ফাঁকা: বাগবাজারে শুরু হয়নি মণ্ডপের কোনও কাজই। শনিবার। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী।
মণ্ডপ তৈরির কাজ শুরু তো দূরের কথা, মাঠে এখনও বাঁশই পড়েনি। শুরু হয়নি প্রতিমার কাঠামো তৈরিও। স্পনসর জোগাড় করা বা বাজেট চূড়ান্ত করার প্রক্রিয়াও আটকে গিয়েছে। কারণ, বোঝাই যাচ্ছে না বাগবাজার সর্বজনীন দুর্গোৎসব ও প্রদর্শনীর পুজোটা আদতে করবেন কারা। নেতৃত্ব ঠিক করতে প্রায় ১২ বছর বাদে তাই ভোট হচ্ছে বাগবাজারে।
ওই পুজো কমিটি সূত্রের খবর, আজ, রবিবার বিকেল ৫টা থেকে ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার কথা। গণনাপর্ব শেষে ফল ঘোষণাও হবে আজই। বাগবাজার সর্বজনীন দুর্গোৎসব ও প্রদর্শনীর ঠিকানা আসলে ওই চত্বরের একটি স্কুল। সেখানেই ভোটগ্রহণ হওয়ার কথা। পুজোর এক উদ্যোক্তা জানান, ১৯৩২ সাল নাগাদ সোসাইটি অ্যাক্টে নথিভুক্ত করা হয় বাগবাজারের পুজো। লাইফ মেম্বার এবং সোসাইটি মেম্বার বলে দু’টি ভাগ রয়েছে সদস্যদের। রয়েছে ১৫১ জনের জেনারেল কাউন্সিল। কাউন্সিলের সদস্যরাই ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবেন সম্পাদক, সভাপতি ছাড়াও আরও ১২ জনের কার্যনির্বাহী কমিটিকে।
এক উদ্যোক্তার কথায়, ‘‘এ বার এই পুজোর ১০৪তম বছর। প্রতি বছর এক বার মনোনয়নের ভিত্তিতে সম্পাদক, সভাপতি এবং কার্যনির্বাহী কমিটি ঠিক হয়। তবে এর মধ্যেও ভোট হয়েছে ১৯৯৬, ২০০৪, ২০০৭ এবং ২০১০ সালে। ১২ বছর পরে ফের ভোট হচ্ছে এ বার।’’ বাগবাজার চত্বরে কান পাতলেই শোনা যায়, ভোটের মূল কারণ দুই গোষ্ঠীর স্বার্থের দ্বন্দ্ব। এক দলকে সরাসরি সমর্থন করছেন স্থানীয় এক বিধায়ক। তাঁর মুখ্য নির্বাচনী এজেন্টই সম্পাদক পদে ভোটে দাঁড়িয়েছেন।
গত লোকসভা ভোটের পরে শহরের দুর্গাপুজোয় কোন রাজনৈতিক দলের প্রভাব বেশি থাকবে, এ নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছিল। বহু পুজোতেই কমিটির রাশ ধরতে একাধিক রাজনৈতিক দল লড়াইয়ে নেমেছে বলে অভিযোগ উঠেছিল। কিন্তু বিধানসভা ভোটের ফলাফল প্রকাশের পরে সবই একপেশে হয়ে যায় বলে দাবি সংশ্লিষ্ট মহলের। এ নিয়ে আলোচনাও চাপা পড়ে যায়। এ বার ফের এমন আলোচনা উঠে আসছে বাগবাজারের পুজো ঘিরে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুজো কমিটির অন্যতম এক কর্তা বললেন, ‘‘শহরে বহু পুজোই ব্যক্তিনির্ভর। মানুষের কাছেও সেই পুজোর নামের থেকে বড় হয়ে উঠেছে ওটা অমুক দাদার পুজো বা তমুক নেতার পুজো হিসাবে। বাগবাজার আলাদা ছিল বরাবরই। এখনও পুজোর প্রচার-ব্যানারে দুর্গা প্রতিমা ছাড়া আর এক জনেরই ছবি থাকে। তিনি সুভাষচন্দ্র বসু। মেয়র থাকাকালীন এই পুজো ঘিরে তাঁর অবদান ভোলার নয়। অন্য কোনও নেতা-নেত্রীর ছবি দিয়ে পুজোর প্রচার হবে, তা ভাবা যায় না।’’ অন্য গোষ্ঠীর সদস্যের পাল্টা দাবি, ‘‘এলাকায় এখন যাঁরা রাতদিন পাশে থাকেন, তাঁদের উপরেই পুজোর ভার ছেড়ে দেওয়া ভাল। তা ছাড়া, বহুদিন ধরে এক ভাবে চলতে থাকা পুজোর একটা মেকওভার প্রয়োজন।’’ বাগবাজারের পুজোর সদস্য, ৮৫ বছরের এক বৃদ্ধা বললেন, ‘‘ভোট দিয়েই নিজের মতামত জানাব। কিন্তু এ সবের মধ্যে পুজোর কাজ শুরু না হওয়াটা অত্যন্ত দুঃখের। ভোটে যাঁরাই জিতুন, তাঁদের কিন্তু এই দেরির জন্য জবাবদিহি করতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy