ফাইল চিত্র।
শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ডে কলকাতা পুরসভা পরিচালিত স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে একাধিক চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী ইতিমধ্যেই সংক্রমিত হয়েছেন। সূত্রের খবর, এখনও পর্যন্ত পুর স্বাস্থ্য দফতরে সব মিলিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা ১০০ ছুঁইছুঁই। এই অবস্থায় ওয়ার্ডের স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে রোগীদের দৈনন্দিন পরিষেবা দেওয়াই দুষ্কর হয়ে দাঁড়িয়েছে। যদিও পুরসভার তরফে দাবি করা হয়েছে, স্বাস্থ্যকর্মীরা আক্রান্ত হলেও রোগী-পরিষেবায় তার প্রভাব পড়েনি। মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘‘পুর স্বাস্থ্য দফতরে অনেকে আক্রান্ত হয়েছেন ঠিকই। তবে আশপাশের ওয়ার্ড থেকে স্বাস্থ্যকর্মী এনে পরিষেবা স্বাভাবিক রাখা হয়েছে।’’
শহরের পুর স্বাস্থ্য ক্লিনিকগুলিতে একের পর এক চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী আক্রান্ত হওয়ায় চিন্তা বাড়ছে পুরমহলে। কারণ, কোভিডের প্রতিষেধক দেওয়া থেকে শুরু করে করোনা পরীক্ষা, পড়ুয়াদের প্রতিষেধক প্রদান, শিশুদের প্রতিষেধক প্রদান কর্মসূচি— সমস্ত কিছু হয়ে থাকে কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরের মাধ্যমেই। দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘যে হারে আমাদের কর্মীরা আক্রান্ত হচ্ছেন, তাতে এখনও পর্যন্ত পরিষেবা মোটের উপরে স্বাভাবিক থাকলেও আগামী দিনে কী হবে, কিছু বলা যাচ্ছে না।’’
পুরসভা সূত্রের খবর, ১১ নম্বর ওয়ার্ডের পুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রের প্রায় সব চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীই সংক্রমিত। আশপাশের ওয়ার্ড থেকে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী এনে ওই ওয়ার্ডের স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পরিষেবা চালু রাখা হয়েছে। পুরসভার ১৬টি বরোর চার জন এগজিকিউটিভ হেলথ অফিসার করোনায় সংক্রমিত।
তিন নম্বর বরোর চেয়ারম্যান অনিন্দ্যকিশোর রাউত বলেন, ‘‘আমার বরোয় প্রায় ৩০ জন স্বাস্থ্যকর্মী আক্রান্ত। বরোর এগজিকিউটিভ হেলথ অফিসারও সংক্রমিত হয়েছেন। তবু আমরা সব ওয়ার্ডে স্বাস্থ্য পরিষেবা স্বাভাবিক রাখার আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছি।’’ পুরসভার সদর দফতরের একাধিক পদস্থ স্বাস্থ্য আধিকারিক আক্রান্ত হওয়ায় অন্য আধিকারিকদের উপরে চাপ বাড়ছে। ডেপুটি চিফ মিউনিসিপ্যাল হেলথ অফিসার অমিতাভ চক্রবর্তী সপরিবার করোনা আক্রান্ত। অমিতাভবাবু প্রতিষেধকের দায়িত্বে ছিলেন। তিনি ছাড়াও স্বাস্থ্য দফতরের উপদেষ্টা তপনকুমার মুখোপাধ্যায় সংক্রমিত হয়ে হোম আইসোলশনে রয়েছেন। এ ছাড়াও কলকাতা পুরসভার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের স্ত্রী ও ছেলে করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় হোম আইসোলেশনে রয়েছেন ওই পুরকর্তা।
পুর স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, সে ভাবে সংক্রমিত না হলেও অনেকেই করোনার উপসর্গ নিয়ে বাড়িতে রয়েছেন। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তাঁদের জ্বর ও সর্দি-কাশি রয়েছে।
অতিমারির দ্বিতীয় ঢেউয়ে পুরসভার জন্ম-মৃত্যুর শংসাপত্র প্রদান বিভাগের একাধিক কর্মী আক্রান্ত হয়েছিলেন। তৃতীয় ঢেউয়ে ইতিমধ্যেই ওই বিভাগের চার জন সংক্রমিত হওয়ায় বাকি কর্মীদের মধ্যে আতঙ্ক বাড়ছে। বিভাগের এক কর্মীর কথায়, ‘‘করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে বেশির ভাগ কর্মী আক্রান্ত হওয়ায় আমাদের খুবই ভুগতে হয়েছিল। এখন ইতিমধ্যেই কয়েক জন সংক্রমিত হওয়ায় রীতিমতো আতঙ্কে আছি।’’
আতঙ্কে রয়েছেন কলকাতা পুরসভার সদর দফতরে মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের কার্যালয় এবং তার সংলগ্ন অফিসের কর্মী-আধিকারিকেরাও। ইতিমধ্যেই মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের কার্যালয়ের আশপাশে থাকা চার পদস্থ আধিকারিক সংক্রমিত হয়ে হোম আইসোলশনে রয়েছেন। খোদ পুর কমিশনার এবং মেয়রের অফিসের আপ্ত সহায়ক-সহ তিন কর্মী করোনায় আক্রান্ত। সার্বিক পরিস্থিতি দেখে পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিক খানিকটা ঠাট্টাচ্ছলেই বলছেন, ‘‘যা পরিস্থিতি, তাতে পুরসভার সদর দফতরকেই না কন্টেনমেন্ট জ়োনের আওতায় ফেলতে হয়!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy