এসএসকেএম হাসপাতাল। —ফাইল চিত্র।
দুপুরে খেতে বসে বিষম লেগেছিল। তাতেই হাড়-সহ মাংসের টুকরো গিয়ে আটকে যায় খাদ্যনালিতে। ঘটনার পরে প্রায় চার দিন কেটে গেলেও তা বেরোয়নি। উল্টে তার জেরে বুকে জল ও হাওয়া ভর্তি হয়ে প্রাণসংশয় তৈরি হয়েছিল সত্তর বছরের ওই বৃদ্ধের। পুরো বুক কেটে ওই মাংসপিণ্ড বার করার পাশাপাশি অন্যান্য প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তাঁকে প্রাণে বাঁচাল এসএসকেএম হাসপাতাল। আজ, মঙ্গলবার বাড়ি ফিরবেন ওই বৃদ্ধ।
হাসপাতাল সূত্রের খবর, মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা, জাকির হুসেন নামে ওই বৃদ্ধের খাদ্যনালিতে আটকে থাকা মাংসপিণ্ডটি অনেক চেষ্টা করেও বেরোয়নি। দিন দুয়েক পরে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে। সেখানে নাক-কান-গলা বিভাগের চিকিৎসকেরাও ব্যর্থ হন। এ দিকে, তত দিনে জাকিরের তীব্র জ্বর চলে আসে। আচ্ছন্ন হয়ে পড়েন তিনি। পরিজনেরা জানাচ্ছেন, এর পরে ওই বৃদ্ধকে এসএসকেএমে নিয়ে আসা হয়। সেখানে কার্ডিয়োথোরাসিক অ্যান্ড ভাস্কুলার সার্জারি বিভাগে জাকিরকে ভর্তি করা হয়। ওই বিভাগের শিক্ষক-চিকিৎসক শুভেন্দুশেখর মহাপাত্র জানান, পরীক্ষায় দেখা যায়, বৃদ্ধের খাদ্যনালির প্রায় ছয় সেন্টিমিটার ছিঁড়ে গিয়েছে। তাতে মাংসপিণ্ড বেরিয়ে গিয়ে আটকে গিয়েছিল বক্ষগহ্বরে। যার জেরে বুকে হাওয়া এবং জল ভর্তি হয়ে সংক্রমণ ছড়িয়েছিল।
শুভেন্দু বলেন, ‘‘রোগীর অবস্থা খারাপ ছিল। পরিস্থিতি বুঝে ভর্তির পরেই ঝুঁকি নিয়ে অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।’’ এর পরে চিকিৎসক নবারুণ মল্লিক, সুরজিৎ সরকার, রবি তেজ়া এবং কার্ডিয়ো অ্যানাস্থেশিয়ার চিকিৎসক আশিস চৌহান, এলভিস সেন্থিলের দল অস্ত্রোপচারটি করেন। নবারুণ জানাচ্ছেন, পুরো বুক কেটে বক্ষগহ্বরে আটকে থাকা মাংসপিণ্ড বার করা হয়। পাশাপাশি, খাদ্যনালি জোড়া হয় এবং সঙ্কুচিত ফুসফুসটি ঠিক করাও হয়। জমে থাকা জল বার করে দেওয়া হয়। তখনও সঙ্কটজনক অবস্থায় ছিলেন জাকির। কয়েক দিন পরে তাঁর বুক থেকে জমে থাকা পুঁজ বার করা হয়। তার পরেই তিনি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে শুরু করেন। এখন নিজের মুখেই সব কিছু খাচ্ছেন। তবে জাকির বলছেন, ‘‘বাড়ি গিয়ে মাছ, মাংস আর খাব না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy