Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Schools

offline class: শহরেও শুরু পাড়ার ক্লাস, উঠল স্কুল খোলার দাবি

বাঁশদ্রোণীর একটি ক্লাব চত্বরে ওই এলাকার তিনটি স্কুলের পড়ুয়াদের এ দিন পড়ান স্থানীয় প্রাথমিক স্কুলের চার জন শিক্ষক।

 লেখাপড়া: করোনা-বিধি মেনে মাঠেই চলছে ক্লাস। রবিবার, হাইড রোডে।

লেখাপড়া: করোনা-বিধি মেনে মাঠেই চলছে ক্লাস। রবিবার, হাইড রোডে। ছবি: দেশকল্যাণ চৌধুরী

আর্যভট্ট খান
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ জানুয়ারি ২০২২ ০৬:০৭
Share: Save:

জেলার বিভিন্ন গ্রামে ইতিমধ্যে মাঠে বা ক্লাবের চত্বরে স্কুলের পড়ুয়াদের পড়াতে শুরু করেছেন শিক্ষকেরা। রবিবার থেকে মাঠে বা খোলা জায়গায় ক্লাস নেওয়া শুরু হল কলকাতাতেও। বাঁশদ্রোণী এবং খিদিরপুরে কয়েক জন শিক্ষকের উদ্যোগে শুরু হল পাড়ায় ক্লাস। খুদে পড়ুয়ারা জানাল, দীর্ঘদিন পরে অফলাইনে ক্লাস করতে পেরে তারা খুবই খুশি। শুধু পড়া নয়, তারা আনন্দিত বন্ধুদের সঙ্গে দেখা হওয়াতেও। আর অভিভাবকেরা জানালেন, স্কুল কবে খুলবে তাঁরা জানেন না। তাই এই ভাবে স্কুলের বাইরে, খোলা মাঠে শিক্ষকেরা যদি তাঁদের ছেলেমেয়েদের পড়ান, তা হলে দু’বছর স্কুলের বাইরে থাকা পড়ুয়ারা খুবই উপকৃত হবে।

খিদিরপুরের কোলবার্থ এলাকার শ্রী কিশোর বিদ্যালয়ের সামনের মাঠে প্রাক্‌ প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণির পড়ুয়াদের পড়া বোঝাচ্ছিলেন ওই স্কুলেরই শিক্ষক সঞ্জিতকুমার রায়। সঞ্জিতবাবু বলেন, “বেশির ভাগ পড়ুয়ারই পড়াশোনার হাল খুব খারাপ। পঞ্চম শ্রেণির এক পড়ুয়া ছয়ের ঘরের নামতা লিখতে পারছে না। তৃতীয় শ্রেণির পড়ুয়ারা অনেকে বই দেখেও লিখতে ভুলে গিয়েছে। অনেকে আবার অক্ষর পরিচয় ভুলতে বসেছে। দু’বছর ধরে স্কুল বন্ধ। কবে খুলবে কেউ জানে না। এই পাড়ার ক্লাস আগে শুরু হলে ভাল হত।” সঞ্জিতবাবু জানান, সপ্তাহে তিন দিন তাঁদের ক্লাস চলবে।

কোলবার্থ এলাকার চারটি স্কুলের ৬০ জন পড়ুয়া এ দিন পড়তে এসেছিল। শিক্ষকেরা জানান, তাদের বেশির ভাগই আর্থিক ভাবে দুর্বল পরিবার থেকে এসেছে। স্কুলে এসে পড়ার ফাঁকে এ দিন রোহান বিন বা সুস্মিতা রায়েরা শিক্ষকদের জিজ্ঞেস করে, তারা মিড-ডে মিল পাবে কি না। সঞ্জিতবাবু বলেন, “এই পড়ুয়ারা আগে স্কুলে এসে মিড-ডে মিলের রান্না করা খাবার খেত। ওরা ভেবেছিল আজও সেটাই পাবে। কিন্তু ওদের বোঝাতে হল, ওরা মিড-ডে মিলের সামগ্রী বাড়িতে পেয়েছে। স্কুল এখনও খোলেনি। তাই রান্না করা খাবার নেই।” সঞ্জিতবাবু জানান, অনেক পড়ুয়া জানিয়েছে, স্কুলে এলে তারা সপ্তাহে দু’দিন ডিম খেত। এখন বাড়িতে সেটুকুও খাওয়া হচ্ছে না নিয়মিত। শিক্ষকদের মতে, পড়ুয়াদের পড়াশোনার জন্য যেমন স্কুল খোলা প্রয়োজন, তেমনই তাদের স্বাস্থ্যের স্বার্থেও এটা দরকার। দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধ থাকায় রান্না করা মিড-ডে মিল না পেয়ে বহু পড়ুয়া পুষ্টির অভাবে ভুগছে।

বাঁশদ্রোণীর একটি ক্লাব চত্বরে ওই এলাকার তিনটি স্কুলের পড়ুয়াদের এ দিন পড়ান স্থানীয় প্রাথমিক স্কুলের চার জন শিক্ষক। সদ্য অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিকা সুমিতা মুখোপাধ্যায় বলেন, “৩০ জন পড়ুয়া এ দিন ক্লাস করল। অতিমারির দু’বছরে দুটো ক্লাসের প্রোমোশন পেয়ে গিয়েছে বাচ্চারা। কিন্তু পড়াশোনার ফাঁক রয়ে গিয়েছে বিশাল। এই ফাঁক পূরণ হবে তো?” প্রতি সপ্তাহেই নিয়ম করে ক্লাস চলবে বলে জানান তিনি।

বাঁশদ্রোণীর ক্লাবে পড়ানোর ফাঁকে শিক্ষিকারা জানান, এই ভাবে স্কুলের বাইরে নয়, তাঁরা চান করোনা-বিধি মেনে স্কুল খুলে পড়ানো শুরু হোক। সুমিতাদেবী বলেন, “সোমবার থেকে সরকারি উদ্যোগে ‘পাড়ার শিক্ষালয়’-এর মাধ্যমে প্রাক্‌ প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণির পড়ুয়ারা পড়াশোনা করতে পারবে। কিন্তু সরকারের এই পদক্ষেপকে আমরা সমর্থন করছি না। আমরা চাই পাড়ার মাঠে-ঘাটে বা ক্লাবে নয়, স্কুল খুলেই পড়ানো শুরু হোক।”

অন্য বিষয়গুলি:

Schools Coronavirus Offline class
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy