(বাঁ দিকে) আরজি কর হাসপাতালের জরুরি বিভাগ। বেলগাছিয়া যুব সম্মিলনীর প্রতিমা (ডান দিকে)। —ফাইল ছবি।
আরজি কর হাসপাতালের ইমার্জেন্সি ভবনের ঠিক উল্টো দিকের রাস্তায় রাজ্য সরকার প্রদত্ত ‘দুর্গার ভান্ডার’ অর্থাৎ ৮৫ হাজার টাকা পুজো অনুদান প্রত্যাখ্যাত হল। বেলগাছিয়া যুব সম্মিলনী শারদোৎসব সমিতি সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তাদের দোরগোড়ায় যে মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে গিয়েছে, যা নিয়ে গোটা রাজ্য, দেশ এবং বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত নাগরিক আন্দোলনে উত্তাল, সেই ঘটনার প্রতিবাদস্বরূপ তারা রাজ্য সরকার প্রদত্ত ৮৫ হাজার টাকা নেবে না। পুজো কমিটির তরফে বলা হয়েছে, আর্থিক কিছু অসুবিধা স্বীকার করে নিয়েই তারা এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।
এ বার বেলগাছিয়া যুব সম্মিলনীর পুজো ৮০ বছরে পদার্পণ করছে। উদ্যোক্তাদের তরফে জানানো হয়েছে, তাঁদের পরিকল্পনা ছিল, বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে পুজোকে অন্যান্য বারের থেকে আলাদা করে উপস্থাপিত করার। কিন্তু পুজো হচ্ছে একেবারে নমো নমো করে। পুজো কমিটির আহ্বায়ক রমেশ পাণ্ডে আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, ‘‘আমাদের দোরগোড়ায় এমন একটা ঘটনা ঘটে গিয়েছে। তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, রাজ্য সরকারের দেওয়া অনুদান গ্রহণ করব না।’’ তিনি আরও জানিয়েছেন, ভৈরব মুখোপাধ্যায় লেনে তাঁদের ক্লাবের পাশেই চায়ের দোকানে, পুরনো বাড়ির রোয়াকে আরজি করের জুনিয়র ডাক্তারেরা বসেন, নিজেদের মধ্যে গল্পগুজবও করেন। নির্যাতিতা চিকিৎসকও ওই পাড়ায় আসতেন, বসতেন। তাঁর নৃশংস এবং মর্মান্তিক মৃত্যুর পরে ‘মানবিক এবং সংবেদনশীল’ দৃষ্টিভঙ্গি থেকেই তাঁরা এ বার অনাড়ম্বর ভাবে পুজো করতে চলেছেন।
ইতিমধ্যেই স্থায়ী দুর্গা বেদিতে প্রতিমা এসে গিয়েছে। রমেশ বলেন, ‘‘আমরা কোনও বারই থিমের দিকে যাই না। সাবেকিআনা বজায় রেখে পুজো করি। কিন্তু এ বার শুধু পুজো করতে হয় বলেই করা হচ্ছে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘সপ্তমী এবং নবমীদের দিন প্রতি বছর পঙ্ক্তিভোজন হয়। কিন্তু এ বার সে সব কিছুই হচ্ছে না। একই সঙ্গে হচ্ছে না সাংস্কৃতিক উৎসবও।’’ একই সঙ্গে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, আরজি কর হাসপাতালের সামনে কোনও ব্যানার বা হোর্ডিং প্রদর্শিত হবে না।
এর আগে বিভিন্ন জেলার বেশ কিছু পুজো কমিটি আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদস্বরূপ রাজ্যের দেওয়া ‘দুর্গার ভান্ডার’ প্রত্যাখ্যান করেছে। সেই তালিকায় রয়েছে পানিহাটিতে নির্যাতিতার বাড়ির পাশের পাড়ার পুজো কমিটিও। এ বার সেই তালিকায় যুক্ত হল আরজি করের একেবারে উল্টো দিকের পুজো কমিটির নামও। যদিও ওই পুজো কমিটির তরফে এ নিয়ে বিশেষ প্রচার করা হচ্ছে না। তবে এলাকার মানুষজনের উদ্দেশে একটি বার্তা ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। যে বার্তায় বলা হয়েছে, ‘‘দুয়ারে দুঃসময়।’’ আরজি করের উল্টো দিকের পাড়ায় শুধুই ‘পুজো’ হবে। ‘উৎসব’ নয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy