E-Paper

জবরদখল আর অবৈধ পার্কিংয়ে বিশ বাঁও জলে সৌন্দর্যায়ন প্রকল্প 

রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০২২ সালের নভেম্বরে রেল এবং রাজপুর-সোনারপুর পুরসভার মধ্যে গড়িয়া স্টেশন সংলগ্ন চার নম্বর ওয়ার্ডে একটি ঝিল ও সংলগ্ন রাস্তার সৌন্দর্যায়ন সংক্রান্ত প্রকল্পের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

বেহাল: গড়িয়া স্টেশন সংলগ্ন রাজপুর-সোনারপুর পুরসভার চার নম্বর ওয়ার্ডে রেল ও পুরসভার যৌথ সৌন্দর্যায়ন প্রকল্প এলাকার অবস্থা এমনই।

বেহাল: গড়িয়া স্টেশন সংলগ্ন রাজপুর-সোনারপুর পুরসভার চার নম্বর ওয়ার্ডে রেল ও পুরসভার যৌথ সৌন্দর্যায়ন প্রকল্প এলাকার অবস্থা এমনই। —নিজস্ব চিত্র।

শুভাশিস ঘটক

শেষ আপডেট: ০১ জুলাই ২০২৪ ০৮:১৭
Share
Save

এক দিকে এলাকা জুড়ে অবৈধ পার্কিং। অন্য দিকে, মাছ এবং আনাজ বাজারের স্তূপাকৃতি বর্জ্য। অভিযোগ, এই দুইয়ের জেরে অথৈ জলে যেতে বসেছে রেল এবং রাজপুর সোনারপুর পুরসভার যৌথ উদ্যোগে হতে চলা সৌন্দর্যায়ন প্রকল্প। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, প্রকল্পের জন্য জমি বরাদ্দ এবং টাকা অনুমোদন হয়ে যাওয়ার পরেও কাজ চলছে অত্যন্ত ঢিমে গতিতে। এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, জবরদখলের মূল মাথা শাসকদলেরই এক পুরপ্রতিনিধি। যদিও পুলিশ জানিয়েছে, প্রকল্প এলাকায় জবরদখল এবং অবৈধ পার্কিং নিয়ে কোনও অভিযোগ তাদের কাছে জমা পড়েনি।

রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০২২ সালের নভেম্বরে রেল এবং রাজপুর-সোনারপুর পুরসভার মধ্যে গড়িয়া স্টেশন সংলগ্ন চার নম্বর ওয়ার্ডে একটি ঝিল ও সংলগ্ন রাস্তার সৌন্দর্যায়ন সংক্রান্ত প্রকল্পের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ঠিক হয়, সোনারপুর উত্তরের বিধায়ক তহবিলের আর্থিক অনুমোদনে ওই প্রকল্প রূপায়িত হবে। সেই মতো রেলের তরফে রাস্তা ও ঝিল পুরসভাকে হস্তান্তর করা হয়। সৌন্দর্যায়ন প্রকল্পের জন্য সোনারপুর উত্তরের বিধায়ক ফিরদৌসী বেগম তাঁর উন্নয়ন তহবিল থেকে ১ কোটি ২০ লক্ষ টাকা বরাদ্দও করেন।

কিন্তু স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, গত দু’বছর ধরে সৌন্দর্যায়নের কাজ চলছে বটে। তবে, কাজের গতি অত্যন্ত শ্লথ। সব চেয়ে বড় কথা, ঝিল সংলগ্ন রাস্তা সম্প্রসারণের কাজ শুরু হওয়ার পরেই সেখানে গজিয়ে উঠেছে গাড়ি, মোটরবাইক ও সাইকেলের অবৈধ পার্কিং। সেই সঙ্গে সেখানে ফেলা হচ্ছে বাজারের যাবতীয় বর্জ্য। যার ফলে সৌন্দর্যায়ন তো দূর, প্রকল্প এলাকা এখন হয়ে উঠেছে কার্যত নরক।

স্থানীয় সূত্রের খবর, ওই রাস্তা দিয়ে রাজপুর-সোনারপুর পুরসভার চার ও পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের কয়েক হাজার বাসিন্দা যাতায়াত করেন। কিন্তু জবরদখল হওয়ার কারণে প্রায় দেড় কিলোমিটার রাস্তার পরিসর এক-এক জায়গায় এক-এক রকম হয়ে গিয়েছে। সবচেয়ে
খারাপ অবস্থা প্রকল্প এলাকায় ঢোকার মুখে।

রেলের কর্তাদের বক্তব্য, সংশ্লিষ্ট সৌন্দর্যায়ন প্রকল্প নিয়ে যে বৈঠক হয়েছিল, সেখানে উপস্থিত ছিলেন বিধায়ক এবং পুরসভার ইঞ্জিনিয়ারেরা। ওই বৈঠকে রেলের তরফে প্রস্তাব দেওয়া হয়, প্রকল্প এলাকায় থাকা সব রকম দখল তারাই সরিয়ে দেবে। কিন্তু রেলকর্তাদের দাবি, বিধায়ক এবং পুর ইঞ্জিনিয়ারেরা পাল্টা আশ্বাস দেন, দখল সরানোর বিষয়টি তাঁরা নিজেরাই দেখে নেবেন।

রেলকর্তারা আরও জানাচ্ছেন, তাঁরা তাঁদের নকশা অনুযায়ী ওই ঝিল ও সংলগ্ন রাস্তা পুরসভাকে হস্তান্তর করেছিলেন। সেই সঙ্গে পুরসভার সঙ্গে চুক্তিতে এ-ও ঠিক হয়েছিল, সৌন্দর্যায়ন প্রকল্পে কোনও ব্যবসায়িক স্বার্থ থাকবে না এবং জবরদখল বরদাস্ত করা হবে না। কিন্তু রেলের অভিযোগ, প্রায় দু’বছর ধরে কাজ চলছে। অথচ, জমির নকশা বুঝিয়ে দেওয়ার পরেও পুরসভার তরফে প্রকল্প এলাকা নির্ধারণ করে কোনও সীমানা পাঁচিল পর্যন্ত দেওয়া হয়নি।

সৌন্দর্যায়ন প্রকল্পে জবরদখলের অভিযোগের বিষয়ে সোনারপুর উত্তরের বিধায়ক ফিরদৌসী বেগম বলেন, ‘‘জবরদখল ঠেকাতে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করেছি। সাধ্যমতো জবরদখল সরাতে চেষ্টা করেছি।’’ কিন্তু বেআইনি পার্কিং ও জবরদখল নিয়ে তিনি পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন কি না, তা নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি বিধায়ক।

প্রকল্পের ভারপ্রাপ্ত পুর ইঞ্জিনিয়ার শুভাশিস বসু বলেন, ‘‘নানা ভাবে জবরদখল সরানোর চেষ্টা হয়েছে। কিন্তু আবার দখল হয়ে যাচ্ছে।’’ জবরদখল হটাতে পুরসভার তরফে কি থানায় অভিযোগ করা হয়েছিল? সেই বিষয়ে অবশ্য নীরব থেকেছেন শুভাশিসও।

স্থানীয়দের অভিযোগ, শাসক দলের কয়েক জন পুরপ্রতিনিধি ও নেতার মদতে জবরদখল ও
বেআইনি পার্কিংয়ের এই রমরমা চলছে। বিধায়ক ও পুরকর্তারা সব জেনেও পদক্ষেপ করছেন না। নরেন্দ্রপুর থানা সূত্রে অবশ্য দাবি, এই বিষয়ে তাদের কাছে অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ এলেই আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Illegal Parking encroachment

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।