আরসালান পারভেজ। গ্রাফিক: তিয়াসা দাস।
শেকসপিয়র সরণিতে জাগুয়ার দুর্ঘটনায় কেন আরসালান পারভেজকে আত্মসমর্পণ করানো হয়েছিল, তা নিয়ে এখনও ধোঁয়াশা রয়েছে। তবে তাঁর পরিবারের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করে গোয়েন্দারা এ বিষয়ে নিশ্চিত যে, রাঘিব পারভেজকে বাঁচানোর জন্য অনেককেই এর দায় নেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হয়েছিল। সেই তালিকায় কয়েক জন গাড়িচালকও ছিলেন। কিন্তু দুর্ঘটনার দায় নিতে কেউ রাজি না হওয়ায় ওই পরিকল্পনা ভেস্তে যায়। এমনটাই জানা গিয়েছে লালবাজার সূত্রে।
গত শুক্রবার মধ্যরাতে শেকসপিয়র সরণিতে জাগুয়ার দুর্ঘটনার সময় ওই গাড়িতে আরও এক জন ছিলেন। লালবাজারের ওই সূত্রটি জানাচ্ছে, সে কথাও তদন্তকারীদের কাছে বেমালুম চেপে গিয়েছিল আরসালান পারভেজের পরিবার। পরে সে কথা সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখে জানতে পারেন গোয়েন্দারা। আজ শুক্রবার রাঘিবের ওই বন্ধুকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন গোয়েন্দারা। তাঁর শরীরেও আঘাতের চিহ্ন মিলেছে। ওই যুবকের মেডিক্যাল টেস্ট করা হয়েছে বলেও এ দিন লালবাজার সূত্রে জানা গিয়েছে। আদালতে ওই ‘বন্ধু’র গোপন জবানবন্দি নেওয়ার আবেদন জানাবেন তদন্তকারীরা। লালবাজার সূত্রে জানা গিয়েছে, রাঘিব এবং তাঁর বন্ধুকে নিয়ে খুব শীঘ্রই ঘটনা পুর্নগঠন করবেন গোয়েন্দারা। সেন্ট জেমস-এর প্রিন্সিপালের ছেলের জন্মদিনের পার্টি থেকে কোন পথে ফিরছিলেন তাঁরা, দুর্ঘটনার আগে ঠিক কী হয়েছিল, তা দেখা হবে।
লালবাজারের এরটি সূত্র জানাচ্ছে, শেকসপিয়র সরণিতে দুর্ঘটনার পর মামা মহম্মদ হামজাকে ফোন করেছিলেন রাঘিব পারভেজ। তাঁর পরামর্শেই দুবাইয়ে আত্মগোপন করেন রাঘিব। কিন্তু রাঘিব এ ভাবে কলকাতা ছেড়ে পালিয়ে যাক, তা একেবারেই মেনে নিতে পারেননি বাবা আখতার পারভেজ। উল্টে তিনি আত্মসমর্পণ করতে বলেন রাঘিবকে। তাতে বাধা দেন মহম্মদ হামজা। ভাগ্নেকে পুলিশের হাতে তুলে দিতে একবারেই রাজি ছিলেন না হামজা। তার জায়গায় কোনও চালককে এই দুর্ঘটনার দায়ভার নেওয়ার জন্যে ‘চাপ’ দেওয়া হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কোনও চালক দুর্ঘটনার দায় নিতে চাননি। এ ভাবে অন্যকে ‘ফাঁসিয়ে’ দেওয়ার বিষয়টিতেও আপত্তি জানান আরসালান বিরিয়ানি চেনের মালিক আখতার পারভেজ।
আরও পড়ুন: বিনা অস্ত্রোপচারে বার করা হল পাঁচ ইঞ্চির টিউমার
আরও পড়ুন: সপ্তাহে দু’দিন মাছ-ডিম বাধ্যতামূলক, মিড-ডে মিলের মেনু বেঁধে দিল রাজ্য
এই পরিস্থিতিতে দু’ভাগ হয়ে যায় ওই পরিবারের সদস্যরা, এমনটাই দাবি লালবাজারের ওই সূত্রের। কাউকে কিছু না জানিয়ে দুর্ঘটনার পর দিন গত শনিবার রাঘিবকে দুবাইয়ে পাঠিয়ে দেন হামজা। তাতে ক্ষুব্ধ হন আখতার। কোনও উপায় না দেখে, শেষ পর্যন্ত আখতার পারভেজই দুর্ঘটনার দায়ভার নিতে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করতে যাচ্ছিলেন। পারিবারিক এই অশান্তির জেরে ছোট ছেলে আরসালান পারভেজ মামার সঙ্গে ডিসি (দক্ষিণ) মিরাজ খালিদের কাছে গিয়ে আত্মসমর্পণ করেন। এমনটাই জানাচ্ছে লালবাজারের একটি সূত্র।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy