বন্ধ এসক্যালেটর। পাতালপথ থেকে রাস্তায় পৌঁছতে তাই সিঁড়ি ভাঙতে হচ্ছে বয়স্কদেরও। বুধবার, চাঁদনি চক স্টেশনে। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য
আবার!
চাঁদনি চক মেট্রো স্টেশনের বড় এসক্যালেটরের সামনে গিয়েই মুখ থেকে বেরিয়ে গেল শব্দটা। শুধু আমার নয়, অনেকেরই। বিখ্যাত চিনে রেস্তরাঁর দিকে বেরোনোর এসক্যালেটরটি আবারও বন্ধ। সত্যি কথা বলতে কী, প্রায় দু’মাস অন্তর হুট করে এসক্যালেটরটি দিন পাঁচেকের জন্য বন্ধ দেখাটাই আমাদের মতো নিত্যযাত্রীদের কাছে স্বাভাবিক হয়ে দাঁড়িয়েছে। যাত্রীর প্রবল চাপে যন্ত্র বিগড়ে যেতেই পারে। তাই বলে এত ঘন ঘন? আর এটি বন্ধ থাকলে আমার মতো বয়স্ক মানুষের কী অবস্থা হয়? কারণ, এই এসক্যালেটরটি কাজ না করলে তো সিঁড়ি ভাঙতে হচ্ছে। অবসর নেওয়ার পরে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থায় কাজ করছি। কিন্তু সত্তর ছুঁইছুঁই বয়সে শরীর তো আগের মতো নেই। হাঁটুতে ব্যথা। হার্টেরও নানা সমস্যা।
শুধু আমার বয়সিদের কথাই বা বলি কেন? আমাদের থেকে কম বয়সিরাও সিঁড়ি ভাঙতে গিয়ে হাঁফাচ্ছেন, দাঁড়িয়ে দম নিচ্ছেন। দরদর করে ঘামছেন। দেখলে ভয় করে এক-এক সময়ে। অসুস্থ, অন্তঃসত্ত্বারাও আছেন। আমার চেয়ে বেশি বয়সিরাও আছেন। লাঠি নিয়ে সিঁড়ি ভাঙছেন। আর এই গরম। লোকাল ট্রেনে তেতেপুড়ে এসে এই দুর্ভোগ। সুস্থ মানুষেরই অসুস্থ হয়ে পড়ার জোগাড়। আর কবে নতুন এসক্যালেটর বসবে, তা অন্তত কোথাও লেখা রয়েছে বলে তো চোখে পড়েনি। কর্তৃপক্ষের কি কোনও দায়িত্বই নেই আমাদের প্রতি? এসক্যালেটর বন্ধ হবে বলে আগে কোনও ঘোষণা নেই, কবে চালু হবে, সে ঘোষণাও নেই। ফলে, চলমান সিঁড়ি বন্ধের হয়রানি চলতেই থাকে।
হালে নতুন একটি বিজ্ঞাপন মেট্রোর কামরায় চোখে পড়ছে। একটি সার্চ ইঞ্জিনের বিজ্ঞাপন— ‘সিট পেতে অসুবিধা হচ্ছে? ডিফিকাল্টি ইন ফাইন্ডিং সিটস?’’ এই দুর্ভোগ চলতে থাকলে হাসপাতাল, হাঁটুর ব্যথার স্প্রে বা চিকিৎসার ভাল বিজ্ঞাপন পেতেই পারে মেট্রো।
এখন আর একটি দুর্ভোগ বেড়েই চলেছে। ট্রেন উধাও! আমাদের জুনিয়র পি সি সরকার ট্রেন উধাও করে দিতে পারেন। তাঁর বাবাও এই জাদু দেখাতেন। তবে তা আগেভাগে বলে-টলে, লোকে তা দেখতে যেত। মেট্রোয় তো না বলে-কয়ে ট্রেন হাওয়া! বিশেষত দুপুর বা রাত ৯টার পরে। সকালে ঘোর অফিস-সময়েও হচ্ছে। ট্রেন ধরবেন বলে দাঁড়িয়ে আছেন বা হুড়মুড় করে প্ল্যাটফর্মে এসে গিজগিজে ভিড়ের মধ্যে পড়লেন। কোথায় ট্রেন? কোনও ঘোষণা নেই, কিছু নেই, হঠাৎ বোর্ডে চোখ পড়ল, দেখলেন পরবর্তী ট্রেনের সময় বদলে গিয়েছে।
আর যে ট্রেনের আসার কথা ছিল? ভ্যানিশ!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy