জল-নষ্ট: সল্টলেকের একটি আইল্যান্ডে এ ভাবেই পড়ে যাচ্ছে জল। রবিবার। ছবি: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য
জল অপচয় হচ্ছে। তা ঠেকাতে নজরদারি চালানোর মতো লোকবল এখনও নেই। ফলত সদিচ্ছা থাকলেও সল্টলেকের মতো পরিকল্পিত শহরে এখনই জল অপচয় বন্ধ করতে পারা যাচ্ছে না। ঘটনার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন বিধাননগর পুরসভার কর্তৃপক্ষও।
দক্ষিণ ভারতের কোনও কোনও শহরে যখন জলের অভাবে হাহাকার উঠেছে, তখন কলকাতা কিংবা তার পাশেই বিধাননগরের রাস্তায় জল বয়ে যাওয়ার ছবি দেখা যাচ্ছে। কিন্তু কী ভাবে সেই জল অপচয় ঠেকানো যায় তা বুঝে উঠতে পারছেন না পুর কর্তৃপক্ষ। আপাতত তাঁরা চাইছেন বিভিন্ন ওয়ার্ডে কাউন্সিলরেরা নিজেদের এলাকায় নাগরিকদের মধ্যে জল অপচয় নিয়ে সচেতনতা প্রচার চালান।
সকালে বিভিন্ন আবাসিক বাড়ির সামনে লাইন দিয়ে দাঁড় করিয়ে একাধিক গাড়ি ধোয়া কিংবা বাগান পরিচর্যার কাজে যথেষ্ট পরিমাণে জল খরচ করার ছবি কলকাতার মতোই সল্টলেকেও চোখে পড়ে। এমনকি রাস্তার ধারের বুলেভার্ড কিংবা আইল্যান্ডের মতো সরকারি জায়গাগুলিতেই দেখা যায় কল খোলা থাকায় বাগান পরিচর্যার কাজে ব্যবহৃত জল অকারণে পড়ে নষ্ট হচ্ছে। পুর কর্তৃপক্ষের দাবি, এমন অভিযোগও আসে যে সাব-মার্সিবল পাম্প বসিয়ে কিংবা ফেরুলের আকার বাড়িয়ে নিয়ে অনেক জায়গায় জল চুরি করা হয়। সেখানে জল নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে। কোথাও আবার পাইপের লিকেজও জল নষ্ট হওয়ার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
বিধাননগর পুরসভা সূত্রে খবর, টালা-পলতা থেকে প্রতিদিন গড়ে ৭০-৮০ লক্ষ গ্যালন জল সরবরাহ করা হয় সল্টলেকে। পাশাপাশি মাটির তলা থেকে পাওয়া যায় আরও ২০ লক্ষ গ্যালন জল। তার বাইরে রাজারহাট-গোপালপুর এলাকাতেও গড়ে প্রায় ৭০ লক্ষ গ্যালন ভূগর্ভস্থ জল সরবরাহ করা হয়। কিন্তু প্রতিদিন কত জল খরচ কিংবা অপচয় হয় তার কোনও স্পষ্ট হিসেব পুরসভার কাছে তেমন ভাবে নেই বলেই কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন। তবে তাঁদের অনুমান, প্রতিদিন সেখানে ১৮ থেকে ২০ শতাংশ জল অপচয় হয়। যার আনুমানিক হিসেব ১৫ থেকে ২০ লক্ষ গ্যালন। এর পিছনে বিভিন্ন কারণ রয়েছে। যার মধ্যে নজরদারির অভাব অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ কারণ হিসেবে অনেকেই মনে করেন। আবার সল্টলেকের লাগোয়া পুরসভার অধীনে সংযুক্ত এলাকায় কলের ঢাকনা চুরি হওয়া কিংবা ভেঙে যাওয়াও একটি কারণ। যার ফলে অনেক সময়ই কল থেকে জল পড়ে নষ্ট হয়। ফলত পুরসভা জোর দিতে চাইছে নজরদারিতে।
যদিও বিধাননগর পুরসভার দাবি, রাস্তার কল থেকে জল পড়ে যাওয়া কিংবা চার মাথার মোড়ের আইল্যান্ডগুলিতে জল পড়ে অপচয় হওয়া আগের তুলনায় কমেছে। তবে সমস্যা পুরোপুরি সমাধানে নিয়মিত জনমানসে প্রচার চালানোর উপরেই ভরসা রাখছেন পুর কর্তৃপক্ষ। বিধাননগর পুরসভার ডেপুটি মেয়র তাপস চট্টোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘একটা রাজনৈতিক সদিচ্ছা প্রয়োজন। তা হলে পোলিয়ো কিংবা গাছ কাটার সমস্যার মতো জল অপচয়ও এক দিন সম্পূর্ণ নির্মূল হবে। আইন করে জল অপচয় বন্ধ করা প্রয়োজন। তা হলে জল অপচয় নিয়ে মানুষ সচেতন হবেন।’’
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy