ছেলে সত্যজিতের সঙ্গে পরিমলবাবু। নিজস্ব চিত্র।
এক সময়ে শিল-নোড়া কাটানোর কাজ করতেন তিনি। এখনও খেয়ালের বশে হাতুড়ি-ছেনি নিয়ে বেরিয়ে পড়েন। দিন ছয়েক আগে বাড়ির সকলের অলক্ষ্যে তেমনই বেরিয়ে পড়েছিলেন বছর সত্তরের বৃদ্ধ। এর পরে আর খোঁজ মেলেনি তাঁর। মঙ্গলবার সকালে নিখোঁজ বৃদ্ধের পরিবারের লোককে খুঁজে বার করল হ্যাম রেডিয়ো ক্লাব। এ দিন দুপুরে গড়িয়া থেকে ভাটপাড়ায় এসে বাবাকে ফিরিয়ে নিয়ে গেলেন বৃদ্ধের ছেলে।
ভাটপাড়া থানার পুলিশ জানিয়েছে, বৃদ্ধের নাম পরিমল বিশ্বাস। তাঁদের আদি বাড়ি উত্তর ২৪ পরগনার স্বরূপনগরে। কর্মসূত্রে তাঁর ছেলেরা গড়িয়া এলাকায় থাকেন। তাঁদের সঙ্গেই থাকেন পরিমলবাবু। তিনি আগে বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে শিল-নোড়া কাটানোর কাজ করতেন। বয়সের ভারে সেই কাজ আর করতে পারেন না। গত কয়েক বছর ধরে অ্যালঝাইমার্স রোগে ভুগছেন তিনি। ছেলেরা তাঁর চিকিৎসাও করাচ্ছিলেন। এর আগেও তিনি বাড়ি থেকে চলে গিয়েছিলেন। তবে সাধারণত তিনি স্বরূপনগরের বাড়িতেই যেতেন। দিন ছয়েক আগে পথ হারিয়ে ভাটপাড়ায় চলে যান পরিমলবাবু। আর বাড়ির ঠিকানা মনে করতে পারেননি তিনি।
একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্তা লাল্টু দেবনাথ জানান, প্রতি রবিবার তাঁরা রাস্তার ধারে বসে থাকা অসহায় মানুষদের খাবার খাওয়ান। গত রবিবার খাবার নিয়ে ভাটপাড়া থেকে নৈহাটি যাওয়ার সময়ে রাস্তার ধারে কম্বল মুড়ি দিয়ে এক জনকে পড়ে থাকতে দেখেন। তাঁকে তুলে খাবার খাওয়ানোর চেষ্টা করেন লাল্টুবাবুরা। কিন্তু তিনি খাননি। এলাকার লোকেরা জানান, গত তিন দিন ধরে তিনি ওই ভাবেই রাস্তায় পড়ে রয়েছেন।
লাল্টুবাবু বলেন, “ভাটপাড়া থানার সঙ্গে যোগাযোগ করলে পুলিশ আমাদের সঙ্গে নিয়ে ওই বৃদ্ধকে ভাটপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে দেয়। বৃদ্ধের ব্যাগে তাঁর রেশন কার্ডের ফোটোকপি ছিল। সেখান থেকেই তাঁর নাম জানা যায়। তাঁর ব্যাগে শিল কাটার ছেনি-হাতুড়িও ছিল।” বৃদ্ধের পরিজনেদের খুঁজে পেতে এর পরে লাল্টুবাবুরা হ্যাম রেডিয়ো ক্লাবের সম্পাদক অম্বরীশ নাগ বিশ্বাসের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।
অম্বরীশ জানান, বৃদ্ধের রেশন কার্ডে স্বরূপনগরের খৈজুরি গ্রামের ঠিকানা ছিল। সেখান থেকে জানা যায়, তাঁর ছেলেরা বর্তমানে গড়িয়ায় থাকেন। মঙ্গলবার সকালে তাঁর ছেলেদের সঙ্গে যোগাযোগ করে পরিমলবাবুর কথা জানানো হয়। ভাটপাড়া থানার পুলিশ জানিয়েছে, এ দিন দুপুরে পরিমলবাবুর ছোট ছেলে সত্যজিৎ বিশ্বাস প্রমাণপত্র দেখিয়ে বাবাকে বাড়ি নিয়ে যান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy