সেই রাগের বশেই সে বৃদ্ধার গলায় ছুরি চালিয়েছে কি না, তা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। কারণ, পাড়ার লোকজনের সঙ্গে কথা বলে পুলিশ জেনেছে, ওই কিশোরের অল্পেই উত্তেজিত হয়ে পড়ার স্বভাব রয়েছে।
মর্মান্তিক: খুনের পরে ঘটনাস্থলে রক্তের দাগ। বৃহস্পতিবার, বাগুইআটির অর্জুনপুরে। নিজস্ব চিত্র
লোহার গেটের সামনে বৃহস্পতিবার দুপুরেও চাপ চাপ রক্তের দাগ। বুধবার রাতে গলায় ছুরির আঘাত নিয়ে ওই গেটের সামনেই রক্তাক্ত অবস্থায় ছটফট করতে করতে প্রাণ হারিয়েছেন গৃহকর্ত্রী বৃদ্ধা। সেই ঘটনার পরে ১৩ বছর বয়সি প্রতিবেশী কিশোরকে ধরা হলেও কেন সে বৃদ্ধাকে খুন করল, তা নিয়ে রহস্য রয়ে গিয়েছে। ওই কিশোরের বাড়ি থেকেই খুনে ব্যবহৃত ছুরিটি উদ্ধার করেছে বাগুইআটি থানার পুলিশ।
নিহত বৃদ্ধার নাম সরস্বতী সরকার (৭০)। থাকতেন বাগুইআটি থানা এলাকার অর্জুনপুরের পশ্চিমপাড়ায়। পুলিশ জানিয়েছে, গলায় ছুরির কোপ মারার ফলেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনায় প্রতিবেশী ওই কিশোরকে ধরার পাশাপাশি খুনের মামলাও রুজু করা হয়েছে। তদন্তকারীদের দাবি, সে-ই যে ছুরি মেরে বৃদ্ধাকে খুন করেছে, ওই কিশোর তা স্বীকারও করেছে। তবে কেন সে ওই কাণ্ড ঘটাল, সে ব্যাপারে স্পষ্ট করে কিছু জানায়নি।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, ওই কিশোর তাঁর গলায় ছুরি বসিয়ে দেওয়ার পরে গুরুতর জখম সরস্বতীদেবী নিজের ক্ষতস্থানে গামছা চেপে ধরে ঘরের বাইরে বেরিয়ে এসে প্রতিবেশীদের সাহায্য চেয়ে আর্তনাদ করতে থাকেন। প্রতিবেশীদের কেউ কেউ স্থানীয় ক্লাবে খবর দিতে ছুটলেও বৃদ্ধাকে সাহায্য করতে এগিয়ে যাননি বলে অভিযোগ। তদন্তকারীদের ধারণা, সময় মতো হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে বৃদ্ধা হয়তো বেঁচে যেতেন। তবে আহত সরস্বতীদেবী ওই কিশোরের নামে অভিযোগ করতে করতেই মারা যান বলে জেনেছে পুলিশ।
বৃদ্ধার ছেলে বিমল সরকার দক্ষিণ দমদম পুরসভার কর্মী। এ দিন কাঁদতে কাঁদতে তিনি বলেন, ‘‘ওই ছেলেটি অন্যান্য দিনের মতো বুধবার রাতেও আইপিএল দেখতে আমাদের বাড়ি গিয়েছিল। আমি বাড়িতে ছিলাম না। প্রতিবেশীদের ফোন পেয়ে বাড়িতে ছুটে গিয়ে দেখি, মা ঘরের সামনে পড়ে রয়েছেন। কেউ সময় মতো হাসপাতালে নিয়ে গেলে মা হয়তো বেঁচে যেতেন। মা ছাড়া আর কেউ ছিলেন না আমার।’’
ঘটনার পরে ওই কিশোর নিজের বাড়িতে পালায়। পরে সেখান থেকেই তাকে ধরা হয়। তদন্তকারীদের দাবি, ওই কিশোরের বক্তব্যে অনেক অসঙ্গতি রয়েছে। সে পুলিশের সঙ্গে সহযোগিতা না করায় খুনের প্রকৃত কারণ এখনও জানতে পারেনি পুলিশ।
পুলিশ জানায়, দু’টি পরিবারই আগে দমদমে থাকত। তারা পরস্পরের পরিচিত। অর্জুনপুরেও কাছাকাছি বাড়ি তাদের। ছেলেটি মাঝেমধ্যেই টিভি দেখতে বৃদ্ধার বাড়িতে যেত।
পুলিশ সূত্রের দাবি, বৃদ্ধার গলায় যেমন ছুরির ক্ষত পাওয়া গিয়েছে, তেমনই কিশোরটির আঙুলেও আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ওই কিশোর জেরায় পুলিশকে জানিয়েছে, বৃদ্ধা নাকি তাকে গালিগালাজ করেছিলেন এবং তার দিকে ছুরি ছুড়েছিলেন। সেই রাগের বশেই সে বৃদ্ধার গলায় ছুরি চালিয়েছে কি না, তা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। কারণ, পাড়ার লোকজনের সঙ্গে কথা বলে পুলিশ জেনেছে, ওই কিশোরের অল্পেই উত্তেজিত হয়ে পড়ার স্বভাব রয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy