Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪

নোটের গেরোয় ‘মন্দ’ কপাল জ্যোতিষীদেরও

চেম্বার সাজানোই আছে। ঘরে এসে নগদ দিলেই মিনিট কয়েকে বাতলে দেবেন, কপালে কী আছে। কিন্তু কেমন যাচ্ছে সেই জ্যোতিষীদের কপাল? উত্তরটা এক কথায় বললেন, একেবারেই পাথর চাপা।

দীক্ষা ভুঁইয়া
শেষ আপডেট: ১৮ নভেম্বর ২০১৬ ০০:০০
Share: Save:

চেম্বার সাজানোই আছে। ঘরে এসে নগদ দিলেই মিনিট কয়েকে বাতলে দেবেন, কপালে কী আছে। কিন্তু কেমন যাচ্ছে সেই জ্যোতিষীদের কপাল? উত্তরটা এক কথায় বললেন, একেবারেই পাথর চাপা।

কারণ চেকে বা কার্ডে লেনদেন যে চলেই না সে সব চেম্বারে। কড়কড়ে খুচরো নোটই দিতেই হবে চাকরি বা বিয়ের ভবিষ্যৎ শুনতে। কিন্তু বিশ্বাস যতই থাক জ্যোতিষ শাস্ত্রে, নগদে টান পড়ায় ভবিষ্যৎ ছেড়ে বর্তমানের সঙ্কট সামলাতেই যে এখন ব্যস্ত শহর। নগদ-সঙ্কটের দিনে হাতে আসা কয়েকটা মাত্র নোট জ্যোতিষীর হাতে তুলে দিতে আসছেন না প্রায় কেউই। বৃহস্পতিবার শহরের জ্যোতিষ পাড়ায় গিয়ে দেখা গেল, সেখানে কার্যত থমকেই গিয়েছে ভাগ্য-বিচারের ব্যবসা। নগদ-সঙ্কটের গেরোয় যেন এ বার আটকে গিয়েছে জ্যোতিষীদেরই ভাগ্য। তাঁদের অফিসে ক’দিন ধরে প্রায় মাছি তাড়ানোর অবস্থা।

মহাত্মা গাঁধী রোডের উপরে নামী দুই জ্যোতিষীর অফিস। সাধারণত ভাগ্য জানতে গেলে আগে থেকে সময় নিয়ে তবেই যাওয়ার রেওয়াজ সে সব অফিসের। আগে থেকে নাম লেখানো না থাকলে মোটেও জোটে না জ্যোতিষীর দেখা। কিন্তু পাঁচশো আর হাজারের নোট বাতিলের মরসুমে রোজের চেনা ছবিটাই বদলে গিয়েছে সেই অফিসে।

বাইরে বড় বড় ছবি দেওয়া দোকানের হোর্ডিং দেখে পৌঁছনো গিয়েছিল আরও এক জ্যোতিষীর দফতরে। বংশ পরম্পরায় জ্যোতিষ-চর্চা করেন এমন এক ব্যক্তির চেম্বারে ঢোকা মাত্রই রিসেপশনে বসা মহিলা জানালেন, ‘‘এক জন ভিতরে রয়েছেন। এক ঘণ্টা অপেক্ষা করলে এ দিনই ভাগ্য সম্পর্কে পরামর্শ নেওয়া যাবে। তবে ওঁর ফি ৫৫১ টাকা, পুরোটাই দিতে হবে খুচরো ১০০ টাকার নোটে। খুচরো টাকা ছাড়া কোনও ভাবে সেখানে পৌঁছে গেলেও কপাল কেমন জানতে ভাগ্য খুলছে না অনেকের।

একই অবস্থা পাশের ঠিকানায় থাকা দুই মহিলা জ্যোতিষীর চেম্বারেও। ভাগ্য জানতে ইচ্ছুক কারও দেখাই মেলেনি এ দিন দুপুরের পর থেকে। সেখানেও দোকানের ভিতরে চেম্বারে ঢোকার মুখে বসে থাকা মহিলা কর্মী জানালেন, জ্যোতিষীর পরামর্শ নিতে লাগে ৪০১ টাকা। পুরোটাই মেটাতে হবে খুচরো নোটে। তার জন্য বিল দেওয়া হবে। তবুও কার্ড বা চেক নেওয়া যাবে না।

কোন পাথর নিলে ভাল বা কোথায় পুজো দিলে ফিরবে ভাগ্য, তা জানতে আলাদা খরচ। পরামর্শ নেওয়ার আগেই দিয়ে দিতে হবে ফি। তা-ও নগদে।

তবে কি এই বিয়ের মরসুমে গয়নার দোকানের মতোই মন্দা শুরু হল জ্যোতিষীদের বাজারেও?

কালীঘাট এলাকায় চেম্বার রয়েছে, উত্তম শাস্ত্রী নামে এক জ্যোতিষী জানালেন, সাধারণত বিয়ের মরসুমে রোজ অন্তত ১৫-২০ জন করে আসেন ভাগ্য-বিচারের জন্য। কিন্তু ৫০০-১০০০ টাকার নোট বাতিল ঘোষণা হওয়ার পর দিন থেকেই খদ্দের আসা কমে গিয়েছে। এখন দিনে বড়জোড় পাঁচ কি ছ’জন করে খদ্দের আসছেন। এমনকী, কার্যত থমকে গিয়েছে বুকিংও।

অন্য বিষয়গুলি:

demonetization Astrology business
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy