—প্রতীকী চিত্র।
গভীর রাতে ঘরে ঘুমোচ্ছিলেন প্রৌঢ়া। সেই অবস্থায় বাড়িতে আগুন লাগায় পুড়ে মৃত্যু হল তাঁর। রবিবার ঘটনাটি ঘটেছে গরফা থানার কালীতলা মেন রোডে। মৃতার নাম বেবি মণ্ডল (৬৫)। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ছেলে, বৌমা এবং নাতির সঙ্গে থাকতেন বেবি। রবিবার রাতে তেতলা বাড়ির দোতলার একটি ঘরে ঘুমোচ্ছিলেন তিনি। বেবির ছেলে দীপ মণ্ডল বাড়িতে ছিলেন না। তিনি কর্মসূত্রে দুর্গাপুরে গিয়েছিলেন। দীপের স্ত্রী এবং ছেলে শুয়ে ছিলেন দোতলায় অন্য ঘরে। রাত পৌনে ১টা নাগাদ বাড়িতে আগুন লাগে। দীপের স্ত্রী এবং ছেলে কোনও মতে বেরিয়ে আসতে পারলেও বেবি বেরোতে পারেননি।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে দমকলের তিনটি ইঞ্জিন। ঘণ্টা দুয়েকের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। স্থানীয় বাসিন্দা দেবাশিস দাস বলেন, ‘‘বাড়ির দোতলায় আগুন লেগেছিল। দীপের স্ত্রী এবং ছেলে ছুটে বেরিয়ে এসে ‘বাঁচান, বাঁচান’ বলে চিৎকার করতে থাকেন। প্রতিবেশীরা পাশের বাড়ির ছাদ থেকে বালতি দিয়ে জল ছুড়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। বেবিকে উদ্ধার করার জন্য বাড়ির দোতলায় যাওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু প্রবল ধোঁয়ায় দম আটকে আসায় তা সম্ভব হয়নি।’’
এক স্থানীয় বাসিন্দা জানিয়েছেন, বেবির পায়ে সমস্যা থাকায় তাঁর হাঁটাচলা করতে অসুবিধা হত। ওই রাতে প্রৌঢ়ার ঘরের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ ছিল। আগুন লাগার পরে বেবির বৌমা ও নাতি দরজায় বার বার ধাক্কা দিলেও বেবি উঠে এসে দরজা খুলতে পারেননি। শেষে ধোঁয়ায় আর থাকতে না পেরে মা-ছেলে ছুটে বেরিয়ে আসেন। এর পরেই সব জানাজানি হয়। দমকল এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের চেষ্টায় আগুন নেভার পরে বেবিকে উদ্ধার করে এম আর বাঙুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
খবর পাওয়ার পরেই সোমবার সকালে বাড়িতে এসে পৌঁছন দীপ। পুলিশ জানিয়েছে, ফরেন্সিক পরীক্ষার পরেই আগুন লাগার কারণ জানা যাবে। তবে বাড়ির লোকের সঙ্গে কথা বলে পুলিশ জেনেছে, বেবির ঘরে রাতে হ্যারিকেন জ্বলত। ঘর থেকে ভাঙা হ্যারিকেন মিলেছে। তা থেকেই আগুন লেগেছিল কিনা, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
তবে, দমকলের বিরুদ্ধে দেরিতে আসার অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ। এক বাসিন্দা সুমিত দাস বলেন, ‘‘দমকল দেরিতে আসার পাশাপাশি জলও ছিল না।’’ যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে দমকলের এক আধিকারিক জানান, রাত ১টা ২০ মিনিটে আগুন লাগার খবর পাওয়ার পরে পাটুলি থেকে প্রথমে একটি ইঞ্জিন ১টা ২৭ মিনিটে ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। কিন্তু বাড়িটি গলির মধ্যে হওয়ায় প্রস্তুতি নিতে দমকলের একটু সময় লেগেছে।
এ দিন ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির সামনে পুলিশি প্রহরা। স্থানীয় পুরপ্রতিনিধি অরিজিৎ দাসঠাকুর জানান, দীপ এবং তাঁর পরিবারকে কাছাকাছি জায়গায় থাকার ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে। দীপ বলেন, ‘‘আমি এখন কথা বলার মতো অবস্থায় নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy