বৃহস্পতিবারই গাড়ি দুর্ঘটনার জেরে গ্রেফতার করা হয় বিজেপি সাংসদ রূপা গঙ্গোপাধ্যায়ের ছেলে আকাশকে। তাঁকে জামিন অযোগ্য ধারায় গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানায় পুলিশ। ভারতীয় দণ্ডবিধির ২৭৯, ৪২৭(অন্যের সম্পত্তি ক্ষতি করা), মোটর ভেহিকল অ্যাক্টের বিভিন্ন ধারা এবং ৩ পিডিপিপি অ্যাক্টে আকাশের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। শুক্রবার আকাশকে আলিপুর আদালতে তোলা হল।
এ দিন আকাশের আইনজীবী দিব্যেন্দু ভট্টাচার্য জামিনের আবেদন করলে তার তীব্র বিরোধীতা করেন সরকারি আইনজীবী রাধাকান্ত রং। সরকারি আইনজীবী এ দিন আদালতে বলেন, ওই জায়গাতে পুলিশের গার্ড রেল দেওয়া ছিল। দুর্ঘটনা এড়ানোর জন্যই ওইখানে গার্ড রেল দেওয়া ছিল। সেই গার্ডরেলে ধাক্কা মেরে তারপর আকাশের গাড়ি পাঁচিলে ধাক্কা মারে। ফলে এটা বোঝাই যাচ্ছে যে কতটা বেপরোয়া হয়ে গাড়ি চালাচ্ছিলেন তিনি। সরকারি আইনজীবী তদন্তের প্রয়োজনীয়তার কথা জানিয়ে আকাশের ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজতের আবেদন করেন। অতিরিক্ত মুখ্য বিচারবিভাগীয় বিচারক দু’পক্ষের সওয়াল শুনে ১ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। আইনজীবীদের মতে, সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করার জন্য যে জামিন অযোগ্য পিডিপিপি অ্যাক্টের ৩ নম্বর ধারায় মামলা করা হয়েছিল, সেই আইনের ভিত্তিতেই জামিন পাননি আকাশ। অন্য দিকে সাংসদ রূপা গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ‘‘ঘটনার খবর পেয়ে আমি নিজেই পুলিশকে খবর দিই। আমি আমার ছেলেকে ভালবাসি। তার মানে এই নয় যে তার অন্যায়কে সমর্থন করব। আইন আইনের পথে চলবে।”
বৃহস্পতিবার রাতে গল্ফ গার্ডেনে বাড়ির কাছেই দুর্ঘটনার মুখে পড়েন আকাশ। স্থানীয়দের অভিযোগ, বেপরোয়া ভাবে গাড়ি চালাচ্ছিলেন আকাশ। ফলে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রয়্যাল ক্যালকাটা গল্ফ ক্লাবের (আরসিজিসি) পাঁচিলে সজোরে ধাক্কা মেরে ঢুকে যায় গাড়িটি। তাঁদের আরও অভিযোগ, নিয়মিত এ রকম বেপরোয়া গাড়ি চালান আকাশ। বার বার সতর্ক করার পরেও শুধরোননি। মত্ত অবস্থায় গাড়ি চালাচ্ছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে আকাশের বিরুদ্ধে।
যেখানে দুর্ঘটনাটি ঘটে তার ঠিক উল্টো দিকেই আকাশের বাড়ি। দুর্ঘটনার পরই ছেলের ফোন পেয়ে তাঁকে উদ্ধার করতে আসেন বাবা ধ্রুব মুখোপাধ্যায়। অন্য দিকে, স্থানীয়দের কাছে থেকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে পুলিশ। রাতেই তাঁকে আটক করে মেডিক্যাল টেস্টের জন্য এম আর বাঙুরে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে মেডিক্যাল টেস্টে মদ্যপানের কোনও প্রমাণ মেলেনি বলেই জানিয়েছে পুলিশ।
আকাশের আইনজীবী দিব্যেন্দু ভট্টাচার্য বলেছিলেন, “সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর বা ক্ষতি হলে পিডিপিপি অ্যাক্টে মামলা দায়ের করা হয়। কিন্তু এখানে যে পাঁচিলটি ভেঙেছে সেটা একটি বেসরকারি সংস্থার। সে ক্ষেত্রে এই আইন প্রযোজ্য নয়। পুলিশ কী করে আকাশের বিরুদ্ধে এই মামলা দায়ের করল জানি না। আমরা আদালতে বিষয়টি জানাব। আরসিজিসি-র সঙ্গেও এ ব্যাপারে ইতিমধ্যেই কথা বলেছি।”
আরও পড়ুন: দেবশ্রী-পর্ব দুঃস্বপ্ন, তা ভুলে যান, শোভনদের বার্তা শিব প্রকাশের, রাখি বাঁধলেন বৈশাখী
আরও পড়ুন: মশা মারার ধোঁয়া বন্ধ করো, বাবাকে বলে দিলেন রত্না
পুলিশ সূত্রে খবর, আকাশের পরিবারের তরফে তাদের কাছে দাবি করা হয়েছে, কয়েক দিন আগেই দিল্লি থেকে ফিরেছেন আকাশ। যে গাড়িটির দুর্ঘটনা ঘটেছে সেটা তিন মাস গ্যারেজে পড়ে ছিল। চালানো হয়নি। সূত্রের খবর, আকাশের পরিবার পুলিশের কাছে দাবি করেছে, বৃহস্পতিবার রাতে বাড়ি ফেরার সময় গাড়িটির অ্যাক্সেলেটর বিকল হয়ে যায়। আকাশ নিজেও পুলিশের কাছে দাবি করেছেন অ্যাক্সেলেটর বিকল হয়ে যাওয়ায় গাড়ির গতি বেড়ে যাচ্ছিল। নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছিল না। ব্রেকও কাজ করছিল না। ডান দিকে লোকজন এবং বাঁ দিকে বস্তি থাকার কারণে কারও প্রাণহানি ঘটাবেন না বলেই বাধ্য হয়ে আরসিজিসি-র দেওয়ালে ধাক্কা মারেন।
রয়্যাল ক্যালকাটা ক্লাবের পাঁচিলে ধাক্কা মারার পর আকাশের (ইনসেটে) গাড়ি। নিজস্ব চিত্র।
অন্য দিকে ধ্রুব মুখোপাধ্যায় পুলিশকে জানান, দুর্ঘটনার পরই গাড়িতে আটকে থাকা অবস্থাতে তাঁকে ফোন করেন আকাশ। ছেলের গোটা মুখ, মাথা কাচে কেটে গিয়েছিল। সেই অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে আসেন। রূ
পুলিশ জানিয়েছে, আকাশ আদৌ সত্যি বলছে কি না সে কারণে গাড়ির মেকানিক্যাল টেস্ট করা হবে। এ দিনই ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য আকাশের দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়িটি নিয়ে গিয়েছে যাদবপুর থানার পুলিশ। গাড়িতে কোনও যান্ত্রিক গোলযোগ ছিল কি না এই পরীক্ষা থেকে তা স্পষ্ট হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy