চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, অ্যান্টিভাইরাল ওই ওষুধটির নাম ‘প্যাক্সলোভিড’ (জেনেরিক নাম ‘রিটোনাভির’)।
করোনার চিকিৎসায় আরও একটি ট্যাবলেটের পরীক্ষামূলক গবেষণা শুরু হয়েছে সারা বিশ্বে। সেই তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে রাজ্যের সরকারি হাসপাতাল নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ। তৃতীয় পর্যায়ের এই গবেষণায় ওই হাসপাতালে বেশ কয়েক জন করোনা আক্রান্তের উপরে ইতিমধ্যেই ওষুধটি প্রয়োগ করা হয়েছে।
চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, অ্যান্টিভাইরাল ওই ওষুধটির নাম ‘প্যাক্সলোভিড’ (জেনেরিক নাম ‘রিটোনাভির’)। কয়েক দিন আগে অন্য আর একটি অ্যান্টিভাইরাল ট্যাবলেট ‘মলনুপিরাভির’-এর গবেষণাও হয়েছে এন আর এস-সহ দু’টি বেসরকারি হাসপাতালে। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, বিশ্বের ১৯টি দেশে ফাইজ়ার সংস্থার তৈরি প্যাক্সলোভিড ট্যাবলেটের তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল চলছে। ভারতের চারটি ক্লিনিক্যাল সাইটের মধ্যে এ রাজ্য থেকে একমাত্র এন আর এস হাসপাতাল রয়েছে।
চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, করোনা রিপোর্ট পজ়িটিভ আসার পাঁচ দিনের মধ্যে প্রয়োগ করা হচ্ছে ‘প্যাক্সলোভিড’। দিনে দু’টি করে পাঁচ দিন খেতে হচ্ছে ট্যাবলেটটি। সূত্রের খবর, এন আর এসে ৩০ জন করোনা রোগীকে ওই ট্যাবলেট খাওয়ানো হয়েছে। তাঁরা প্রত্যেকেই সুস্থ রয়েছেন। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, চিকিৎসক অনির্বাণ দলুইয়ের কথায়, ‘‘যদি সব
ঠিকঠাক চলে এবং আইসিএমআর-এর অনুমতি পাওয়া যায় তবে এটাই হবে করোনার বিরুদ্ধে প্রথম অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ, যা খাওয়া যায়। যে কোনও মহামারি বা অতিমারি সৃষ্টি করতে পারে, এমন সংক্রামক রোগের বিরুদ্ধে নিশ্চিত ওষুধ পাওয়া গেলে সেই রোগ নিয়ে দুশ্চিন্তার দিন শেষ হয়। এ ক্ষেত্রেও এটি কার্যকর হলে অতিমারির বিরুদ্ধে লড়াই অনেক সহজ হবে।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ ‘রিটোনাভির’ এর আগে এইচআইভি-র ক্ষেত্রে ভাল কাজ করেছে। তাই ‘মলনুপিরাভির’ এবং ‘রিটোনাভির’ অতিমারির পর্যায়ক্রমকে বদলে দেবে, সেই সম্ভাবনা রয়েছে।’’ গবেষকেরা জানাচ্ছেন, ‘প্যাক্সলোভিড’ প্রয়োগের তিন দিন পরে প্রথম পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে শরীরে ভাইরাল লোড কতটা কমেছে। সাত দিন পরে পুনরায় পরীক্ষা করে ভাইরাসের মাত্রা দেখা হচ্ছে। এক চিকিৎসকের কথায়, ‘‘শুধু ভাইরাল লোড পরীক্ষা নয়, তিন সপ্তাহ, চার সপ্তাহ পরে বিভিন্ন রকমের পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে রোগীর কিডনি, যকৃৎ-সহ অন্যান্য অঙ্গে কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে কি না।’’
ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের ফেসিলিটেটর স্নেহেন্দু কোনার বলেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত করোনা চিকিৎসার সমস্ত ওষুধই ইঞ্জেকশন হিসাবে বাজারে এসেছে। সেটি হাসপাতাল থেকে নিতে হয়, আমজনতা কিনতে পারেন না। সেখানে এই ট্যাবলেট কার্যকর হলে ঘরে বসেই নেওয়া সম্ভব হবে।’’ চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, এখনও পর্যন্ত পরীক্ষামূলক গবেষণার তথ্য অনুযায়ী, উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ বয়স্ক করোনা আক্রান্তদের ওই ট্যাবলেট খাওয়ানোর পরে দেখা গিয়েছে, প্রায় ৮৯ শতাংশ মানুষকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়নি। বরং তাঁদের শরীরে ভাইরাসের মাত্রা (ভাইরাল লোড) কমেছে। তাঁরা আরও জানান, ‘প্যাক্সলোভিড’-এর পরীক্ষামূলক গবেষণায় মূলত দু’টি বিষয়ে জোর দেওয়া হচ্ছে। যেমন, করোনা আক্রান্তের বয়স ১৮ থেকে ৬৫-র মধ্যে হতে হবে এবং কোমর্বিডিটি থাকতে হবে। আর একটি হল, আক্রান্ত ব্যক্তি করোনা প্রতিষেধকের একটি ডোজ়ও নেননি।
শহরের এক জন চিকিৎসকের কথায়, ‘‘প্রতিষেধক সারা জীবন ধরে সুরক্ষা দেবে, এমনটা কোথাও বলা হয়নি। করোনার উপসর্গ থাকলে ওই ওষুধ প্রয়োগে কতটা সুরক্ষা ও কার্যকারিতা বজায় থাকছে, সেটিই এখন দেখা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy