Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Government School

ইংরেজি মাধ্যমেও পড়ানো চলছে সরকারি স্কুলে, বাড়ছে পড়ুয়া

আরবিটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক সত্যরঞ্জন মান্না জানালেন, তাঁদের স্কুলে বাংলার পাশাপাশি ইংরেজি মাধ্যমে পড়ানোর অনুমতি মেলে ২০২১ সালে। ২০২২ সালে ইংরেজি মাধ্যমের পড়ুয়াদের প্রথম ব্যাচ ভর্তি হয়।

An image of a classroom

—প্রতীকী চিত্র।

আর্যভট্ট খান
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ জুন ২০২৩ ০৮:৪৩
Share: Save:

এক দিকে যখন বেশির ভাগ সরকারি, সরকার-পোষিত এবং সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা কমছে, তখন সরকার-পোষিত সিঁথি আরবিটি (রায়বাহাদুর বদ্রিদাস তুলসান) বিদ্যাপীঠে পড়ুয়ার সংখ্যা উল্লেখযোগ্য ভাবে বেড়েছে। স্কুলের শিক্ষকেরা জানাচ্ছেন, পড়ুয়ার সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ, ওই স্কুলে বাংলা মাধ্যমের পাশাপাশি ইংরেজি মাধ্যমেও পড়ানো শুরু হয়েছে। ইংরেজি মাধ্যমে পড়ার তাগিদেই সেখানে বেড়েছে পড়ুয়াদের ভিড়। যা দেখে বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠন বলছে, সরকারি, সরকার-পোষিত এবং সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলগুলিতে বাংলার পাশাপাশি ইংরেজি মাধ্যমে পড়ানোর অনুমোদন দেওয়ার কাজ শুরু করেছিল শিক্ষা দফতর। তাদের প্রশ্ন, এই ধরনের আরও বেশি সংখ্যক স্কুলে ইংরেজি মাধ্যম চালু করার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না কেন? তা হলে তো সরকারি নিয়ন্ত্রণাধীন সমস্ত স্কুলেই সার্বিক ভাবে পড়ুয়ার সংখ্যা বাড়ত।

আরবিটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক সত্যরঞ্জন মান্না জানালেন, তাঁদের স্কুলে বাংলার পাশাপাশি ইংরেজি মাধ্যমে পড়ানোর অনুমতি মেলে ২০২১ সালে। ২০২২ সালে ইংরেজি মাধ্যমের পড়ুয়াদের প্রথম ব্যাচ ভর্তি হয়। সত্যরঞ্জন বলেন,‘‘আমাদের স্কুলের ইংরেজি মাধ্যমে পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত গত বছর ভর্তি হয়েছিল ৭০ জন মতো পড়ুয়া। এ বছর একাদশ শ্রেণি পর্যন্ত ভর্তি হওয়া পড়ুয়ার সংখ্যা ১৫০ ছাড়িয়েছে।’’

সত্যরঞ্জন জানান, তাঁদের স্কুলটি বরাহনগর পুরসভা এলাকার মধ্যে পড়ে। সেখানকার আর কোনও সরকারি স্কুলে বাংলার পাশাপাশি ইংরেজি মাধ্যম নেই। যদিও বেশ কয়েকটি বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুল রয়েছে। সেই সব স্কুলে পড়ানোর খরচ অনেক বেশি। অনেকের ইচ্ছে থাকলেও ওই সমস্ত স্কুলে সন্তানকে পড়াতে পারেন না। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের স্কুলে বাংলা মাধ্যমে ভর্তি হতে ২৪০ টাকা লাগে। আর ইংরেজি মাধ্যমে ভর্তি হতে লাগে ৮৫০ টাকা। ইংরেজি মাধ্যমের জন্য সারা বছরের ৮৫০ টাকা ফি দিতে প্রায় সব অভিভাবকই রাজি আছেন।’’ ইংরেজি মাধ্যমের জন্য স্কুল চত্বরেই আলাদা ভবন রয়েছে। তবে, শিক্ষা দফতর আলাদা শিক্ষক দেয়নি। বাংলা মাধ্যমে যাঁরা ইংরেজিতে দক্ষ, সেই শিক্ষকেরাই ইংরেজি মাধ্যমে পড়াচ্ছেন। সেই সঙ্গে বেশ কয়েক জন ইংরেজি মাধ্যমে পড়াশোনা করা অতিথি শিক্ষক নেওয়া হয়েছে।

বাংলা ও ইংরেজি মাধ্যমে পড়ানোর পদ্ধতিতেও বেশ কিছু পরিবর্তন এনেছে স্কুল। স্কুলের ক্লাস টেস্টে যে সব পড়ুয়া ভাল ফল করছে, তাদের দেওয়া হচ্ছে শংসাপত্র। শিক্ষকেরা জানাচ্ছেন, ক্লাস টেস্টে শংসাপত্র দেওয়া হচ্ছে বলে তা পাওয়ার জন্য পড়ুয়াদের মধ্যে পড়াশোনার তাগিদ বেড়েছে। গরমের ছুটিতেও হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের মাধ্যমে নিয়মিত ক্লাস হচ্ছে।

প্রধান শিক্ষকদের সংগঠন ‘অ্যাডভান্সড সোসাইটি ফর হেডমাস্টার্স অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেসেস’-এর রাজ্য সম্পাদক চন্দন মাইতির প্রশ্ন, ‘‘অভিভাবকদের ইংরেজি মাধ্যমে পড়ানোর উৎসাহ আছে দেখেও সরকার বাংলা মাধ্যমের পাশাপাশি ইংরেজি মাধ্যমের পরিকাঠামো তৈরি করছে না। সরকারি স্কুলে বাংলার পাশাপাশি ইংরেজি মাধ্যমে পড়ানোর পরিকাঠামো তৈরি হলে তো শিক্ষক নিয়োগও হত। কেন স্কুলগুলিতে অতিথি শিক্ষক দিয়ে ইংরেজি মাধ্যমে পড়াতে হবে?’’ শিক্ষা দফতরের এক কর্তার কথায়, ‘‘বাংলার পাশাপাশি ইংরেজি মাধ্যমে পড়ানোর উদ্যোগ শুরু হয়েছে অনেক দিন ধরেই। বেশ কয়েকটি স্কুলে অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। করোনার পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে। ফের এই উদ্যোগ শুরু হবে।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy