সল্টলেকের নানা জায়গায় এ ভাবেই গাছের তলায় গড়ে উঠেছে বিভিন্ন দোকান। —নিজস্ব চিত্র।
বড় বড় গাছের নীচে যেখানে লোকের জমায়েত হয়, সে সব গাছের স্বাস্থ্য খতিয়ে দেখার ভাবনা শুরু করেছে বিধাননগর পুরসভা। কোনও গাছ উপড়ে পড়ার অবস্থায় কি না, সে দিকে নজরদারির পরিকল্পনাও করা হয়েছে। বিশেষত সল্টলেকের জন্য ওই ব্যবস্থা বলেই পুরসভার তরফে জানিয়েছেন পরিবেশ বিভাগের মেয়র পারিষদ রহিমা বিবি।
গত ২৬ জানুয়ারি সল্টলেকের পূর্বাচলে গাছের নীচে চাপা পড়ে আহত হন এক মাংস ব্যবসায়ী। জখম ওই ব্যবসায়ীর পরে হাসপাতালে মৃত্যু হয়। গাছটি একটি আবাসনের ভিতরে থাকলেও সেটি পাঁচিলের বাইরে বেরিয়ে এসেছিল। বেরিয়ে আসা ওই অংশের নীচে মাংসের দোকানটি ছিল।
বিধাননগর পুরসভার দাবি, গাছটি কাটার জন্য স্থানীয় পুর প্রতিনিধি পুরসভার কাছে দরবার করলেও মানুষের বাধায় গাছটি কাটা যায়নি। তবে পুর কর্তৃপক্ষ মানছেন, ওই মাংসের দোকানের মতো সল্টলেকে বহু দোকান, রিকশা স্ট্যান্ড, সেলুন বড় বড় গাছের নীচে রয়েছে। দিনের বিভিন্ন সময়ে যেখানে জমায়েত হয়। সেই সময়ে পূর্বাচলের মতো কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে তার দায় যে পুরসভা এড়াতে পারবে না, তা-ও মানছেন কর্তৃপক্ষ। যে কারণে মাইকের মাধ্যমে গাছ নিয়ে সতর্ক হওয়ার বার্তা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন রহিমা।
আদতে বালির উপরে তৈরি সল্টলেক উপনগরীর মাটি অন্যান্য জায়গার তুলনায় আলগা। ফলে বছরের বিভিন্ন সময়ে সল্টলেকে গাছ পড়ার খবর শোনা যায়। অতীতে সামান্য ঝড়ে বিরাট ইউক্যালিপটাস গাছ পড়ে বিডি ব্লকে একটি বাড়িতে বড় ফাটল ধরেছিল।
রাজ্যে ২০১১ সালে রাজনৈতিক পালাবদলের পরে তৃণমূল সরকার ঘোষণা করেছিল বিধাননগর ও কলকাতা পুর এলাকায় গাছের সুমারি হবে। এ পর্যন্ত সেই সুমারি হয়নি। যে কারণে বিধাননগরে কোন গাছ কী অবস্থায় রয়েছে, তার খবর নেই পুরসভার কাছে।
২০২২ সালে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে যোগাযোগ করে সল্টলেকে গাছের স্বাস্থ্য বোঝা শুরু হয়েছে বলে দাবি পুরসভা। মেয়র পারিষদ রহিমার দাবি, পুর প্রতিনিধিদের বলা হয়েছে, বিপজ্জনক গাছ কিংবা মরা গাছ দেখলে পুরসভাকে জানাতে। তিনি বলেন, ‘‘এমন গাছও রয়েছে যে বাইরে থেকে দেখে বোঝা যায় না। অথচ ভিতরে ক্ষয়ে গিয়েছে। যাঁরা গাছতলায় বসে ব্যবসা করেন, তাঁদের আবেদন করব, গাছ নিয়ে কোনও সন্দেহ হলে পুর প্রতিনিধিকে জানান। এমনটাই মাইকে ঘোষণা করা হবে।’’
সম্প্রতি সল্টলেকের রাস্তায় ঘুরে দেখা গেল, কোনও কোনও গাছ হেলে রয়েছে। পাঁচ নম্বর ট্যাঙ্কের কাছে পুলিশ আবাসনের গায়ে গাছের নীচেই সেলুন। সেটির অদূরেই একটি গাছ হেলে পড়েছে। সেলুনের ব্যবসায়ী জানান, গাছটি অনেক বছর ধরেই ওই অবস্থায় রয়েছে।
পুরসভার মতে, সল্টলেকে অসময়ে গাছ উপড়ে পড়ার আরও একটি কারণ কেব্ল তারের জঙ্গল। সল্টলেকে ঘুরলেই চোখে পড়বে, মোটা মোটা সেই সব তারের টানে গাছ হেলে রয়েছে। পুরসভা জানাচ্ছে, বহু জায়গা থেকে তার খুলে নিয়ে গেলেও প্রবণতায় রাশ টানা যাচ্ছে না। কারণ, ভূগর্ভস্থ কেব্ল এ পর্যন্ত বিধাননগরে তৈরি করা সম্ভব হয়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy