জোরকদমে: বারাসত স্টেশনে তৈরি হয়েছে চলমান সিঁড়ি বসানোর স্তম্ভ। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক
যাত্রী-স্বাচ্ছন্দ্যের দিকে লক্ষ রেখে সংস্কার করা হচ্ছে ফুট ওভারব্রিজের, তৈরি হচ্ছে চলমান সিঁড়ি, প্রবীণদের জন্য লিফট। যাত্রীরা রোদ-জলে অসুবিধায় যাতে না পড়েন, তার জন্য যে সব জায়গায় ছাউনি ছিল না, সেখানে তৈরি হচ্ছে ছাউনি। স্টেশন চত্বর ঘিরে দেওয়া হচ্ছে গার্ডরেল দিয়ে। এ ছাড়াও, দেওয়ালে লাগানো হচ্ছে কলকাতার ঐতিহ্যপূর্ণ স্থান, মনীষীদের ছবি। দীর্ঘদিন লোকাল ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকার সুযোগে শিয়ালদহের ধাঁচে এ ভাবেই সেজে উঠছে শিয়ালদহ-বনগাঁ শাখার বারাসত জংশন স্টেশন। রেল সূত্রের খবর, বারাসত স্টেশনকে আগেই মডেল স্টেশন হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছিল। এ বার স্টেশনের নানা পরিকাঠামোর উন্নয়নের পাশাপাশি সৌন্দর্যায়নের কাজ চলছে জোরকদমে। আগামী বুধবার থেকে ট্রেন চলাচল ফের শুরু হলে নতুন পরিকাঠামোর কয়েকটির সুবিধা পাবেন যাত্রীরা।
এত দিন ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় স্টেশনে ভিড় নেই বললেই চলে। তাই সুষ্ঠু ভাবে সব কাজ করা সম্ভব হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক নিখিল চক্রবর্তী। তিনি আরও বলেন, ‘‘চলমান সিঁড়ি, বয়স্কদের জন্য লিফট বসানো ছাড়াও অকারণ স্টেশনে ঢুকে পড়ার প্রবণতা আটকাতে বারাসত স্টেশন গার্ডরেল দিয়ে ঘিরে দেওয়া হচ্ছে।’’
রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, দমদমের পরে শিয়ালদহ-বনগাঁ শাখার বারাসতই একমাত্র জংশন স্টেশন যেখানে চলমান সিঁড়ি তৈরি হচ্ছে। এই প্রসঙ্গে ওই স্টেশনের এক আধিকারিক জানান, জংশন হিসেবে বারাসত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন। শিয়ালদহ থেকে এসে এখান থেকেই বনগাঁ এবং বসিরহাটের লাইন ভাগ হয়ে যায়। ফলে এই স্টেশনে যাত্রীদের চাপও বেশি থাকে। তাই চলমান সিঁড়ি বসানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বারাসত স্টেশনে গিয়ে দেখা গেল, অবৈধ নির্মাণ ভেঙে লোহার গার্ডরেল দিয়ে ঘিরে দেওয়া হচ্ছে গোটা স্টেশন চত্বর। এক নম্বর থেকে পাঁচ নম্বর প্ল্যাটফর্ম পর্যন্ত চলমান সিঁড়ি তৈরির কাজও প্রায় শেষ। পূর্ব রেল সূত্রের খবর, অসচেতন ভাবে লাইন পারাপারের জন্য দুর্ঘটনায় বহু মানুষের প্রাণহানি হয়। সেই সমস্যার সমাধানে গার্ডরেল দিয়ে স্টেশনের চার দিক ঘিরে ফেলা হচ্ছে। তবে স্টেশনের এ-পার থেকে ও-পারে যাওয়ার জন্য পুরনো ফুটব্রিজটিই ব্যবহার করতে দেওয়া হচ্ছে।
রেল সূত্রের খবর, স্টেশনের সর্বত্র ছাউনি না থাকায় বৃষ্টি হলেই ভিজতে হত অনেক যাত্রীকে। সেই সমস্যা থেকে বাঁচতে পুরো স্টেশনে ছাউনি নির্মাণের কাজও চলছে। বারাসত স্টেশনটি শুধুমাত্র সাজিয়ে তুলতেই ৫ কোটি টাকা খরচ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পূর্ব রেল। এর বাইরে রয়েছে নির্মাণের খরচ। কিছু দিনের মধ্যেই সমস্ত কাজ শেষ হয়ে যাবে বলে জানা গিয়েছে।
এই কাজের প্রশংসা করছেন নিত্যযাত্রী থেকে শুরু করে স্থানীয় বাসিন্দারা। বারাসত কলেজের ছাত্র রাজা দে বলেন, ‘‘স্টেশন চত্বর ঘিরে দেওয়ায় অকারণে লোকের আনাগোনা, স্টেশনে বসে আড্ডা দেওয়া কমবে। ফুটব্রিজ ব্যবহার করলে দুর্ঘটনার আশঙ্কা কমবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy