প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, অর্থাৎ ডিএলএড (ডিপ্লোমা ইন এলিমেন্টারি এডুকেশন) কলেজগুলিতে এ বার হাজিরার রেকর্ড রাখার জন্য বসছে বায়োমেট্রিক যন্ত্র। শিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, প্রথমে ৭০টি সরকারি ডিএলএড কলেজে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে হাজিরা-ব্যবস্থা চালু হবে। আগামী দিনে বেসরকারি কলেজগুলিতেও এই ব্যবস্থা চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে।
বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে হাজিরার জন্য প্রয়োজনীয় প্রযুক্তির কাজ করছে শিক্ষা দফতরের অধীনস্থ স্টেট কাউন্সিল অব এডুকেশনাল রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং (এসসিইআরটি)। ওই প্রতিষ্ঠানের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘শুধু পড়ুয়ারাই নন, শিক্ষকদেরও উপস্থিতির রেকর্ড রাখা হবে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে। কলেজে ঢোকার সময়েই শিক্ষক ও পড়ুয়াদের এই ব্যবস্থায় হাজিরা দিতে হবে। এই ব্যবস্থা চালু করার জন্য যে পরিকাঠামো প্রয়োজন, সেই পরিকাঠামো তৈরির কাজ কয়েকটি কলেজে ইতিমধ্যে শুরুও হয়ে গিয়েছে।’’
উল্লেখ্য, ডিএলএড কলেজগুলিতে পড়ুয়া ও শিক্ষকদের হাজিরা নিয়ে মাঝেমধ্যেই বিতর্ক দেখা দেয়। যা ঘিরে অতীতে গোলমালও হয়েছে। সেই সব বিতর্কের অবসান ঘটাতে ইতিমধ্যেই বেশ কিছু পদক্ষেপ করেছে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। পর্ষদের সভাপতি গৌতম পাল বলেন, ‘‘সরকারি ও বেসরকারি মিলিয়ে ৬৫৭টি ডিএলএড কলেজ রয়েছে। যার মধ্যে সরকারি কলেজ ৭০টি। আমরা বলে দিয়েছি, পড়ুয়াদের ৮০ শতাংশ উপস্থিতি থাকতেই হবে। হাজিরার রেকর্ডও রাখতে হবে। হাজিরা নিয়ে কোনও পড়ুয়া কারচুপি করলে তার রেজিস্ট্রেশন বাতিল হবে। হাজিরা নিয়ে কোনও অনিয়ম আমরা বরদাস্ত করব না।’’
গৌতম জানান, বেসরকারি কলেজগুলিতে হাজিরার রেকর্ড দেখতে পর্ষদের প্রতিনিধিরা আচমকাই সেই সব কলেজে চলে যাচ্ছেন। পর্ষদ সভাপতির মতে, ‘‘ডিএলএড কলেজগুলিতে যাঁরা প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন, তাঁরা তো ভবিষ্যতে শিক্ষক হবেন। তাই তাঁদের হাজিরার ক্ষেত্রে শৃঙ্খলা ও স্বচ্ছতা থাকা দরকার।’’
শিক্ষা দফতরের এক কর্তা জানান, ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর টিচার্স এডুকেশন প্রাথমিক শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের কলেজগুলির জন্য যে নির্দেশিকা দিয়েছে, সেখানেও বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে হাজিরা ব্যবস্থার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, শুধু বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে হাজিরা থাকাই যথেষ্ট নয়। সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটে ওই হাজিরার রেকর্ড থাকতে হবে। প্রতি সপ্তাহে সেই রেকর্ড আপডেটও করতে হবে।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)