Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Adi Ganga

৬৫০ কোটি টাকায় ‘হৃত’ মর্যাদা ফিরবে আদিগঙ্গার? প্রশ্ন থাকছেই

সোমবার জাতীয় পরিবেশ আদালতে আদিগঙ্গা নিয়ে মামলার শুনানি রয়েছে। মামলায় পরিবেশ আদালতের নির্দেশে আদালতবান্ধব হিসাবে নিযুক্ত রয়েছেন পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত।

আদিগঙ্গার পুনরুজ্জীবন প্রকল্পের জন্য প্রায় ৬৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।

আদিগঙ্গার পুনরুজ্জীবন প্রকল্পের জন্য প্রায় ৬৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। ফাইল ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ জানুয়ারি ২০২৩ ০৬:১৯
Share: Save:

আদিগঙ্গার পুনরুজ্জীবন প্রকল্প, নিকাশি পরিশোধন প্লান্ট তৈরির জন্য আর্থিক বরাদ্দ-সহ একাধিক বিষয়ে কেন্দ্র-রাজ্য চাপানউতোর চলেই। সেই চাপানউতোরের মধ্যেই এ বার আদিগঙ্গার পুনরুজ্জীবনে মোটা অঙ্কের অর্থ বরাদ্দ করল কেন্দ্র। কেন্দ্রীয় জলশক্তি মন্ত্রক সূত্রের খবর, আদিগঙ্গার পুনরুজ্জীবন প্রকল্পের জন্য প্রায় ৬৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।

মন্ত্রকের অধীনস্থ ‘ন্যাশনাল মিশন ফর ক্লিন গঙ্গা’র (এনএমসিজি) সাম্প্রতিক বৈঠকে আদিগঙ্গার জন্য ৬৫৩.৬৭ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। তবে বরাদ্দের অঙ্ক নিয়ে উচ্ছ্বসিত হলেও প্রকল্পের বাস্তবায়ন ঠিক মতো হওয়া নিয়ে সংশয়ে পরিবেশবিদ মহলের একাংশ। কারণ, আদিগঙ্গার পুনরুজ্জীবন প্রকল্প নিয়ে দীর্ঘ টালবাহানা এবং অতীতের ঘটনাপ্রবাহের অভিজ্ঞতা।

মন্ত্রক সূত্রের খবর, বৈঠকে গঙ্গার পুনরুজ্জীবন, নিকাশি পরিকাঠামোর উন্নয়ন, গঙ্গাপাড়ে সবুজায়নের জন্য মোট ২৭০০ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়। উত্তরপ্রদেশ, বিহার, ঝাড়খণ্ড, উত্তরাখণ্ড ও পশ্চিমবঙ্গের একাধিক প্রকল্পের জন্য ওই টাকা বরাদ্দ হয়েছে। বরাদ্দের সব থেকে বেশি টাকা জুটেছে ঝাড়খণ্ডের কপালে। তার পরেই পশ্চিমবঙ্গ।

তাতেও অবশ্য সংশয় কাটছে না। প্রসঙ্গত, আজ সোমবার জাতীয় পরিবেশ আদালতে আদিগঙ্গা নিয়ে মামলার শুনানি রয়েছে। মামলায় পরিবেশ আদালতের নির্দেশে আদালতবান্ধব হিসাবে নিযুক্ত রয়েছেন পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত। তিনি জানাচ্ছেন, প্রায় নালায় পরিণত হওয়া আদিগঙ্গার পুনরুজ্জীবনের জন্য কেন্দ্রের এই অর্থসাহায্য বাড়তি অক্সিজেন দেবে। তাঁর কথায়, ‘‘এটা রাজ্যের গঙ্গাকে দূষণমুক্ত করার ক্ষেত্রে বড় সাফল্য। জাতীয় পরিবেশ আদালতের ভূমিকা এখানে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে প্রকল্পের বাস্তবায়ন যাতে ঠিকঠাক হয়, তা রাজ্যের সুনিশ্চিত করা দরকার। কারণ, অতীতে একাধিক বার শেষ মুহূর্তে সব কিছু ভেস্তে গিয়েছে।’’

এক নদী বিশেষজ্ঞের কথায়, ‘‘কলকাতার মানচিত্র থেকে মুছে যেতে বসেছে আদিগঙ্গা। এই বরাদ্দ আদিগঙ্গাকে বাঁচাতে সাহায্য করবে বলে আশা করা যায়। তবে আগে প্রকল্পের বাস্তবায়ন ঠিক মতো হোক, তার পরে না-হয় সাফল্য উদ্‌যাপন করা যাবে।’’ কারণ, আদিগঙ্গার পাড়ের দখলদারি, নালা এসে মেশা, খাটাল-সহ একাধিক সমস্যা এখনও রয়েছে বলে জানাচ্ছেন পরিবেশকর্মীদের একাংশ।

কেন্দ্রীয় জলশক্তি মন্ত্রকের এক কর্তা জানান, মোট তিনটি নিকাশি পরিশোধন প্লান্ট (সুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্লান্ট বা এসটিপি) তৈরির জন্য ওই পরিমাণ টাকা বরাদ্দ হয়েছে। ওই তিনটি প্লান্টের পরিশোধন ক্ষমতা যথাক্রমে দৈনিক ১ কোটি, ১.১৬ কোটি ও ৩০ লক্ষ লিটার। ফলে বিপুল পরিমাণ তরল বর্জ্য প্রস্তাবিত প্লান্টের মাধ্যমে পরিশোধন করা যাবে।

ঘটনাপ্রবাহ বলছে, আদিগঙ্গার পুনরুজ্জীবন প্রকল্পে কেন্দ্রীয় বরাদ্দ ঠিক মতো মিলছে না। দীর্ঘদিন ধরেই এই অভিযোগ করছিল কলকাতা পুরসভা তথা রাজ্য। পাল্টা এনএমসিজি পরিবেশ আদালতে হলফনামা দিয়ে দাবি করে, নিজেদের দায়িত্ব পালন না করে কী ভাবে কেন্দ্র বা রাজ্যের অর্থসাহায্যে এসটিপি তৈরি করা যায়, সে দিকেই ‘নজর’ রাজ্যের। তাই এ বার বরাদ্দ কৃত অর্থ আদিগঙ্গাকে তার হৃত মর্যাদা ফেরাতে পারবে কি না, সেই প্রশ্নটা থাকছেই।

অন্য বিষয়গুলি:

Adi Ganga Central Government schemes Reconstruction
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE